English

29 C
Dhaka
শুক্রবার, এপ্রিল ১৯, ২০২৪
- Advertisement -

বিশ্বব্যাপী করোনা আক্রান্তের সংখ্যা অক্টোবরে আগের মাস থেকে বৃদ্ধি পেয়েছে ৩২ লাখ ৩৬,৭৮২ জন

- Advertisements -

বিশ্বব্যাপী প্রবল প্রতাপে চলছে মহামারী করোনাভাইরাসের তাণ্ডবলীলা।চলমান এ আগ্রাসনের শেষ কবে হবে তা এখনো অজানা। প্রথম আক্রান্তের সাড়ে ১০ মাস পরে এসে আমরা যদি শুধু অক্টোবর ২০২০ মাসের হিসেব করি অর্থাৎ ১ অক্টোবর’২০ সকাল ১০টা থেকে ৩১ অক্টোবর’২০ সকাল ১০টা পর্যন্ত বিশ্বখ্যাত জরিপ সংস্থা ওয়ার্ল্ডোমিটারের তথ্যানুযায়ী ৩০ দিনে বিশ্বে মোট আক্রান্ত হয়েছেন ১ কোটি ১৭ লাখ ৬১ হাজার ৬৮৫ জন বা গড়ে প্রতিদিন ৩ লাখ ৯২ হাজার ২৬ জন করে।যেখানে সেপ্টেম্বর মাসে মোট আক্রান্ত হয়েছিল ৮৫ লাখ ২৪ হাজার ৯০৩ জন বা গড়ে প্রতিদিন ২ লাখ ৮৪ হাজার ১৬৩ জন করে। অর্থাৎ সেপ্টেম্বর থেকে অক্টোবরে প্রতিদিন ১ লাখের বেশী মানুষ আক্রান্ত হয়েছে।
অক্টোবরে ৩০ দিনে মোট মৃত্যু ১ লাখ ৭৫ হাজার ১১৮ জনের বা প্রতিদিন গড়ে ৫ হাজার ৮৩৭ জন করে। যেখানে সেপ্টেম্বর মাসে মোট মৃত্যু ছিল ১ লাখ ৬৪ হাজার ২৮ জনের বা গড়ে প্রতিদিন মৃত্যু ছিল ৫ হাজার ৪৬৮ জন করে। অর্থাৎ সেপ্টেম্বর মাস থেকে অক্টোবর মাসে বিশ্বব্যাপী করোনা আক্রান্ত ও মৃত্যু উভয় সংখ্যা বেড়েছে।
আমরা যদি গত ৩০ দিনে করোনা থেকে সুস্থতার সংখ্যাটা দেখি তাহলে দেখা যায় মোট সুস্থ হয়েছেন ৭৮ লাখ ১৯ হাজার ৮৫২ জন বা দিনে গড়ে ২ লাখ ৬০ হাজার ৬৬১ জন করে।
তবে এই একমাসে করোনার থাবা কোন কোন দেশে বেড়েছে আশংকাজনকহারে।আবার কোন কোন দেশে কমেছেও। অক্টোবর এর প্রথমদিন আক্রান্তের ক্রমানুসারে প্রথম বিশটি দেশ অক্টোবর এর শেষ দিনে এসে অনেকটা ওলট-পালট হয়ে গেছে। যেমন অক্টোবর এর প্রথমদিনে প্রথম ২০টি দেশের অবস্থান ছিল যথাক্রমে যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, ব্রাজিল, রাশিয়া, কলোম্বিয়া, পেরু, স্পেন, আর্জেন্টিনা, মেক্সিকো, সাউথ আফিকা, ফ্রান্স, চিলি, ইরান, যুক্তরাজ্য, বাংলাদেশ, ইরাক, সৌদিআরব, তুরস্ক, ইতালী ও পাকিস্তান।
কিন্তু ৩১ অক্টোবর এসে এচিত্রে বেশ রদবদল ঘটেছে।তালিকার সর্বোচ্চ ৪টি স্থানে যুক্তরাষ্ট্র, ভারত,ব্রাজিল ও রাশিয়া স্থির থাকলেও অন্যান্য অবস্থানে রদবদল হয়েছে। এরপর যথাক্রমে আছে ফ্রান্স, স্পেন,আর্জেন্টিনা, কলোম্বিয়া, যুক্তরাজ্য, মেক্সিকো, পেরু, সাউথ আফিকা, ইতালী, ইরান, জার্মানী, চিলি, ইরাক, ইন্দোনেশিয়া, বাংলাদেশ ও বেলজিয়াম।
এখানে উল্লেখযোগ্য যে, ইতালী, স্পেন, ফ্রান্স, আর্জেন্টিনা ও যুক্তরাজ্যে নতুন করে করোনা সংক্রমন আগের মাসের চেয়ে দ্বিগুণ-তিনগুণ বেড়েছে।এদিকে সেপ্টেম্বরে শীর্ষ বিশে না থাকলেও অক্টোবরে জার্মানি,ইন্দোনেশিয়া ও বেলজিয়াম উঠে এসেছে।
এবার যদি একনজরে ৩০দিনে শীর্ষ ২০টি দেশের করোনা আক্রান্তের পরিসংখ্যানটা দেখি-
যুক্তরাষ্ট্রে ৩০ দিনে মোট আক্রান্ত হয়েছেন ১৮ লাখ ৬৯ হাজার ১৫ জন বা গড়ে প্রতিদিন ৬২ হাজার ৩০০ জন করে।সেপ্টেম্বর থেকে অক্টোবরে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে ৬ লাখ ৩৩ হাজার ৫২৯ জন।
ভারতে ৩০ দিনে ১৮ লাখ ২৫ হাজার ৮৯৯ জন বা গড়ে প্রতিদিন ৬০ হাজার ৮৬৩ জন করে আক্রান্ত হয়েছে। সেপ্টেম্বর থেকে অক্টোবরে আক্রান্তের সংখ্যা কমেছে ভারতে।
৩০ দিনে ব্রাজিলে আক্রান্ত হয়েছেন ৭ লাখ ৫ হাজার ৯৪২ জন বা প্রতিদিন গড়ে ২৩ হাজার ৫৩১ জন করে। সেপ্টেম্বর থেকে অক্টোবরে আক্রান্তের সংখ্যা কমেছে। রাশিয়ায় ৩০ দিনে আক্রান্ত হয়েছেন ৪ লাখ ২৩ হাজার ৬৯০ জন। যা প্রতিন গড়ে ১৪ হাজার ১২৩ জন করে। সেপ্টেম্বর থেকে অক্টোবরে আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় আড়াইগুণ বেড়েছে।
ফ্রান্সে ৩০ দিনে আক্রান্ত হয়েছেন ৭ লাখ ৬৮ হাজার ৪৪৯ জন বা গড়ে প্রতিদিন ২৫ হাজার ৬১৫ জন করে। গত এক মাসে ফ্রান্সে আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ৩ গুণ বেড়েছে।
স্পেনে ৩০ দিনে আক্রান্ত হয়েছেন ৪ লাখ ৯৫ হাজার ৩২৯ জন বা গড়ে প্রতিদিন ১৬ হাজার ৫১১ জন করে। গত একমাসে স্পেনে আক্রান্তের সংখ্যা দেড়গুণের বেশী বেড়েছে।
আর্জেন্টিনায় ৩০ দিনে আক্রান্ত হয়েছেন ৪ লাখ ৬ হাজার ১৭৮ জন বা গড়ে প্রতিদিন ১৩ হাজার ৫৩৯ জন করে। গত একমাসে আক্রান্তের সংখ্যা দেড়গুণের মত বেড়েছে।
কলম্বিয়ায় ৩০ দিনে আক্রান্ত হয়েছেন ২ লাখ ৩৩ হাজার ৪৭২ জন বা গড়ে প্রতিদিন ৭ হাজার ৭৮২ জন করে। গত একমাসে কলোম্বিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে।
যুক্তরাজ্যে ৩০ দিনে আক্রান্ত হয়েছেন ৫ লাখ ২৬ হাজার ৪৮১ জন বা গড়ে প্রতিদিন ১৭ হাজার ৫৪৯ জন করে। গত এক মাসে যুক্তরাজ্যে আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ৫ গুণ বেড়েছে।
মেক্সিকোতে ৩০ দিনে আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ৭৪ হাজার ৬৪৮ জন বা গড়ে প্রতিদিন ৫ হাজার ৮২২ জন করে। গত একমাসে মেক্সিকোতেও আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে।
পেরুতে ৩০ দিনে আক্রান্ত হয়েছেন ৮৫ হাজার ৩৫১ জন বা গড়ে প্রতিদিন ২ হাজার ৮৪৫ জন করে। গত একমাসে পেরুতে আক্রান্তের সংখ্যা কমেছে।
সাউথ আফ্রিকায় ৩০ দিনে আক্রান্ত হয়েছেন ৪৯ হাজার ৩৪৩ জন বা গড়ে প্রতিদিন ১ হাজার ৬৪৫ জন করে।
ইতালীতে ৩০ দিনে আক্রান্ত হয়েছেন ৩ লাখ ৩২ হাজার ৮১৩ জন বা গড়ে প্রতিদিন ১১ হাজার ৯৪ জন করে। গত এক মাসে ইতালীতে আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ১০ গুণ বেড়েছে।
ইরানে ৩০ দিনে আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ৪৭ হাজার ৭৩৩ জন বা গড়ে প্রতিদিন ৪ হাজার ৯২৪৪ জন করে। গত একমাসে ইরানে সংক্রমণ বেড়েছে।
জার্মানিতে ৩০ দিনে আক্রান্ত হয়েছেন ২ লাখ ৯ হাজার ৮৫৬ জন বা গড়ে প্রতিদিন ৬ হাজার ৯৯৫ জন করে। অক্টোবরের ১ তারিখে জার্মানি শীর্ষ বিশে ছিল না সংক্রমণ এমন বেড়েছে যে ৩১ অক্টোবর জার্মানি ১৫তম স্থানে উঠে এসেছে।
চিলিতে ৩০ দিনে আক্রান্ত হয়েছেন ৪৫ হাজার ৫৮০ জন বা গড়ে প্রতিদিন ১ হাজার ৫১৯ জন করে। চিলিতে সংক্রমণ কিছুটা কমেছে।
ইরাকে ৩০ দিনে আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ৭ হাজার ৬৫২ জন বা গড়ে প্রতিদিন ৩ হাজার ৫৮৮ জন করে। ইরাকেও আক্রান্তের সংখ্যা কিছুটা কমেছে।
ইন্দোনেশিয়ায় ৩০ দিনে আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ৩ হাজার ৪৮০ জন বা গড়ে প্রতিদিন ৩ হাজার ৪৪৯ জন করে। অক্টোবরের ১ তারিখে শীর্ষ বিশে ইন্দোনেশিয়া ছিল না সংক্রমণ এমন বেড়েছে যে ৩১ অক্টোবর ইন্দোনেশিয়া ১৮তম স্থানে উঠে এসেছে।
বাংলাদেশে ৩০ দিনে আক্রান্ত হয়েছেন ৪২ হাজার ৮৮৫ জন বা গড়ে প্রতিদিন ১ হাজার ৪৩০ জন করে। বাংলাদেশে সংক্রমণ গত ৩০ দিনে কিছুটা কমেছে।
বেলজিয়ামে ৩০ দিনে আক্রান্ত হয়েছেন ৯৪ হাজার ৮ জন বা গড়ে প্রতিদিন ৩ হাজার ১৩৪ জন করে।উল্লেখ্য যে অক্টোবরের ১ তারিখে শীর্ষ বিশে বেলজিয়াম ছিল না সংক্রমণ এমন বেড়েছে যে ৩১ অক্টোবর বেলজিয়াম ২০তম স্থানে উঠে এসেছে।
এদিকে সংক্রমণ কিছুটা কমে যাওয়ায় সৌদি আরব,তুরস্ক, পাকিস্তান অক্টোবরের শেষে এসে শীর্ষ বিশ থেকে নেমে গেছে।
বাস্তবতা হলো, ভাইরাসটি সহজেই সংক্রমণ ছড়াচ্ছে। ফলে এর বিস্তার নিয়ন্ত্রণে না এনেই যদি সবকিছু সচল করে স্বাভাবিক করা হয় তাহলে তা হবে ভয়াবহ একটি বিপর্যয়। এমনটিই জানালেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মহাপরিচালক টেদ্রোস আধানম গেব্রেয়াসুস। এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, করোনার সংক্রমণ রোধে বিধিনিষেধগুলো জারি রাখতে হবে।
শেষ কথা হল,কোনো দেশই আগাম এমনটা বলতে পারে না মহামারি করোনা ভাইরাসের প্রকোপ শেষ হয়ে গেছে।

এস এম আজাদ হোসেন

লেখকঃ সাংবাদিক,সমাজকর্মী।
০১৭১৬৪৯৩০৮৯
email: smazadh@yahoo.com

সাবস্ক্রাইব
Notify of
guest
0 মন্তব্য
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন