মোঃ নূর ই আলম হোসেন, জয়পুরহাট: নবান্ন উৎসব ঘিরে জয়পুরহাটের কালাইয়ে বসেছে মাছের মেলা । মাছ কিনতে মেলায় ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ করা গেছে। প্রতি বছরের ন্যায় এবারও উপজেলার পাচশিরা বাজারে এক দিনের মেলা বসেছে। মেলায় দেশীয় প্রজাতীর পাশপাশি সামুদ্রিক মাছও পাওয়া যাচ্ছে। ভোর ৬ থেকে শুরু হওয়া এ মেলা সারাদিন চলবে।
জানা গেছে,প্রতি বছর দিনক্ষণ মেনে এই এক দিনের অপেক্ষায় প্রহর গুনেন এ উপজেলার আশপাশের ও প্রত্যন্ত গ্রামের লোকজন। ইংরেজি ক্যালেন্ডার নয়, পঞ্জিকা অনুসারে প্রায় একুশ বছর ধরে চলছে মেলাটি। প্রতি বছরের মতো এবারও নবান্ন উপলক্ষ্যে বসা মেলায় বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষ মাছ কিনতে এসেছেন। বোয়াল, রুই, সিলভার কার্প, কাতলা, মৃগেল বড় সাইজের গলদা চিংড়িসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ দিয়ে পসরা সাজায় ব্যবসায়ীরা।
মঙ্গলবার ভোর থেকেই কালাই পৌরসভার পাঁচশিরা বাজারে বসা রকমারি দোকানগুলোতে চলে মাছ বেচা-কেনার ধুম।
মেলায় ঢুকেই সারি সারি দোকানগুলোতে চোখে পড়ে মন-জুড়ানো সব মাছের পসরা। দুরদুরান্ত থেকে বিক্রেতারা এসেছেন মাছ বিক্রির জন্য। দোকানগুলোতে থরে থরে সাজানো মাছগুলো প্রায় সবই বড় আকারের। আছে বড় বড় রুই, কাতলা, মৃগেল, সিলভার কার্প ও পাঙাশ মাছ। চাষের মাছের পাশাপাশি নদীর দু-এক ধরনের সামুদ্রিক মাছও উঠেছে এ মেলায়। সবাই দরদাম করে মাছ কিনছেন। তবে সকালে ক্রেতার চেয়ে দর্শনার্থীদের ভীড় বেশি লক্ষ করা গেছে। আকারভেদে ৩শ টাকা থেকে ১২শ টাকায় প্রতি কেজি মাছ বিক্রি হচ্ছে।
মাছের মেলা টিকে ঘিরে এ দিনে নিকটবর্তী উপজেলাসহ ২০-২৫টি গ্রাম-মহল্লার মানুষের মাঝে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখা যায়। এলাকার সব শ্রেণি-পেশার মানুষ এ দিন সাধ এবং সাধ্য অনুযায়ী পছন্দের মাছ কিনে বাড়ি ফিরে। এবার মেলায় ওঠা মাছগুলোর ওজন ছিল প্রায় ৩ থেকে ২০ কেজি। উৎসবমুখর পরিবেশে চলে মাছ বেচা-কেনা।
মেলায় মাছ কিনতে আসা পৌরসভার মো. সুলতান মাহমুদ ,আব্দুল মতিন, আব্দুল করিম, কালাই উপজেলার পার্শ্ববর্তী ক্ষেতলাল উপজেলার খলিলুর রহমান, নঈম আলীসহ অনেকের সাথে সঙ্গে কথা হয়।
ক্রেতারা জানান, নবান্ন উৎসবকে কেন্দ্র করে বসা এ মাছের মেলায় প্রচুর আমদানি সত্বেও দাম হাকা হয় অনেকটা বেশি।
মাছ ব্যবসায়ীরা জানান, গত বছরের তুলনায় এবার মাছের দাম অনেক বেশি। মাছের মেলায় লোক সমাগম হলে বেচা-কেনা ভাল হবে। এবারে ভাল লাভের প্রত্যাশা করছেন তারা।
নবান্ন উৎসব উপলক্ষ্যে মাছের মেলার উদ্যেক্তা রহুল আমিন তালুকদার জানান, ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্যে দিয়ে মেলাটি উপভোগ করা হয়। আগামীতে মেলার পরিধি আরও বাড়বে বলে আমি আশাবাদী।
মো. আব্দুর রহমান বলেন,‘ নবান্ন উৎসবকে ঘিরে প্রতিটি পরিবারে একটা মিলন মেলার পরিবেশ সৃষ্টি হয়। সেখানে খাবার পরিবেশনের অন্যতম অংশ জুড়েই থাকে নতুন ধানের চালের ভাত ও মাছের বিভিন্ন পদের তরকারি। তাই এই মাছের মেলায় এসেছি ,দেখেশুনে মাছ কিনব।
কালাই উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা তৌহিদা মোহতামিম জানান, নবান্ন উৎসব উপলক্ষ্যে কালাই উপজেলা পাচশিরা বাজারে মাছের মেলা আয়োজন করে থাকে। এটা শুধু মাছ কেনাবেচা নয় আনন্দ উৎসবও বটে। যেখানে কেনা-বেচা ক্রয় করা ছাড়া ও অনেকে শুধু দেখতে আসেন। এখানে বিভিন্ন প্রজাতির দেশীয় মাছসহ বিক্রি করা হয়।
