করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট অর্থনৈতিক মন্দা বাংলাদেশেও বিরূপ প্রভাব ফেলেছে। আবার বিরূপ পরিস্থিতিতেও আশার আলো দেখিয়েছে রেমিট্যান্স প্রবাহ। বিশ্বব্যাংক জানিয়েছে, ২০২০ সালে বাংলাদেশে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে এবং এ বছর রেমিট্যান্স প্রবাহে বাংলাদেশ অষ্টম অবস্থানে থাকবে। চলতি নভেম্বর মাসের ১৫ দিনেই প্রায় ১২২ কোটি ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের সাড়ে চার মাসেই ১০ বিলিয়ন ডলারের বেশি রেমিট্যান্স দেশে এসেছে। বিশ্বব্যাংক বলছে, ২০২০ সালে ৮ শতাংশ বেড়ে বাংলাদেশে ২০ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স আসতে পারে। এই প্রবাসী আয়ের বেশির ভাগই আসে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো থেকে। এসব দেশে যাঁরা শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন তাঁদের বেশির ভাগই অদক্ষ বা আধাদক্ষ।
বিরূপ বিশ্ব পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ জনশক্তি রপ্তানিতে বড় ধরনের বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে। পুরনো শ্রমবাজার বন্ধ হচ্ছে। নতুন শ্রমবাজারে দেখা যাচ্ছে না আশার আলো। বাংলাদেশের জনশক্তি রপ্তানির সবচেয়ে বড় বাজার মধ্যপ্রাচ্য ক্রমেই গুটিয়ে আসছে। বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান শ্রমবাজার মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ওমানে এক লাখের বেশি বাংলাদেশি কর্মী কাজ করছেন। এর মধ্যে অন্তত ৫০ হাজার কর্মী অবৈধ। তাঁদের বেশির ভাগেরই পাসপোর্ট ও ভিসার মেয়াদ শেষ হয়েছে। কারো শেষ হয়েছে কাজের অনুমতি।
কাজের চুক্তি শেষে নতুন চুক্তি নবায়ন না হওয়ায় অবৈধ হয়ে দেশে ফেরার অপেক্ষায় রয়েছেন অনেকে। আবার বিভিন্ন অপরাধ করে কেউ কেউ দীর্ঘদিন ধরে ওই দেশের জেলে ছিলেন। কালের কণ্ঠে গতকাল প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, ওমান সরকারের ঘোষিত সাধারণ ক্ষমার আওতায় সেখানে অবৈধভাবে থাকা অন্তত ৫০ হাজার বাংলাদেশি কর্মী দেশে ফেরার অপেক্ষায় রয়েছেন। আশার কথা, করোনার কারণে কাজ হারিয়ে কিংবা ছুটিতে দেশে ফিরে আসা ওমানের বৈধ ভিসাধারী কর্মীরা সুনির্দিষ্ট কয়েকটি শর্ত মেনে সে দেশে তাঁদের কর্মস্থলে ফিরে যাওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন।
আমাদের এখন নতুন শ্রমবাজার খুঁজে বের করতে হবে। মনোযোগ দিতে হবে দক্ষ শ্রমশক্তি রপ্তানিতে। শ্রমশক্তি হিসেবে বিদেশ গমনেচ্ছুদের বিদেশি ভাষায় পারদর্শী করে তোলা প্রয়োজন। এ ক্ষেত্রে সঠিক প্রশিক্ষণের কোনো বিকল্প নেই। বর্তমান বিশ্ববাস্তবতায় শিক্ষিত ও দক্ষতাসম্পন্নদের কদর বাড়ছে। সব কর্মক্ষেত্র সবার জন্য উন্মুক্ত না হলেও দক্ষ জনশক্তি নিজ নিজ ক্ষেত্রে কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করে নিতে পারে। বিকাশমান বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে জনশক্তি গড়ে তুলতে হবে। আমরা আশা করব, আমাদের কূটনৈতিক মিশন ও সংশ্লিষ্ট সবার সহযোগিতায় জনশক্তি রপ্তানিতে নতুন করে জোয়ার আসবে।
The short URL of the present article is: https://www.nirapadnews.com/a83m
সাবস্ক্রাইব
নিরাপদ নিউজ আইডি দিয়ে লগইন করুন
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন