বগুড়ার আলোচিত কলেজ ছাত্রী ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামি ও বগুড়া শহর শ্রমিক লীগের বহিষ্কৃত আহ্বায়ক তুফান সরকারের জামিন বাতিল করেছেন আদালত।
রোববার (৭ মার্চ) বগুড়ার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক এ কে এম ফজলুল হক এই আদেশ দেন। পাশাপাশি তার সহযোগী আতিকুর রহমানের জামিনও বাতিল করে আদালত।
আদালত ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, পূর্ব পরিচয়ের সূত্র ধরে ২০১৭ সালের ১৯ জুলাই বাসায় ডেকে এনে ওই ছাত্রীকে ধর্ষণ করেন তুফান সরকার। ঘটনার জেরে ২৮ জুলাই তুফানের স্ত্রী তাছমিন রহমান ও তার বড় বোন সাবেক পৌর কাউন্সিলর মার্জিয়া হাসান মা-মেয়েকে নির্যাতনের পর মাথার চুল কেটে ন্যাড়া করে দেন। ওই বছরের ২৯ জুলাই মেয়েটির মা বাদী হয়ে বগুড়া সদর থানায় ধর্ষণের ঘটনায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে তুফান সরকারসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন। এ ছাড়া নির্যাতন ও মাথার চুল ন্যাড়া করে দেওয়ার ঘটনায় তুফান সরকারসহ ১০ আসামির বিরুদ্ধে আলাদা ধারায় আরেকটি মামলা করা হয়।
রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি নরেশ মুখার্জি বলেন, ‘মা-মেয়েকে নির্যাতনের ঘটনায় বিচারাধীন দুটি মামলার মধ্যে রোববার (৭ মার্চ) ধর্ষণ মামলার শুনানির তারিখ ধার্য ছিল। এদিন মামলার আসামিদের আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন আদালত। কিন্তু তুফান সরকার দুদকের একটি মামলায় বর্তমানে বগুড়া জেলা কারাগারে। আদালতে তুফান সরকারকে হাজির করতে ব্যর্থ হওয়ায় জামিন আদেশ বাতিল করেন বিচারক।’
এ ছাড়া তুফানের সহযোগী আতিকুর রহমান ওরফে আতিক আদালতে অনুপস্থিত থাকায় তার জামিনও বাতিল করা হয়। এর আগে গত ১৭ জানুয়ারি একই আদালত তুফান সরকারের জামিন আবেদন মঞ্জুর করেছিলেন।
নরেশ মুখার্জি আরও বলেন, ‘বাদী ও ভুক্তভোগী মামলার অন্যতম সাক্ষী। মামলার গুরুত্বপূর্ণ এই দুই সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয়েছে। তারা দুজনই উল্টো সাক্ষী দিয়েছেন। আগামী ১ এপ্রিল মামলার পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য রয়েছে। মা-মেয়েকে নির্যাতন ও চুল কেটে দেওয়ার আরেকটি মামলা চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে বিচার কার্যক্রম চলছে।
আদালত সূত্র জানায়, গত বছরের ৫ ফেব্রুয়ারি আলোচিত এই মামলার প্রধান আসামি তুফান সরকারসহ ১০ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের আদেশ দেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক এ কে এম ফজলুল হক। এই আদেশ পুনর্বিবেচনার জন্য আসামিপক্ষ আবেদন করলে ২৭ ফেব্রুয়ারি সেই আদেশ খারিজ করে আদালত ১০ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের আদেশ বহাল রাখেন।