English

33 C
Dhaka
বুধবার, এপ্রিল ২৪, ২০২৪
- Advertisement -

বন্ধুত্ব ও শত্রুতার জমজমাট বাণিজ্যিক ছবি ‘বেঈমানী’

- Advertisements -

রহমান মতি: পূর্ণদৈর্ঘ্য বাংলা ছায়াছবি – বেঈমানী, পরিচালক – সৈয়দ হারুন, শ্রেষ্ঠাংশে – ইলিয়াস কাঞ্চন, দিতি, অমিত হাসান, কাজল, শর্মিলী আহমেদ, নাসির খান, হুমায়ুন ফরীদি প্রমুখ। উল্লেখযোগ্য গান – আজ বড় সুখে দুটি চোখে, আমি ভালোবাসার সুখে, পিছু নিয়েছে কিছু লোক, ওগো দুষ্টু ছেলে।

মুক্তি – ১৯ সেপ্টেম্বর ১৯৯৭, পরিচালক সৈয়দ হারুন একটা মিশন নিয়েই নেমেছিলেন নব্বই দশকে। মিশনটা ছিল জমজমাট কিছু বাণিজ্যিক ছবি নির্মাণের। তাঁর পছন্দের তারকা ছিল ইলিয়াস কাঞ্চন। ধারাবাহিকভাবে কাঞ্চন-কে নিয়ে কিছু ছবি করেন তিনি। এর মধ্যে ‘চরম আঘাত’ (৯৪), আত্মত্যাগ (৯৬), বাঁচার লড়াই (৯৭), অচল পয়সা (৯৮) অন্যতম। ছবিগুলোতে কাঞ্চন ছিল মূল নায়ক। কাঞ্চন যে বাণিজ্যিক ছবির বিগেস্ট সুপারস্টার তার একটা নমুনা সৈয়দ হারুন-এর ছবিগুলোতেও পাওয়া যায়।

Advertisements

৯৭-এর ছবি ‘বেঈমানী’ ছিল জমজমাট বাণিজ্যিক ছবি। গল্পে, গানে, অভিনয়ে উপভোগ্য কমপ্লিট ফুল প্যাকেজ। বাণিজ্যিক ছবিকে জমাতে যে ধরনের গল্প দরকার, যে ধরনের গান দরকার, যে ধরনের অভিনয় দরকার, যে ধরনের এক্সাইটমেন্ট লাগে তার সবই ছিল এ ছবিতে।

ইলিয়াস কাঞ্চন ও হুমায়ুন ফরীদির বন্ধুত্ব শুরু হয়েছিল একটা পারস্পরিক ভালোবাসা থেকে। ভালোবাসায় একটা ছেদ ঘটে দিতির মাধ্যমে। কারণ কাঞ্চন, ফরীদি দুজনই দিতিকে ভালোবেসে ফেলে। দুজন তো আর একজনকে পাবে না তাই একজনকে বেঈমানী করতে হয় বাধ্য হয়ে। বন্ধু থেকে শত্রু হয়ে ছবির গল্প ততক্ষণে মোড় নেয় অন্যদিকে। এর মধ্যে অমিত হাসান-কাজল জুটি আসে এই দুইজনের দ্বন্দ্বের ভেতর এক পশলা বৃষ্টি দিতে কিন্তু দ্বন্দ্ব লেগেই থাকে। পতনের সুর বেজে ওঠে একজনের জন্য যে নিজের ভালোবাসাকে নিজে গুলি করে হত্যা করে।

ইলিয়াস কাঞ্চন-দিতি অবধারিতভাবেই ঢালিউডের বাণিজ্যিক ছবির অন্যতম সেরা জুটি। তাদের মানসম্মত ছবি ও গান রয়েছে। এ ছবিতে তাদের রসায়ন অসাধারণ। প্রেমটা শুরু হয়েছিল হাসপাতাল থেকে। একটা অপরিচিত মেয়েকে রক্ত দিয়ে জীবন বাঁচাতে গিয়ে অধিকারবোধ জন্ম নেয়। দিতিই শুরুটা করে। একটা কাঙ্ক্ষিত টেলিফোন পেতে যতটুকু দেরি হয় সেটা আসার পর প্রেমটা দানা বাঁধে। কাঞ্চন টেলিফোনের অপর প্রান্ত থেকে বলে-‘আপনি ভুল জায়গায় মন হারিয়েছেন কিনা জানি না।’ দিতি তখনও আত্মবিশ্বাসী। মিলটা হয়ে যায় তাদের।
অমিত-কাজলের জুটিটা ছিল ছবির অন্যতম এনজয়অ্যাবল পার্ট। দুজনের প্রেম, কাঞ্চন-ফরীদির দ্বন্দ্বের বলি হয়ে লুকিয়ে দেখা করা, ঝুঁকি নেয়া, পালিয়ে যাওয়া সবই ছিল দারুণ এনজয়অ্যাবল।

দিতির অভিনয়ের স্পেস বেশি ছিল ছবিতে কারণটা ডাবল রোল। কাঞ্চন যাকে ভালোবেসেছিল সে দিতি খুন হলে আর এক দিতি আসে সে খুনের রহস্য উদঘাটন করতে পুলিশ ইন্সপেক্টর হয়ে। কাঞ্চনকে, ফরীদিকে অবাক করে দেয় দ্বিতীয় দিতি।

Advertisements

ইলিয়াস কাঞ্চন, হুমায়ুন ফরীদি দুজনই ছিল ছবির শক্তিশালী অংশ। দুজনের প্রথমদিকের বন্ধুত্ব ও মাঝখান থেকে শেষ পর্যন্ত গড়ানো শত্রুতার মধ্যে অসাধারণ অভিনয় তাদের। তাদের দুজনের মধ্যে নাসির খান ছিল অন্যতম খলনায়ক।

ছবিটি মিউজিক্যালও। সবগুলো গান জনপ্রিয়। ‘আজ বড় সুখে দুটি চোখে’ এ গানটি কাঞ্চন-দিতি জুটির অন্যতম সেরা হিট গান। ‘আমি ভালোবাসার সুখে’ এটাও চমৎকার। ‘পিছু নিয়েছে কিছু লোক’ গানটি অমিত হাসান-কাজলের হিট গান। গানের মেকিং এবং আগুন-রুনা লায়লার গায়কী দুর্দান্ত। ‘ওগো দুষ্টু ছেলে’ গানটি খুবই মজার।

‘বেঈমানী’ ছবিটি সেইসব বাণিজ্যিক ছবির পরিচালকদের জন্য নোটেবল যারা দর্শকদের খাঁটি বিনোদনধর্মী বাণিজ্যিক ছবি উপহার দিতে চান। সৈয়দ হারুন সেই পরিচালকদের জন্য একটি নির্ভরযোগ্য নাম।

সাবস্ক্রাইব
Notify of
guest
0 মন্তব্য
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন