English

29 C
Dhaka
শনিবার, এপ্রিল ২৭, ২০২৪
- Advertisement -

রাঙ্গামাটিতে পর্যটকদের বিমোহিত করে শুভলং ঝর্ণার সৌন্দর্য্য

- Advertisements -
Advertisements
Advertisements

রাঙ্গামাটি সদর হতে মাত্র ২৫ কিলোমিটার দূরত্বে শুভলং বাজারের পাশেই শুভলং ঝর্ণার অবস্থান। বাংলাদেশের অন্য সকল ঝর্ণার মত শুভলং ঝর্ণাতেও শুকনো মৌসুমে পানি খুব কম থাকে। বর্ষা মৌসুমে প্রায় ১৪০ ফুট উঁচু পাহাড় থেকে বিপুল জলধারা কাপ্তাই লেকে আছড়ে পড়ে। এছাড়া শুভলং ঝর্ণা দেখতে যাওয়ার পথের সৌন্দর্য্য আপনাকে আবেগময় করে তুলতে পারে। দুই পাহাড়ের মধ্য দিয়ে বয়ে যাওয়া লেক দেখে থাইল্যান্ড বলে মনে হতে পারে!
শুভলং ঝর্ণার সৌন্দর্য্য পর্যটকদের বিমোহিত করে। পাহাড়ের উপর থেকে পাথুরে মাটিতে ঝর্ণাধারা আছড়ে পড়ার অপূর্ব দৃশ্য ভাষায় প্রকাশ করার মত নয়। অতিরিক্ত কাপড় সাথে থাকলে ঝর্ণার শীতল পানিতে স্নান করে শরীর জুড়িয়ে নিতে পারেন। শুভলং ঝর্ণার কাছেই প্রায় ২০০০ ফুট উঁচু ‘শুভলং পাহাড়’ বা ‘টি এন্ড টি পাহাড়’ রয়েছে। পাহাড় চূড়ায় রয়েছে সেনাক্যাম্প ও একটি টিঅ্যান্ডটি টাওয়ার। পাহাড়ে ওঠার জন্য রয়েছে চমৎকার সিঁড়ি। পাহাড়ের উপর থেকে দেখলে মনে হবে সমস্ত রাঙ্গামাটি জেলা কাপ্তাই লেকের পানির উপর ভেসে আছে।

চট্টগ্রাম শহরের অক্সিজেন মোড় থেকে রাঙ্গামাটিগামী বিভিন্ন পরিবহণের লোকাল ও গেইটলক/ডাইরেক্ট বাস পাওয়া যায়। ভাড়া একটু বেশি হলেও গেইটলক বা ডাইরেক্ট বাসে উঠা উচিত। চট্টগ্রাম হতে রাঙ্গামাটি ডাইরেক্ট বাস ১৫০ টাকার মধ্যে পেয়ে যাবেন।
রাঙামাটির রিজার্ভ বাজার থেকে শুভলং যাবার নৌকা সারাদিনের জন্য ভাড়া করুন। সারাদিনের জন্যে ভাড়া করলে শুভলং ঝর্ণা ছাড়াও অন্যান্য দর্শনীয় স্থান ঘুরে দেখতে পারবেন। এখানে সাধারণত নৌকার সাইজের উপর ভাড়া কম বেশি হয়ে থাকে। তবে মোটামুটি সাইজের একটা নৌকা ১০০০-১৫০০ টাকার মধ্যে ভাড়া করা যায়। ১০-১৫ জন যাওয়া যায় এক নৌকাতে। শুভলং ঝর্ণা পর্যন্ত যেতে দেড় থেকে দুই ঘন্টা সময় লাগে। লেকের মধ্যে দেখার মত আরো ৭-৮ টা জায়গা আছে। সময় থাকলে সবগুলো ঘুরে দেখে নিন। এছাড়া যদি ভ্রমণসঙ্গী এত জন না থাকে তাহলে রিজার্ভ বাজার থেকে জনপ্রতি প্যাকেজে ঘুরে আসতে পারবেন দর্শনীয় স্থানগুলো।

শুভলং এলাকায় থাকা ও খাওয়ার জন্য কোন ভাল ব্যবস্থা নেই। তাই আপনাকে দিনে গিয়ে দিনেই রাঙ্গামাটি ফিরে আসতে হবে। প্রয়োজনে হালকা খাবার সাথে নিয়ে ভ্রমণ করুন। বোট নিয়ে যদি পেডা টিং টিং এ যান তাহলে সেখানে খেতে পারবেন।
রাঙ্গামাটিতে বিভিন্ন মানের গেষ্ট হাউজ ও আবাসিক হোটেল রয়েছে। রাঙ্গামাটি শহরের পুরাতন বাস স্ট্যন্ড ও রিজার্ভ বাজার এলাকায় লেকের কাছাকাছি হোটেল ঠিক করার চেষ্টা করুন। তাহলে হোটেল থেকে কাপ্তাই লেকের পরিবেশ ও শান্ত বাতাস উপভোগ করতে পারবেন। এছাড়া কম খরচে থাকতে বোডিং এ যোগযোগ করতে পারেন। বোডিংগুলোতে থাকতে খরচ কম হলেও এগুলোর অবস্থা খুব একটা ভাল নয়।
এছাড়া রাঙ্গামাটি জেলায় আরো আকর্ষণীয় ও দর্শনীয় অনেক স্থান রয়েছে যেমন, ঝুলন্ত ব্রিজ, কাপ্তাই লেক, ইকো পার্ক, উপজাতীয় জাদুঘর, ঝুম রেস্তোরা, টুকটুক ইকো ভিলেজ, যমচুক, নির্বাণপুর বন ভাবনা কেন্দ্র, রাজবন বিহার, ঐতিহ্যবাহী চাকমা রাজবাড়ি, পেদা টিং টিং, উপজাতীয় টেক্সটাইল মার্কেট, নৌ-বাহিনীর পিকনিক স্পট, রাজস্থলী ঝুলন্ত সেতু, ফুরমোন পাহাড়, সাজেক ভ্যালি, আর্যপুর ধর্মোজ্জ্বল বনবিহার, ডলুছড়ি জেতবন বিহার, বেতবুনিয়া ভূ-উপগ্রহ কেন্দ্র, কাট্টলী বিল ও ন-কাবা ছড়া ঝর্না ইত্যাদি।

ভ্রমণের সময়ে সতর্কতা থাকতে যেমন, শুভলং ঝর্ণার পূর্ণ রূপ দেখতে হলে বর্ষাকাল বা তার পরের সময়ে যান। শীতকালে সাধারণত ঝর্ণায় খুব অল্প পানি থাকে। একসাথে দলগত ভাবে গেলে খরচ কমে যাবে। অফসিজনে ও ছুটির দিন ব্যাতিত গেলে খরচ কম হবে। ট্রলার/বোট রিজার্ভ করার সময় কি দেখবেন কোথায় যাবেন ভালো মত বলে নিন। রিজার্ভ করার সময় ঠিকমত দরদাম করে নিন। লেকের কাছাকাছি কোন হোটেল ঠিক করার চেষ্টা করুন। কোথাও কোথাও লেকের পানির গভীরতা অনেক, নামতে চাইলে মাঝিকে জিজ্ঞেস করে নিন। সাতার না জানলে সাথে লাইফ জ্যাকেট রাখুন। একদিনেই কমন স্পট গুলো ঘুরে বেড়ানো যায়। পরিবেশে ও জীববৈচিত্রের ক্ষতি হয় দয়া করে এমন কিছু করবেন না। স্থানীয় মানুষদের সাথে শালীন আচরণ করুন।

সাবস্ক্রাইব
Notify of
guest
0 মন্তব্য
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন