English

33 C
Dhaka
মঙ্গলবার, এপ্রিল ২৩, ২০২৪
- Advertisement -

ঝুঁকি কমাতে উদ্যোগ নিন: বৈশ্বিক উষ্ণায়নের শিকার বাংলাদেশ

- Advertisements -

দ্রুত বাড়ছে বিশ্বের উষ্ণতা। উষ্ণতা বাড়তে থাকায় মেরু অঞ্চলে জমে থাকা বরফের স্তূপ ক্রমেই বেশি করে গলছে। বরফ গলা পানি গিয়ে পড়ছে সমুদ্রে। এতে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতাও দ্রুত বাড়ছে। আর তাতে সমূহ বিপদের মুখে রয়েছে অপেক্ষাকৃত নিচু উপকূলীয় অঞ্চল ও ছোট ছোট দ্বীপরাষ্ট্র। বাংলাদেশেরও বিস্তীর্ণ উপকূলীয় এলাকা প্রবল ঝুঁকিতে রয়েছে। বাংলাদেশের সম্ভাব্য সেই বিপদের কথাই উঠে এসেছে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের কণ্ঠে। গত মঙ্গলবার জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে প্রদত্ত বক্তব্যে তিনি বলেন, বাংলাদেশসহ বেশ কিছু দেশ প্রবল ঝুঁকিতে রয়েছে। বিপদে রয়েছে প্রায় ৯০ কোটি মানুষ। তাদের রক্ষায় নিরাপত্তা পরিষদ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। প্রতিবছর জলবায়ু তহবিলে ১০০ বিলিয়ন ডলার প্রদানের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে হবে।

Advertisements

বিশ্বের ক্রমবর্ধমান উষ্ণায়ন রোধে জাতিসংঘের ইন্টারগভর্নমেন্টাল প্যানেল অন ক্লাইমেট চেঞ্জ (আইপিসিসি), কপসহ আরো অনেক উদ্যোগ রয়েছে। এসব উদ্যোগে প্রাক-শিল্প বিপ্লবের তুলনায় তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে সীমিত রাখার ব্যাপারে ঐকমত্য তৈরি হয়েছিল। জাতিসংঘের মহাসচিব বলেন, ‘আমরা সেই সীমা অতিক্রম করে ২.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের দিকে অগ্রসর হচ্ছি। ফলে একই হারে বাড়ছে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা।’ আইপিসিসি জানায়, ১৮০০ সাল ও ২০১৮ সালের মধ্যে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বেড়েছে ১৫ থেকে ২৫ সেন্টিমিটার পর্যন্ত। আর পৃথিবীর তাপমাত্রা ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বৃদ্ধি পেলে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়বে ৪৩ সেন্টিমিটার। ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়লে এই উচ্চতা বাড়তে পারে ৮৪ সেন্টিমিটার পর্যন্ত। বর্তমানে পৃথিবীর তাপমাত্রা বৃদ্ধির যে গতি, তা রোধ করা না গেলে এই শতাব্দীর শেষে যে ভয়াবহ অবস্থার সৃষ্টি হবে, তা কল্পনা করতেও কষ্ট হয়। স্থলভাগ ক্রমেই সংকুচিত হবে। কোটি কোটি মানুষ উদ্বাস্তু হবে। জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত চরমে উঠবে। স্বাস্থ্য সমস্যা বেড়ে যাবে। তেমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশেও দুই কোটির বেশি উপকূলীয় মানুষ উদ্বাস্তুজীবন বেছে নিতে বাধ্য হবে।

Advertisements

জাতিসংঘ মহাসচিবের এই আশঙ্কা অমূলক নয়। এর পেছনে কাজ করেছে অনেক বৈজ্ঞানিক তথ্য। মার্কিন মহাকাশ সংস্থা নাসার মতে, অ্যান্টার্কটিকায় বা দক্ষিণ মেরুতে প্রতিবছর গড়ে প্রায় ১৫০ বিলিয়ন টন বরফ গলে যাচ্ছে। উত্তর মেরুর গ্রিনল্যান্ড এলাকার বরফাচ্ছাদন আরো দ্রুত গলছে। সেখানে প্রতিবছর ২৭০ বিলিয়ন টন বরফ গলছে। অতি সম্প্রতি বিজ্ঞানীরা দেখেছেন, অ্যান্টার্কটিকায় অবস্থিত থোয়াইটস গ্লেসিয়ারের (যাকে ডুমসডে গ্লেসিয়ারও বলা হয়) অবস্থা অত্যন্ত নাজুক। যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের আকৃতির এই গ্লেসিয়ারটি ভেঙে সাগরে যুক্ত হলে শুধু এ কারণেই সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা ৪০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত বেড়ে যেতে পারে। এই গ্লেসিয়ার ভেঙে পড়লে আশপাশের অনেক গ্লেসিয়ারই ভেঙে পড়তে পারে। এতে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বেড়ে যেতে পারে কয়েক গুণ। ভাবা যায় কী হবে তার পরিণতি?

শুধু সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি নয়, সামগ্রিকভাবে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ব্যাপক ঝুঁকিতে রয়েছে বাংলাদেশ। জাতিসংঘের শিশু সংস্থা ইউনিসেফের মতে, দেশের দুই কোটির মতো শিশু প্রবল ঝুঁকিতে রয়েছে। তাই বাংলাদেশের হাতে নষ্ট করার মতো সময় নেই। উপকূলীয় এলাকার পাশাপাশি জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকিতে থাকা জনগোষ্ঠীর নিরাপত্তায় ব্যাপক উদ্যোগ নিতে হবে।

সাবস্ক্রাইব
Notify of
guest
0 মন্তব্য
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন