English

36 C
Dhaka
বৃহস্পতিবার, এপ্রিল ২৫, ২০২৪
- Advertisement -

বিশ্বে করোনা সংক্রমণ কমেতো নাই বরং ক্রমাগত বাড়ছে

- Advertisements -
Advertisements
Advertisements

বিশ্বব্যাপী মহামারী করোনাভাইরাসের আগ্রাসন এখনও প্রবল প্রতাপে চলছে।আট মাসের অধিক সময় ধরে চলমান এ আগ্রাসনের শেষ কবে হবে তা এখনো অজানা। প্রথম আক্রান্তের সাড়ে ৮ মাস পরে এসে আমরা যদি শুধু আগস্ট ২০২০ মাসের হিসেব করি অর্থাৎ ১ আগস্ট’২০ সকাল ১০টা থেকে ৩১ আগস্ট’২০ সকাল ১০টা পর্যন্ত বিশ্বখ্যাত জরিপ সংস্থা ওয়ার্ল্ডোমিটারের তথ্যানুযায়ী ৩০ দিনে বিশ্বে মোট আক্রান্ত হয়েছেন ৭৬ লাখ ২৭ হাজার ৩১০ জন বা গড়ে প্রতিদিন ২ লাখ ৫৪ হাজার ২৪৪ জন করে।যেখানে জুলাই মাসে গড়ে প্রতিদিন ২ লাখ ২৯ হাজার ৬৫০ জন করে আক্রান্ত হয়েছিলেন। তার মানে দাড়ালো বিশ্বে করোনা সংক্রমণ কমেতো নাই বরং ক্রমাগত বাড়ছে।
আগস্টের ৩০ দিনে মোট মৃত্যু ১ লাখ ৬৭ হাজার ৫৯৪ জনের যা প্রতিদিন গড়ে ৫ হাজার ৫৮৬ জন করে।যেখানে জুলাই’২০ মাসে গড়ে প্রতিদিন মৃত্যু ছিল ৫ হাজার ৪২৭ জন করে।অর্থাৎ জুলাই মাস থেকে আগস্ট মাসে বিশ্বব্যাপী করোনা আক্রান্ত এবং মৃত্যু দুটোই বেড়েছে। এর মানে হলো বিশ্বব্যাপী করোনার আগ্রাসন ও এর গতি প্রকৃতি বুঝে ওঠা এখনো অনেকটা তিমিরেই রয়ে গেছে।
তবে এই একমাসে করোনার থাবা কোন কোন দেশে বেড়েছে আশংকাজনকহারে।আবার কোন কোন দেশে কমেছেও।আগস্টের প্রথমদিন আক্রান্তের  ক্রমানুসারে প্রথম বিশটি দেশ আগস্টের শেষ দিনে এসে অনেকটা ওলট-পালট হয়ে গেছে। যেমন আগস্টের প্রথমদিনে প্রথম ২০টি দেশের অবস্থান ছিল যথাক্রমে যুক্তরাষ্ট্র, ব্রাজিল,ভারত, রাশিয়া, সাউথ আফ্রিকা, মেক্সিকো, পেরু, চিলি, স্পেন, ইরান, যুক্তরাজ্য, কলোম্বিয়া, পাকিস্তান, সৌদি আরব, ইতালী, বাংলাদেশ, তুরস্ক, জার্মানি, আর্জেন্টিনা ও ফ্রান্স  ইত্যাদি।
কিন্তু মাসের শেষে অর্থাৎ ৩১ আগস্ট এসে এচিত্রে বেশ রদবদল ঘটেছে।তালিকার সর্বোচ্চ ৪টি স্থানে যুক্তরাষ্ট্র, ব্রাজিল, ভারত ও রাশিয়া স্থির থাকলেও অন্যান্য অবস্থানে রদবদল হয়েছে। এরপর যথাক্রমে পেরু, সাউথ আফিকা, কলোম্বিয়া, মেক্সিকো, স্পেন, চিলি, আর্জেন্টিনা, ইরান, যুক্তরাজ্য, সৌদিআরব, বাংলাদেশ, পাকিস্তান, ফ্রান্স, তুরস্ক, ইতালী ও       জার্মানী।
এখানে উল্লেখযোগ্য যে, কলোম্বিয়ার অবস্থান আগস্টের ১ তারিখে ১২ নম্বরে ছিল।সেখানে সংক্রমণ দ্রুত বৃদ্ধি পাওয়ায় ৩১ আগস্টে দেশটি ৭ নম্বরে উঠে এসেছে। ৩০ দিনে এখানে মোট আক্রান্ত হয়েছেন ৩ লাখ ১২ হাজার ৪৩০  জন, যা প্রতিদিন গড়ে ১০ হাজার ৪১৪ জন করে। অপরদিকে শীর্ষ বিশে আর্জেন্টিনার অবস্থান জুলাইতে ছিল ১৯ নম্বরে। কিন্তু আক্রমণ এত দ্রুত বৃদ্ধি পেয়েছে যে,৩১ আগস্টের মধ্যে আর্জেন্টিনা উঠে এসেছে ১১তম স্থানে। ৩০ দিনে এখানে ২ লাখ ১৭ হাজার ১২৪ জন আক্রান্ত হয়েছেন বা গড়ে প্রতিদিন ৭ হাজার ২৩৭ জন করে।
এবার যদি একনজরে ৩০দিনে শীর্ষ ২০টি দেশের করোনা আক্রান্তের পরিসংখ্যানটা দেখি-
যুক্তরাষ্ট্রে ৩০ দিনে মোট আক্রান্ত হয়েছেন ১৪ লাখ ৬৭ হাজার ৩৪৭ জন বা গড়ে প্রতিদিন ৪৮ হাজার ৯১২ জন করে।
৩০ দিনে ব্রাজিলে আক্রান্ত হয়েছেন ১১ লাখ ৯৬ হাজার ১৩ জন বা প্রতিদিন গড়ে ৩৯ হাজার ৮৬৭ জন করে।
ভারতে ৩০ দিনে ১৯ লাখ ২২ হাজার ১১৫ জন বা গড়ে প্রতিদিন ৬৪ হাজার ৭১ জন করে আক্রান্ত হয়েছে।যেখানে জুলাই মাসে গড় আক্রান্ত ছিল ৩৫ হাজার ৪৫২ জন করে অর্থাৎ গত এক মাসে প্রায় দ্বিগুণ আক্রান্ত বেড়েছে ভারতে।
রাশিয়ায় ৩০ দিনে  আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ৫০ হাজার ৩৪৫  জন।যা প্রতিন গড়ে ৫ হাজার ১১ জন করে।
পেরুতে ৩০ দিনে  আক্রান্ত হয়েছেন ২ লাখ ৩৯ হাজার ৬৭১ জন বা গড়ে প্রতিদিন ৭ হাজার ৯৮৯ জন করে। জুলাই মাসে পেরুতে প্রতিদিন গড়ে ৪ হাজার ৭৬ জন করে আক্রান্ত হয়েছিল অর্থাৎ আগস্টে এখানে প্রায় দ্বিগুণ বেড়েছে আক্রান্তের সংখ্যা।
সাউথ আফ্রিকায় ৩০ দিনে  আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ৩১ হাজার ৮৭৩ জন বা গড়ে প্রতিদিন ৪ হাজার ৩৯৬ জন।
কলম্বিয়ায় ৩০ দিনে  আক্রান্ত হয়েছেন ৩ লাখ ১২ হাজার ৪৩০ জন বা গড়ে প্রতিদিন ১০ হাজার ৪১৪ জন করে।
মেক্সিকোতে ৩০ দিনে  আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ৭৫ হাজার ৫৩৩ জন বা গড়ে প্রতিদিন ৫ হাজার ৮৫১ জন করে।
স্পেনে ৩০ দিনে  আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ২০ হাজার ১৯ জন বা গড়ে প্রতিদিন ৪ হাজার জন করে।
চিলিতে ৩০ দিনে  আক্রান্ত হয়েছেন ৫৪ হাজার ৩০৭ জন বা গড়ে প্রতিদিন ১ হাজার ৮১০ জন করে।
আর্জেন্টিনায় ৩০ দিনে  আক্রান্ত হয়েছেন ২ লাখ ১৭ হাজার ১২৪ জন বা গড়ে প্রতিদিন ৭ হাজার ২৩৭ জন করে।
ইরানে ৩০ দিনে  আক্রান্ত হয়েছেন ৬৯ হাজার ৩৬৬ জন বা গড়ে প্রতিদিন ২ হাজার ৩১২ জন করে।
যুক্তরাজ্যে ৩০ দিনে  আক্রান্ত হয়েছেন ৩১ হাজার ২৮৬ জন বা গড়ে প্রতিদিন ১ হাজার ৪২ জন করে।
সৌদি আরবে ৩০ দিনে  আক্রান্ত হয়েছেন ৩৮ হাজার ৯১৬ জন বা গড়ে প্রতিদিন ১ হাজার ২৯৭ জন করে।
বাংলাদেশে ৩০ দিনে  আক্রান্ত হয়েছেন ৭৩ হাজার ১৬১ জন বা গড়ে প্রতিদিন ২ হাজার ৪৩৯ জন করে।
পাকিস্তানে ৩০ দিনে  আক্রান্ত হয়েছেন ১৭ হাজার ৩৩১ জন বা গড়ে প্রতিদিন ৫৭৭ জন করে।
ফ্রান্সে ৩০ দিনে  আক্রান্ত হয়েছেন ৯০ হাজার ২৪ জন বা গড়ে প্রতিদিন ৩০০০ জন করে।গত এক মাসে ফ্রান্সে আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ৩গুণ বেড়েছে।
তুরস্কে ৩০ দিনে  আক্রান্ত হয়েছেন ৩৭ হাজার ৬৭৩ জন বা গড়ে প্রতিদিন ১ হাজার ২৫৬ জন করে।
ইতালীতে ৩০ দিনে  আক্রান্ত হয়েছেন ২০ হাজার ৬৮১ জন বা গড়ে প্রতিদিন ৬৮৯ জন করে।গত এক মাসে ইতালীতে আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ৩গুণ বেড়েছে।
জার্মানিতে ৩০ দিনে  আক্রান্ত হয়েছেন ৩২ হাজার ৬৩০ জন বা গড়ে প্রতিদিন ১ হাজার ৮৮ জন করে।গত এক মাসে জার্মানিতে আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ৩গুণ বেড়েছে।
 
শেষ কথা হল,কোনো দেশই আগাম এমনটা বলতে পারে না মহামারি করোনা ভাইরাসের প্রকোপ শেষ হয়ে গেছে। বাস্তবতা হলো, ভাইরাসটি সহজেই সংক্রমণ ছড়াচ্ছে। ফলে এর বিস্তার নিয়ন্ত্রণে না এনেই যদি সবকিছু সচল করে স্বাভাবিক করা হয় তাহলে তা হবে ভয়াবহ একটি বিপর্যয়।এমনটিই জানালেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মহাপরিচালক টেদ্রোস আধানম গেব্রেয়াসুস। এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, করোনার সংক্রমণ রোধে বিধিনিষেধগুলো জারি রাখতে হবে।
ভাইরাসটির সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে না এনেই পুনরায় সব সচল করা হলে তা বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে বলে সতর্ক করে তিনি বলেন, ভাইরাসটির প্রকোপ শুরুর পর আট মাস ধরে বিধিনিষেধ মেনে চলতে চলতে অনেকে ক্লান্ত এবং তারা যে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরতে চাইছে এটা আমরাও বুঝতে পারছি। টেদ্রোস আধানম মানুষের অনীহার কথা স্বীকার করে বলেন, ‘আমরাও তো চাই শিশুরা ক্লাসে ফিরে যাক। মানুষ আবার ফিরে যাক তার কর্মস্থলে। কিন্তু আমরা দেখতে চাই এই ফিরে যাওয়াটা যেন হয় নিরাপদ ও সুরক্ষিত।’
লেখকঃ সাংবাদিক,সমাজকর্মী।
email: smazadh@yahoo.com

সাবস্ক্রাইব
Notify of
guest
0 মন্তব্য
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন