English

33 C
Dhaka
বৃহস্পতিবার, এপ্রিল ২৫, ২০২৪
- Advertisement -

বরগুনায় তীব্র জোয়ার: মায়ের কোল থেকে পড়ে তলিয়ে গেল শিশু!

- Advertisements -

ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে বরগুনায় জোয়ারের উচ্চতা ছিল সিডরের মতোই প্রবল। ভরা পূর্ণিমার এ জোয়ারের তীব্রতায় এর মধ্যেই ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে জেলার প্রায় অর্ধশতাধিক স্থানের নাজুক বেড়িবাঁধ। জেলার তিনটি উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের বেড়িবাঁধ ভেঙে তলিয়ে গেছে অর্ধশতাধিক গ্রাম। তলিয়ে গেছে শতশত ঘরবাড়ি, মাছের ঘের ফসলের ক্ষেত।

এবারে বাতাসের তীব্রতা কম থাকায় ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হওয়ার কোনো ঘটনা না ঘটলেও আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার সময় জোয়ারের প্রবল তোড়ে এনামুল নামের তিন বছরের একটি শিশু মায়ের কোল থেকে পানিতে তলিয়ে গেলে তার মৃত্যু হয়। এঘটনার কিছুক্ষণ পরেই তার মৃতদেহ উদ্ধার করে স্থানীয়রা। বুধবার সকাল ১১টার দিকে বরগুনার বেতাগী উপজেলার সরিষামুড়ি ইউনিয়নে এঘটনা ঘটে।

Advertisements

উপকূলীয় উন্নয়ন সংগঠন সিডিডিপির নির্বাহী পরিচালক জাকির হোসেন মিরাজ জানান, দুর্যোগ মৌসুমের শুরুতেই জোয়ারের এই উচ্চতা নিয়ে এখন আতঙ্কে রয়েছে নদীতীরবর্তী ঝুঁকিপূর্ণ গ্রামাঞ্চলের হাজার হাজার মানুষ। তিনি আরো বলেন, এর মধ্যেই গত দুদিনের জোয়ারের পানিতে কয়েক হাজার পরিবারের রান্নাঘর ও প্রয়োজনীয় আসবাবপত্রসহ গৃহস্থালীর অতি জরুরি তৈজসপত্র পানিতে ভিজে নষ্ট হয়ে গেছে। এতে অনেক পরিবারেই এখন রান্না চলছে না। চরম ভোন্তিতে এখন নারী ও শিশুসহ সহস্র মানুষ।

উন্নয়ন সংগঠন জাগো নারীর প্রধান নির্বাহী হোসনে আরা হাসি জানান, ২০০৭ সালের প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড় সিডরের সময়েও যেসব এলাকায় জোয়ারের পানি ওঠেনি এবারে ইয়াসের প্রভাবে অতিজোয়ারের কারণে সেসব এলাকায়ও পানি ঢুকে পড়েছে। এতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে নারী ও শিশুসহ হাজার হাজার মানুষ।

বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, ভরা পূর্ণিমার পাশাপাশি ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে বরগুনার প্রধান তিনটি নদী বিষখালী, পায়রা ও বলেশ্বর নদীতে বিপদ সীমার এক শ ২৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে জোয়ারের পানি প্রবাহিত হয়েছে।

স্থানীয় এলাকাবাসী ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরের নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, জেলার ছয়টি উপজেলায় ২২টি পোল্ডারে মোট ৮০৫ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ রয়েছে। যার মধ্যে ৫০০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধই প্রয়োজনের তুলনায় নিচু। এছাড়া নদী ও সাগরতীরবর্তী বিভিন্ন এলাকার ৩০ থেকে ৪০টি স্থানের বেড়িবাঁধ আগে থেকেই চরম নাজুক অবস্থায় ছিল। এবারের জোয়ারের তীব্রতায় সেসব বেড়িবাঁধ ভেঙে তলিয়ে যায় গ্রামের পর গ্রাম।

Advertisements

বরগুনার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী কায়সার আলম জানান, ঘূর্ণিঝড়ের কারণে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসে ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ মেরামতের জন্য একটি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। এ ছাড়া ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধ দ্রুত মেরামতের বিষয়ে ইতোমধ্যেই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। দ্রুতই এবিষয়ে জরুরি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

বরগুনার জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান জানান, সরাসরি ইয়াসের প্রভাবে না হলেও অতিজোয়ারের সময় মাছ ধরতে গিয়ে বরগুনার বামনা উপজেলায় একজন এবং বেতাগী উপজেলায় আরেক শিশু মোট দুজনের মৃত্যু হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, অতিজোয়ারের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত অতি দরিদ্র পরিবারে খাদ্য সহায়তা পৌঁছে দিতে ইতিমধ্যেই জেলার ৪২টি ইউনিয়ন ও চারটি পৌরসভার প্রতিটিতে তাৎক্ষণিকভাবে ২৫ হাজার টাকা করে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া আরো ৫৫ মেট্রিক টন চালও বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। আধুনিক ও টেকসই বেড়িবাঁধের বিষয়ে জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান বলেন, এর মধেই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিস্তারিত জানানো হয়েছে।

সাবস্ক্রাইব
Notify of
guest
0 মন্তব্য
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন