English

37 C
Dhaka
মঙ্গলবার, এপ্রিল ২৩, ২০২৪
- Advertisement -

৪ কারণে দেখতে পারেন ‘দ্য রেলওয়ে মেন’

- Advertisements -
Advertisements

ভারতের জাতির জনক মহাত্মা গান্ধী বলেছিলেন, ‘একটি চোখের জন্য চোখ কেড়ে নেওয়া মানে পুরো বিশ্বকে অন্ধ করে তোলা।’ অহিংসবাদী ছিলেন গান্ধীজি। তাই হয়তো এমনটা ভেবেছিলেন। কিন্তু প্রায় ১৫ হাজার মানুষ হত্যার পেছনে জড়িত ব্যক্তি যখন সরকারি নিরাপত্তায় পালিয়ে যায়, তখন ক্ষমা আর অহিংসার আদর্শের কী অর্থ দাঁড়ায়?

Advertisements

একজন সাংবাদিকের এমন এক প্রশ্ন দিয়ে শুরু হয় ‘দ্য রেলওয়ে মেন’ ওয়েব সিরিজ।১৯৮৪ সালে ভারতের ভোপালে গ্যাস লিক ট্র্যাজেডি কেন্দ্র করে এই সিরিজ বানিয়েছেন শিব রাওয়াইল। অভিনয় করেছেন কে কে মেনন, আর মাধবন, সানি হিন্দুজা, জুহি চাওলাসহ উদীয়মান বেশ কয়েকজন শিল্পী। চার পর্বের সিরিজটি মুক্তি পেয়েছে ওটিটি প্ল্যাটফরম নেটফ্লিক্সে।

বলা হয়ে থাকে- ভোপালের ঘটনাটি বিশ্বের সবচেয়ে খারাপ শিল্প বিপর্যয়। এর বিরূপ প্রভাব এখনো বয়ে বেড়াচ্ছেন ভোপালের প্রবীণ বাসিন্দারা। সেই ঘটনা বাস্তবের সঙ্গে মিল রেখে পর্দায় ফুটিয়ে তুলেছেন পরিচালক। সঙ্গে কিছু নাটকীয়তা জুড়ে দেওয়ায় সাধারণ বয়ানে ‘কমপ্লিট প্যাকেজ’ বলা চলে সিরিজটিকে।
তাই ইতিহাস জানার আগ্রহ, গল্পকথন ও নির্মাণ, নাটকীয়তা এবং ‘হিরোইজম’ পছন্দ হলে প্রায় চার ঘণ্টার সিরিজটি আপনার জন্য। তবে লেখার পরবর্তী অংশে যে প্রসঙ্গ নিয়ে আলাপ হতে যাচ্ছে তা আপনার পছন্দ না-ও হতে পারে।
নির্মিত সিরিজের বয়ান অনুযায়ী, আমেরিকানদের মালিকানাধীন ‘ইউনিয়ন কার্বাইড’ নামের কারখানা থেকে নির্গত বিষাক্ত গ্যাসের কারণে গোটা শহরজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। নিঃশ্বাসের সঙ্গে গ্যাস শরীরে প্রবেশ করায় প্রাণহানি ঘটছে মানুষ ও গবাদি পশুর। এই দুর্যোগ থেকে উত্তরণের কোনো পথ খুঁজে পাচ্ছেন না কেউ।

 

এর মধ্যেই ঘটনাচক্রে কয়েকজন সরকারি কর্মকর্তা একত্রিত হন। পর্যাপ্ত সহায়তাসামগ্রী ও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সমর্থন ছাড়াই তারা সহস্রাধিক মানুষের জীবন বাঁচাতে সক্ষম হন। তাদের মধ্যে কেন্দ্রীয় চরিত্রকে দেখা যায় বেশ শান্ত ও উদার হিসেবে। এমন আরো কয়েকটি চরিত্র আর ঘটনাপ্রবাহ মিলে আবেগীয় পরিবেশ তৈরি করে। শেষে তাদের নামের সঙ্গে বীরত্বের খেতাব জুড়ে যায়।

গড়পড়তা বেশির ভাগ ওয়েব সিরিজই এখন এমন ‘টেমপ্লেট’ ব্যবহার করে নির্মিত হচ্ছে। ফলে ব্যাংক ডাকাতির মতো (মানি হেইস্ট) ঘটনার পরও ডাকাতরা দর্শকের আবেগীয় সমর্থন পেয়ে নিষ্পাপ হয়ে যান। ‘দ্য রেলওয়ে মেন’ সিরিজেও এমন চেষ্টা লক্ষণীয়। ভোপাল ট্র্যাজেডির সময় রেলওয়ের কল্পিত কয়েক কর্মকর্তা যে বীরের ভূমিকা পালন করেছেন, সে দিকটি ফুটিয়ে তুলতেই বেশি মনোযোগী ছিলেন চিত্রনাট্য সংশ্লিষ্টরা। এ কারণেই সিরিজে আমরা দেখতে পাই, বিষাক্ত গ্যাসের কারণে অন্যরা যেখানে মুহূর্তের মধ্যে প্রাণ হারাচ্ছেন, সেখানে সিরিজের কেন্দ্রীয় চরিত্র (কে কে মেনন) মাস্ক ছাড়াই দীর্ঘ সময় বেঁচে আছেন। পূর্বপ্রতিশ্রুতির অংশ হিসেবে মৃত সহকর্মীর স্বজনদের নিরাপদ আশ্রয়ে পৌঁছে দিচ্ছেন। মাঝখানে জ্ঞান হারালেও কয়েক ঘণ্টা পর অলৌকিকভাবে তাঁকে আবার জেগে উঠতে দেখা যায়!

সিরিজে সুযোগ বুঝে বাস্তব ঘটনার কিছু ফুটেজ ব্যবহার করা হয়েছে। এতে ভোপালের রাস্তাঘাটে মৃতদেহ, হাসপাতালে মানুষের ভিড় দেখা যায়। অর্থাৎ বাতাসে মিশে যাওয়া বিষাক্ত গ্যাসে সবাই সমানভাবে ভুক্তভোগী হয়েছেন। কিন্তু সিরিজে রেলওয়ে সংশ্লিষ্টরাই (কে কে মেনন, আর মাধবনসহ অন্যরা) যেন শুধু ব্যতিক্রম। তাদের সংগ্রাম আছে, পাশাপাশি আছে টিকে থাকার অতিমানবীয় গুণ।

আবার ফেরা যাক সিরিজের শুরুর দৃশ্যের সাংবাদিকের (সানি হিন্দুজা) বর্ণনায়। এ সময় দেখা যায়, ভোপাল ট্র্যাজেডির মূলহোতা ইউনিয়ন কার্বাইডের চেয়ারম্যান ওয়ারেন অ্যান্ডারসন ভারতে পৌঁছানোর পর আটক হয়েছেন। কয়েক ঘণ্টা পর সরকার অনুমোদিত উড়োজাহাজে করে তাঁকে আবার দেশের বাইরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ঠিক সে সময়ই ব্যাকগ্রাউন্ড ভয়েসে মহাত্মা গান্ধীর উক্তি উদ্ধৃত করেন সাংবাদিক সানি হিন্দুজা। যা সাধারণ মানুষের বিচারবঞ্চিত হওয়া ও সিরিজের মূল কাহিনি ফাঁস করে দেয়। সচেতন না হলে এর পরের চার ঘণ্টায় আপনাকে শুধু রেলওয়ের কর্মীদের হিরো বানানোর চেষ্টা দেখে যেতে হবে।
সাবস্ক্রাইব
Notify of
guest
0 মন্তব্য
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ

বাতাসে ধসে পড়ল সেতু!

- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন