English

34 C
Dhaka
শুক্রবার, এপ্রিল ১৯, ২০২৪
- Advertisement -

সমন্বয়হীন প্রকল্প কি বন্ধ হবে না: সেতুর কারণে ধুঁকছে কপোতাক্ষ

- Advertisements -

কালের পরিক্রমায় গুরুত্ব হারিয়েছে দেশের নৌপথগুলো। যা টিকে আছে, তা–ও নদী দখল, দূষণ ও অপরিকল্পিত প্রকল্পে জর্জরিত। তারই নিদারুণ উদাহরণ হতে পারে কপোতাক্ষের নৌপথ। একের পর এক ২১টি সেতু বসেছে নদটির ওপর, সেগুলোই এখন এর কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে। কম উচ্চতায় সেতুগুলো নির্মাণ করে নৌপথ অচল করা হয়েছে। আর পলি জমে জমে এবং দখলের শিকার হয়ে ১৮০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের নদটি মৃতপ্রায়। বিআইডব্লিউটিএর একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, নৌযান চলাচলের মতো উচ্চতা রেখে এসব সেতু নির্মাণ করা হয়নি। বিধিমালা অনুযায়ী, নৌপথে খুঁটিসহ বৈদ্যুতিক লাইন ও সেতু নির্মাণ করতে হলে বিআইডব্লিউটিএর ছাড়পত্র (নেভিগেশনাল ক্লিয়ারেন্স) নেওয়া বাধ্যতামূলক। সেখানেই সেতুর উচ্চতার মানদণ্ড ঠিক করে দেওয়া থাকে। কিন্তু এরপরেও কেমন এমন হলো?

দেশের নদী ও নৌপথগুলো নীতিনির্ধারকদের কাছে কতটা অবহেলার, সেটিই বোঝা যায় বিধিমালায়। বিআইডব্লিউটিএ প্রথম ১৯৬৫ সালে উচ্চতার মানদণ্ড নির্ধারণের উদ্যোগ নিয়েছিল। তবে এর প্রজ্ঞাপন হয় ২০১০ সালে। এর আগেই কোনো যাচাই–বাছাই ছাড়া হয়ে গেছে অসংখ্য সেতু। আরও অবাক করার বিষয় হলো, চার দশক পেরিয়ে যে প্রজ্ঞাপন হলো, সেখানে নৌপথের শ্রেণি ধরে সেতু নির্মাণের উচ্চতা ও দৈর্ঘ্য বলা হলেও পথের নামই উল্লেখ করা হয়নি। ফলে বিধিমালা অমান্য করেও সেতু হয়েছে। এ ছাড়া দেশে সেতু নিয়ে আলাদা মন্ত্রণালয় থাকতে সরকারি অন্যান্য কর্তৃপক্ষও চাইলে সেতু বানাতে পারে। কপোতাক্ষের ওপর সেতু করেছে এলজিইডি, সওজ, ত্রাণ ও পুনর্বাসন অধিদপ্তর, বাংলাদেশ রেলওয়ে। এত কর্তৃপক্ষ যদি সেতু বানাতে থাকে, সেখানে অব্যবস্থাপনা ও সমন্বয়হীনতা থাকার কথা নিশ্চিতভাবেই।

নৌপরিবহন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নদটি বাঁচানোর জন্য সেতুগুলো ভেঙে ফেলা ছাড়া কোনো গতি নেই। এলাকাবাসীও এ দাবিই জানিয়েছেন জোরালোভাবে। কিন্তু বিআইডব্লিউটিএ তাদের প্রতিবেদনে সেতুটি ভেঙে ফেলার বিষয়ে মত দেয়নি।প্রতিনিধি জানালেন, বিআইডব্লিউটিএ চাইলেই সেতুগুলো ভেঙে ফেলতে পারে, কিন্তু আদতে সম্ভব হবে না। আমলাতান্ত্রিক ও প্রশাসনিক জটিলতা শেষে সেটি যদি কখনো সম্ভব হয়, তার আগেই নদী সংকুচিত হয়ে খালে পরিণত হয়ে যাবে। এসব সেতুর নির্মাণে শত শত কোটি টাকাও অপচয় হলো। নদীকে টিকিয়ে রাখতে খননসহ নানা প্রকল্পে আরও বিপুল অর্থ খরচ হচ্ছে, কিন্তু এসব সেতুর কারণে প্রকল্পগুলোও তেমন সুফল দেবে না, ফলে এখানেও অর্থের অপচয়। একটা দেশের উন্নয়ন প্রকল্পে যুগ যুগ ধরে কোনো সমন্বয় থাকবে না কেন? একটা নদীকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেওয়ার দায় কার? বিধিমালা অমান্য করায় সরকারি কর্তৃপক্ষগুলোর বিরুদ্ধে কি কোনো ব্যবস্থা নেবে না বিআইডব্লিউটিএ?

সাবস্ক্রাইব
Notify of
guest
0 মন্তব্য
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন