নাসিম রুমি: প্রথম ফুটবলার হিসেবে আন্তর্জাতিক ফুটবলে ২০০ ম্যাচ খেলার ইতিহাস গড়লেন ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো। অনন্য মাইলফলক ছোঁয়ার উপলক্ষটা দারুণভাবে রাঙালেনও তিনি। আইসল্যান্ডের তুমুল প্রতিরোধ ভেঙে একেবারে শেষ সময়ে গড়ে দিলেন ব্যবধান।
প্রতিপক্ষের মাঠে মঙ্গলবার রাতে ইউরো বাছাইয়ের ম্যাচটি অধিনায়কের ওই একমাত্র গোলেই জিতেছে পর্তুগাল।
চলতি বাছাইয়ে এই নিয়ে চার ম্যাচ খেলে সবকটিতেই জিতল রবের্তো মার্তিনেসের দল।
এর আগে সবশেষ ২০১৬ ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে দেখা হয়েছিল এই দুই দলের। গ্রুপ পর্বের সেই লড়াই ১-১ গোলে ড্র হয়েছিল। সেবার ফাইনালে ফ্রান্সকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল পর্তুগাল।
ম্যাচ শুরু হতেই আক্রমণের পসরা মেলে ধরে তারা। প্রথম ১৫ মিনিটেই পাঁচটি কর্নার আদায় করে নেয়। শেষ কর্নারটিতে এগিয়েও যেতে পারত দলটি; তবে পেপের লাফিয়ে উঠে নেওয়া হেড ঝাঁপিয়ে ঠেকিয়ে দেন গোলরক্ষক।
শুরুর চাপ অবশ্য ধরে রাখতে পারেনি পর্তুগাল। বরং বল দখলে অনেক পিছিয়ে থাকলেও পাল্টা আক্রমণে মাঝে মধ্যে ভীতি ছড়াতে থাকে আইসল্যান্ড।
২৪তম মিনিটে দারুণ একটি সুযোগও পায় স্বাগতিকরা। বাইলাইনের কাছ থেকে সতীর্থের হেডে কাটব্যাক ফাঁকায় পেয়ে শট নেন মিডফিল্ডার ভিক্তর পলসন, বল চলে যায় ক্রসবারের ওপর দিয়ে।
প্রথমার্ধের এক মিনিট যোগ করা সময়ে হেড করতে গিয়ে পেপেকে আইসল্যান্ডের ফরোয়ার্ড আলফ্রেদ কনুই মারলে মাঠে উত্তেজনা ছড়ায়। লাল কার্ড দেখানোর দাবি তোলেন পর্তুগালের খেলোয়াড়রা; রেফারি অবশ্য হলুদ কার্ডই দেখান। রেফারির সিদ্ধান্ত যে মোটেও পছন্দ হয়নি, তা রোনালদোর চোখেমুখে ছিল স্পষ্ট।
৬৯তম মিনিটে সতীর্থের বাড়ানো থ্রু বল ধরে বক্সে ঢুকে ক্রসবারের ওপর দিয়ে উড়িয়ে মারেন রোনালদো। অবশ্য বল জালে জড়ালেও মিলত না গোল, অফসাইডে ছিলেন তিনি।
৮০তম মিনিটে গনসালো ইনাসিওকে ফাউল করে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখেন আইসল্যান্ডের মিডফিল্ডার ভিলাম।
এর ৯ মিনিট পরই কাঙ্ক্ষিত গোলটি পেয়ে যায় পর্তুগাল। ইনাসিওর হেডে বাড়ানো বল ছয় গজ বক্সে পেয়ে দুরূহ কোণ থেকে ডান পায়ের শটে জালে পাঠান রোনালদো। সঙ্গে সঙ্গে অফসাইডের পতাকা তোলেন লাইন্সম্যান। দীর্ঘক্ষণ সময় নিয়ে ভিএআরে যাচাই শেষে গোলের বাঁশি বাজান রেফারি।
আন্তর্জাতিক ফুটবলে সর্বোচ্চ ম্যাচ ও গোলের রেকর্ড আগে থেকেই রোনালদোর। এবার তা আরও বাড়িয়ে নিলেন তিনি; ২০০ ম্যাচে তার গোল হলো ১২৩টি।
একই সঙ্গে এবারের বাছাইয়ে এখন পর্যন্ত জাল অক্ষতই রইল পর্তুগালের। চার ম্যাচে তারা গোল করল মোট ১৪টি।
চার ম্যাচে ১২ পয়েন্ট নিয়ে ‘জে’ গ্রুপের শীর্ষে আছে সাবেক ইউরো চ্যাম্পিয়নরা।
আরেক ম্যাচে লিখটেনস্টাইনকে ১-০ গোলে হারানো স্লোভাকিয়া ১০ পয়েন্ট নিয়ে আছে দুইয়ে।
আর বসনিয়ার মাঠে ২-০ গোলে জিতেছে লুক্সেমবুর্গ। ৭ পয়েন্ট নিয়ে তারা আছে ৯ নম্বরে।
আইসল্যান্ডের সমান ৩ পয়েন্ট নিয়ে চার নম্বরে বসনিয়া। কোনো পয়েন্ট না পাওয়া লিখটেনস্টাইন আছে ৬ দলের গ্রুপের তলানিতে।