English

34 C
Dhaka
শনিবার, এপ্রিল ২০, ২০২৪
- Advertisement -

‘দেশের ৭৫ শতাংশ মানুষ করোনার টিকা নিতে আগ্রহী’

- Advertisements -

দেশের প্রায় ৭৫ শতাংশ নাগরিক বিনা মূল্যে করোনার টিকা (কভিড ভ্যাকসিন) নিতে চান। নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (এনএসইউ) গ্লোবাল হেলথ ইনস্টিটিউটের নেতৃত্বে এক গবেষণা জরিপে এ তথ্য উঠে এসেছে। বাংলাদেশের ১৮ বছরের বেশি বয়সী নাগরিকদের মধ্যে এ জরিপ চালানো হয়।

এ গবেষণায় সহকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে যুক্ত ছিল সেন্টার ফর ইনজুরি প্রিভেনশনস অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টার (সিআইপিআরবি), রংপুর হাইপারটেনশন রিসার্চ সেন্টার (এইচআরসি-রংপুর) এবং ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশ (ইউল্যাব)।

জানা গেছে, গত বছরের ১২ ডিসেম্বর থেকে গত ৭ জানুয়ারি পর্যন্ত মোট তিন হাজার ৬৪৭ জন নাগরিক এ জরিপে অংশ নেন। অংশগ্রহণের হার ছিল ৮০ শতাংশ। দেশের আটটি জেলার বিভিন্ন শহর, গ্রাম এবং বস্তি থেকে ‘র‌্যান্ডম’ গবেষণা পদ্ধতির মাধ্যমে এ অংশগ্রহণকারীদের বাছাই করা হয়। মুখোমুখি সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে অংশগ্রহণকারীদের আর্থ-সামাজিক অবস্থা ও ভ্যাকসিন সম্পর্কিত ভাবনা বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করা হয়।

গবেষকদলটি জানায়, অংশগ্রহণকারীদের তিনটি ভাগে ভাগ করা হয়েছিল। প্রথম ভাগে ছিলেন যাঁরা ভ্যাকসিন নিতে আগ্রহী, দ্বিতীয় ভাগে ছিলেন যাঁরা ভ্যাকসিন নেওয়ার বিষয়ে দ্বিধাগ্রস্ত বা নিশ্চিত নন আর তৃতীয় ভাগে ছিলেন যাঁরা ভ্যাকসিন নিতে ইচ্ছুক নন। ভ্যাকসিনের গ্রহণযোগ্যতা পরিমাপ করা হয়েছে, যাঁরা এই গবেষণায় ভ্যাকসিন নিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন, যা মোট নমুনার ৭৪.৬ শতাংশ।

গবেষণায় অংশগ্রহণকারী ৭৪.৬ শতাংশ নাগরিক জানিয়েছেন তাঁরা একটি কার্যকর, নিরাপদ ভ্যাকসিন চিকিৎসক দ্বারা সুপারিশিত হলে বিনা মূল্যে নিতে আগ্রহী হবেন। ৭.৮ শতাংশ নাগরিক ভ্যাকসিন নিতে একেবারেই ইচ্ছুক নন। অন্য ১৭.৬ শতাংশ অংশগ্রহণকারী ভ্যাকসিন গ্রহণ করা বা না করার ব্যাপারে দ্বিধাগ্রস্ত ছিলেন।

গবেষণায় দেখা যায়, দিনমজুরদের মধ্যে ভ্যাকসিন গ্রহণযোগ্যতা অন্য পেশাজীবীদের তুলনায় উল্লেখযোগ্যহারে কম। রিকশাচালক, ফেরিওয়ালা, ঠেলাগাড়ি চালকদেরও দিনমজুর হিসেবে এ গবেষণায় বিবেচনা করা হয়েছে। অর্ধেকেরও কম (৪৬.৮ শতাংশ) দিনমজুর ভ্যাকসিন গ্রহণের ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন।

অন্য পেশাজীবীদের মধ্যে ভ্যাকসিনের গ্রহণযোগ্যতার হার পাওয়া গেছে ৬২.৮৩ শতাংশ। মাসিক বেতনধারী অফিসকর্মীদের মধ্যে ভ্যাকসিন গ্রহণযোগ্যতার হার ছিল সর্বোচ্চ। চিকিৎসক ও নার্সদের ভেতরও ভ্যাকসিনের উচ্চ গ্রহণযোগ্যতার হার পাওয়া গেছে। এ শ্রেণির ৮১ শতাংশই ভ্যাকসিন নেওয়ার ব্যাপারে ইচ্ছা প্রকাশ করেছে। বিভিন্ন পেশাজীবীদের মধ্যে ভ্যাকসিন গ্রহণযোগ্যতার হার থেকে দেখা যায়, বিনা মূল্যে প্রদান করা হলেও নিম্ন আয়ের পেশাজীবীরা ভ্যাকসিন গ্রহণের ব্যাপারে উদাসীন।

এ গবেষণায় আরো উঠে এসেছে শহরে বসবাসকারী নাগরিকরা গ্রামবাসীর তুলনায় ভ্যাকসিন গ্রহণে বেশি আগ্রহী। গ্রামবাসীর ভেতর ভ্যাকসিন অনিচ্ছা ও দ্বিধাগ্রস্ততা উভয়ই উল্লেখযোগ্য হারে বেশি পাওয়া গেছে। গ্রামে বসবাসকারীদের ৬৪ শতাংশ ভ্যাকসিন নিতে তাদের ইচ্ছার কথা জানিয়েছে। অন্যদিকে শহরের বাসিন্দাদের মধ্যে এ হার ৮১ শতাংশ। গবেষণায় আরো দেখা গেছে, মাত্র ৫৩ শতাংশ বস্তিবাসী ভ্যাকসিন নিতে আগ্রহী, যা বিভিন্ন ভৌগোলিক অবস্থানের নাগরিকদের মধ্যে সর্বনিম্ন।

বিভিন্ন বয়সের নাগরিকদের মধ্যে ভ্যাকসিনের গ্রহণযোগ্যতার হার তুলনা করে দেখা গেছে, বৃদ্ধদের (৬০-এর অধিক বয়স) মধ্যে অন্যান্য বয়সের তুলনায় ভ্যাকসিন গ্রহণযোগ্যতার হার কম (৬১ শতাংশ)। ১৮ থেকে ৫০ বছরের অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ভ্যাকসিন গ্রহণযোগ্যতার হার প্রায় একই রকম পাওয়া গেছে, যা ৩০ বছরের নিচের অংশগ্রহণকারীদের মাঝে ছিল ৭৪ শতাংশ এবং ৩১-৪০ ও ৪১-৫০ বয়স্কদের মধ্যে ছিল যথাক্রমে ৭৩ শতাংশ ও ৭৮ শতাংশ। ৫১-৬০ বছরের অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ভ্যাকসিন গ্রহণযোগ্যতার হার ৬৮ শতাংশ, যা বিভিন্ন বয়স বিভাগের মাঝে দ্বিতীয় সর্বনিম্ন। এ ফলাফলের ভিত্তিতে বলা যায়, বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশের জনগণের মধ্যে ভ্যাকসিনের গ্রহণযোগ্যতার হার নিম্নমুখী।

গবেষকরা জানিয়েছেন, লিঙ্গ বিবেচনায় ভ্যাকসিন গ্রহণযোগ্যতায় উল্লেখযোগ্য তারতম্য পাওয়া যায়নি।

সাবস্ক্রাইব
Notify of
guest
0 মন্তব্য
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন