English

31 C
Dhaka
বৃহস্পতিবার, মার্চ ২৮, ২০২৪
- Advertisement -

বাদীর কাছে ক্ষমা প্রার্থনাসহ বিএনপি নেতাকে মুক্তিযুদ্ধের বই পড়ার আদেশ

- Advertisements -

আদালতে বাদীর আনিত অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন আসামিরা। তবে তাদেরকে কারাগারে না পাঠিয়ে বাদীর কাছে ক্ষমা প্রার্থনাসহ মুক্তিযুদ্ধের ১২টি বই পড়ার আদেশ দিয়েছেন আদালতের বিচারক।

এই আসামিরা হলেন- বগুড়া জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলী আজগর তালুকদার হেনা ও শহর যুবদলের আহ্বায়ক আদিল শাহরিয়ার গোর্কী। একজন সাংবাদিকের দায়ের করা মামলায় বিচারক তাদেরকে কারাগারে না পাঠিয়ে সংশোধনের জন্য সাতটি শর্তে প্রবেশন দিয়েছেন।

রাজশাহীর সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. জিয়াউর রহমান আজ রবিবার (১৬ এপ্রিল) দুপুরে প্রবেশনের এই আদেশ দিয়েছেন।

রাজশাহীর সাইবার ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট ইসমত আরা বেগম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, মামলার দুই আসামির বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আজকে প্রবেশনের এই রায় দেন আদালতের বিচারক।

আর প্রবেশনের জন্য সাতটি শর্ত নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে প্রথম শর্তটি হলো- অভিযুক্ত দুই আসামিকেই মামলার বাদী তানভীর আলম রিমনের কাছে লিখিতভাবে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে হবে। দ্বিতীয় শর্ত হলো- ১০টি ফলজ ও ১০টি বনজ বৃক্ষ রোপণ করতে হবে। আর তৃতীয় শর্ত হলো- দুই আসামিকেই মহান মুক্তিযুদ্ধের ওপর লেখা ১২টি বই পড়তে হবে। এই বইগুলোর মধ্যে রয়েছে- জাহানারা ইমামের লেখা একাত্তরের দিনগুলি, রণাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধাদের লেখা একাত্তরে চিঠি, আনিসুল হকের লেখা ‘মা’, ড. কামাল হোসেনের লেখা মুক্তিযুদ্ধ কেন অনিবার্য ছিল, আনিসুজ্জামানের লেখা আমার মুক্তিযুদ্ধ, আনিসুল হক উষার দুয়ারে, রবীন্দ্রনাথ ত্রিবেদীর লেখা দ্য রেইপ অব বাংলাদেশ, এম আর আক্তার মুকুলের লেখা আমি বিজয় দেখেছি ও চরমপত্র, নীলিমা ইব্রাহিমের লেখা আমি বীরাঙ্গনা বলছি, সেলিনা হোসেনের লেখা হাঙর নদী গ্রেনেড এবং আনোয়ার পাশার রাইফেল রোটি আওরাত। এছাড়া অন্য শর্তগুলোর মধ্যে রয়েছে- নিজ আইডি থেকে আসামিদের সাইবার সচেতনতা বিষয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে, প্রবেশনকালীন সময় দোষী সাব্যস্ত আসামিরা আর কোনো নতুন অপরাধের সঙ্গে জড়িত হবেন না বা একই ধরনের অপরাধ করবেন না; আদালত এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থা তলব করলে যথাসময়ে উপস্থিত হবেন।

আর ক্ষতিপূরণ হিসেবে দুই আসামি এক লাখ করে দুই লাখ টাকা আদালতে জমা দেবেন। সেখান থেকে এক লাখ বাদীকে এবং এক লাখ টাকা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দেওয়া হবে।

অ্যাডভোকেট ইসমত আরও বলেন, প্রবেশনের এই শর্তগুলোর কোনো একটি ভঙ্গ করলেই তাদের প্রবেশনের আদেশ বাতিল হয়ে যাবে। আর এমনটি হলে দুই আসামিকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে এক বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে। এছাড়া জরিমানা গুণতে হবে এক লাখ টাকা করে। অনাদায়ে আরও তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড।
প্রবেশন কর্মকর্তা তিন মাস পরপর প্রবেশনার আসামিদের প্রবেশন শর্ত প্রতিপালন ও গতি সম্পর্কে মনিটরিংয়ের পর আদালতে রিপোর্ট দাখিল করবেন। প্রবেশন সন্তোষজনক হলে এই দণ্ড দুই আসামির চাকরিসহ ভবিষ্যৎ জীবন অযোগ্যতা বলে বিবেচিত হবে না।

বগুড়া থেকে প্রকাশিত দৈনিক মহাস্থান পত্রিকার প্রকাশক ও সম্পাদক তানভীর আলম রিমন এই মামলার বাদী। তার পত্রিকায় বগুড়ার বিএনপির রাজনীতি নিয়ে তিনি একটি সংবাদ প্রকাশ হয়েছিল। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে বগুড়া জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলী আজগর তালুকদার হেনা তাকে হুমকি দিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন। ওই ফেসবুক স্ট্যাটাসে রিমনকে খুবই অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করা হয় এবং তাকে যেখানে পাবেন সেখানেই মারার জন্য নেতাকর্মীদের নির্দেশ দেওয়া হয়।

অপর আসামি শহর যুবদল আহ্বায়ক আদিল শাহরিয়ার গোর্কীও তার ফেসবুকে তানভীর আলম রিমনের ছবির সাথে অসংলগ্ন কথা লিখে স্ট্যাটাস দেন। এই ঘটনায় ২০২১ সালের ২১ জানুয়ারি ঢাকা সাইবার ট্রাইব্যুনালে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন। পরে রাজশাহীতে সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালত স্থাপন হলে ওই মামলাটি বিচারের জন্য এখানে স্থানান্তর হয়ে আসে। সাক্ষ্য-প্রমাণ শেষে আজকে এই রায় ঘোষণা করা হয়।

সাবস্ক্রাইব
Notify of
guest
0 মন্তব্য
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন