English

24 C
Dhaka
শুক্রবার, মার্চ ২৯, ২০২৪
- Advertisement -

ইতিহাস গড়ল বাংলাদেশ

- Advertisements -

৬ বছর আগেই ভারত, পাকিস্তান, দক্ষিণ আফ্রিকার মতো শক্তিধর দেশের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে জয় এসেছে। এই তালিকায় আছে নিউজিল্যান্ড, আফগানিস্তান। এছাড়া জিম্বাবুয়ে, কেনিয়া, উইন্ডিজের বিপক্ষে তো একাধিকবার সিরিজ জয়ের ইতিহাস আছে। কিন্তু দক্ষিণ এশিয়ার একমাত্র দেশ হিসেবে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে কখনই টাইগারদের ওয়ানডে সিরিজ জেতা হয়নি। সেই অধরা সিরিজ জয় আজ ধরা দিল মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে। সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডে ডাকওয়ার্থ-লুইস মেথডে ১০৩ রানের বিশাল জয়ে ইতিহাস গড়ল টিম টাইগার। মুশফিকুর রহিমের নায়কোচিত ইনিংস, মাহমুদউল্লাহর দায়িত্বশীল ব্যাটিং, মিরাজের ঘূর্ণি আর মুস্তাফিজের কাটারে এলো এই ঐতিহাসিক জয়।

মিরপুর শেরে বাংলায় রান তাড়ায় নেমে শুরুতেই বিপদে পড়ে শ্রীলঙ্কা। দলীয় ২৪ রানে অভিষিক্ত শরীফুলের বলে তামিম ইকবালের দারুণ ক্যাচে পরিণত হন অধিনায়ক কুশল পেরেরা (১১)। এদিকে ব্যাটিং করার সময় মাথায় চোট পেয়ে এই ম্যাচে আর খেলা হচ্ছে না সাইফউদ্দিনের। তার ‘কনকাশন সাব’ হিসেবে বল করছেন তাসকিন। দলীয় ৫৩ রানে অপর ওপেনার দানুশকা গুনাথিলকাকে (২৪) সাকিব আল হাসানের তালুবন্দি করেন মুস্তাফিজুর রহমান। স্কোরবোর্ডে ১৮ রান যোগ হতেই মঞ্চে আসেন সাকিব। তুলে নেন পাথুম নিশাঙ্কাকে (২০)। মিড উইকেটে ক্যাচ নেন তামিম ইকবাল।

সবাই যখন উইকেট নিচ্ছেন, তখন মেহেদি মিরাজ বসে থাকবেন কেন? গত ম্যাচে চার উইকেট নেওয়া এই অল-রাউন্ডার আজ কুশল মেন্ডিসকে (৪) ফিরিয়ে প্রথম শিকার ধরেন। কুশলকে লেগ বিফোর উইকেট ঘোষণা করেন আম্পায়ার। রিভিউ নিয়েও বাঁচতে পারেননি কুশল। এরপর আবার সাকিব। তার বলে এলবিডাব্লিউ হয়ে যান ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা (১০)। এরই সঙ্গে ৮৯ রানে লঙ্কান ইনিংসের অর্ধেক শেষ হয়। মিরাজের দ্বিতীয় শিকার দাসুন শানাকা (১১)। মিডউইকেটে তার ক্যাচ নেন মাহমুদউল্লাহ। ৬ষ্ঠ উইকেট পতনে লঙ্কানদের পরাজয় নিশ্চিত হয়ে যায়।

সময়ের সঙ্গে বল হাতে ভয়ংকর হয়ে ওঠেন মিরাজ। তার তৃতীয় শিকারে পরিণত হন প্রথম ওয়ানডেতে অসাধারণ লড়াই করা হাসরাঙ্গা ডি সিলভা (৬)। এই অল-রাউন্ডারকে তিনি বোল্ড করে দেন। এরপর মঞ্চে আবার দ্য ফিজ। তার বলে মাহমুদউল্লাহর তালুবন্দি হন বান্দারা (১৫)। মুস্তাফিজের তৃতীয় শিকার লক্ষণ সান্দাকান (৪)। ৯ উইকেট পতনের পর লঙ্কানদের দলীয় ১২৬ রানে বৃষ্টিতে ফের বন্ধ হয় খেলা। এতে আরও কপাল পোড়ে লঙ্কানদের। ১০ ওভার কর্তন করা হয়। বাকি ১১৯ রান করার জন্য লঙ্কানদের হাতে ছিল মাত্র ২ ওভার আর ১ উইকেট! ৩৯তম ওভারের পঞ্চম বলেই ম্যাচ শেষ হতে পারত। যদি মোসাদ্দেকের বলে শর্ট মিডউইকেটে তামিম ইকবাল চামিরার কঠিন ক্যাচটা নিতে পারতেন। শরীফুলের করা শেষ ওভারে (৪০তম) ৯ উইকেটে ১৪১ রানে প্যাকেট হয় লঙ্কানরা। ৩টি করে উইকেট নেন মিরাজ-মুস্তাফিজ। সাকিব নেন ২টি। আর শরিফুল ১টি। বাংলাদেশ জয় পায় ১০৩ রানের বড় ব্যবধানে।

এর আগে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে ৪৮.১ ওভারে ২৪৬ রানে অল-আউট হয় বাংলাদেশ। ব্যাটিংয়ে নেমে যথারীতি বিপর্যয়ের শুরু। তামিম আজ বড় রান করতে পারেননি। ৬ বলে ৩ চারে ১৩ রানে আউট হন। দলীয় ১৫ রানে প্রথম উইকেটের পতন ঘটে। সাকিব আজও ব্যর্থ। চামিরার বলে বোল্ড হওয়ার আগে তিন বল খেলে ‘ডাক’ মারেন। লিটন দাসের ব্যাটিং দেখে মনে হচ্ছিল টেস্ট খেলছেন। ৪২ বলে ২৫ রান করে সান্দাকানের শিকার হন। তার ইনিংসে দুটি চার ছিল।

তুমুল সমালোচিত মোহাম্মদ মিঠুনের জায়গায় সুযোগ পাওয়া অল-রাউন্ডার মোসাদ্দেক হোসেন ১২ বলে ১০ করে সান্দাকানের শিকার হলে ৭৪ রানে ৪ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। এরপর যথারীতি দলের সম্মান রক্ষার ভার নেন মুশফিকুর রহিম আর মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। তাদের পঞ্চম উইকেট জুটিতে এসেছে ৮৭ রান। ৭০ বলে ক্যারিয়ারের ৪১তম ফিফটি পূরণ করেন মুশফিক। মাহমুদউল্লাহও সেই পথে হাঁটছিলেন, কিন্তু দুর্ভাগ্য। ৫৮ বলে ১ চার ২ ছক্কায় ৪১ রান করে তিনি লক্ষণ সান্দাকানের শিকার হন।

উইকেটে এসেই হাত খুলে মারতে থাকেন আফিফ হোসেন ধ্রুব। দুটি চার মারার পর তাকে ১০ রানেই থামিয়ে দেন ইসুরু উদানা। গত ম্যাচের বল হাতে নায়ক মেহেদি মিরাজ আজ হাসরাঙ্গার বলে ০ রানে ফিরেন। ২৩ রানের মধ্যে ৩ উইকেট হারিয়ে নতুন বিপর্যয়ে পড়ে বাংলাদেশ। উইকেটে আসেন সাইফউদ্দিন। এমন সময় বৃষ্টিতে খেলা বন্ধ হয়ে যায়। ২০ মিনিট পরে আবার খেলা শুরু হয়। হাত খুলে খেলতে থাকেন মুশফিক। তিন অংক ছুঁতে যখন তার মাত্র ৪ রান দরকার, তখন ফের বৃষ্টি নেমে আসে। কিছুক্ষণ পর আবারও শুরু হয় খেলা। তখনো ঝিরি ঝিরি বৃষ্টি পড়ছিল। এর মাঝেই দুষ্মন্ত্য চামিরাকে বাউন্ডারি মেরে ১১৪ বলে ক্যারিয়ারের ৮ নম্বর সেঞ্চুরি তুলে নেন মি. ডিপেন্ডেবল।

সাইফউদ্দিন বেশিক্ষণ সময় দিতে পারেননি মুশফিককে। ৩০ বলে ১১ রান করে তিনি মেন্ডিসের সরাসরি থ্রোতে রানআউট হয়ে যান। ৪৭তম ওভারে দলীয় ২৩২ রানে পতন হয় ৮ম উইকেটের। অভিষিক্ত শরিফুল ইসলাম ‘ডাক’ মারেন। শেষ উইকেট হিসেবে মুশফিক চামিরার বলে আউট হয়ে যান। ৪৮.১ ওভারে ২৪৬ রানে প্যাকেট হয় বাংলাদেশ। মুশফিক ১২৭ বলে ১০ চারে ১২৫ রান করেন। ৪৪ রানে ৩ উইকেট নেন চামিরা। সান্দাকান নেন ৫৪ রানে ৩ উইকেট। হাসরাঙ্গা ১টি আর ইসুরু উদানা নেন ২টি।

সাবস্ক্রাইব
Notify of
guest
0 মন্তব্য
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন