English

38 C
Dhaka
শুক্রবার, এপ্রিল ২৬, ২০২৪
- Advertisement -

চট্টগ্রামের পাহাড় বাঁচাতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ দাবি

- Advertisements -

পাহাড় রক্ষার দাবিতে এক নাগরিক সমাবেশ থেকে চট্টগ্রামের পাহাড় রক্ষায় প্রধানমন্ত্রীর দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়েছে। চট্টগ্রামের পাহাড় ও নদী রক্ষায় একমাত্র প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কার্যকর ভূমিকা রাখবে বলে সমাবেশে বক্তারা দাবি করেন।

পরিবেশবাদী সংগঠন ‘পিপলস ভয়েস’ ও বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ (বিএনপিএস) এর যৌথ উদ্যোগে ২০০৭ এবং ২০১৭ সালে চট্টগ্রাম ও রাঙামাটিতে ভয়াবহ পাহাড় ধ্বসে নিহতদের স্মরণে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন ও নাগরিক সমাবেশ থেকে এ দাবি জানানো হয়।

Advertisements

২০০৭ সালের ১১ জুন পাহাড় ধ্বসে চট্টগ্রামে ১২৭ জন নিহত হওয়ার পর থেকে প্রতিবছর এই দিনটিকে ‘পাহাড় রক্ষা দিবস’ ঘোষণার দাবিতে কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে।

সমাবেশে ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউট চট্টগ্রামের সাবেক সভাপতি প্রকৌশলী দেলোয়ার মজুমদার বলেন, পাহাড় রক্ষার জন্য ২০০৭ সালের পর একটি কমিটি করা হয়। ১৪ বছরে ২১টি সভা করেছে তারা। পর্বতসম কমিটি মিটিং করার পর মুষিক প্রসব করে। তারা ঝূঁকিপূর্ণ বসবাসকারীদের সরে যেতে মাইকিং করে। এরা তো এমনি পাহাড়ের পাদদেশে যায়নি। কেউ না কেউ এসব বসতি তৈরি করে। অসহায় মানুষদের টার্গেট করে। তারা বাধ্য হয়ে সেখানে যায়। আর যখন বৃষ্টি হয় তখন তাকে উচ্ছেদ করতে যায় প্রশাসন। যে ঘরে শিশু আছে তরুণী আছে অসুস্থ একজন আছে তারা কোন ভরসায় বাসস্থান ছেড়ে আশ্রয়কেন্দ্রে যাবে? যারা এসব বাসস্থান তৈরি করে তারা কী একেবারেই ধরাছোঁয়ার বাইরে? ব্যক্তি মালিকানার পাহাড়ের দায় ব্যক্তির। কিন্তু সরকারি প্রতিষ্ঠানের পাহাড়ের দখলের দায় তো তাদের। শ্রমজীবী মানুষদের কি স্বল্প ভাড়ায় সেফটি নেটের মাধ্যমে নিরাপদ আবাসন দিতে পারি না? বায়েজিদ লিংক রোডে ৯০ ডিগ্রি এঙ্গেলে বালির পাহাড় কিভাবে কাটলেন? এই হলো আমাদের আমলারা। তারা মানুষের পক্ষের আচরণ করে না। প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন ১১ জুনকে পাহাড় রক্ষা দিবস ঘোষণা করুন।

অধ্যাপক মো ইদ্রিস আলী বলেন, পাহাড় ধ্বসে নিহতদের স্মরণ করি গভীর সমবেদনার সাথে। আজো আমরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সাম্যের সমাজ প্রতিষ্ঠায় প্রতিবন্ধকতাগুলো অতিক্রম করতে পারিনি। পাহাড় অপরাজনীতি, অপেশাদার আমলাগিরির শিকার। ধ্বসের পর গঠিত কমিটি ২১ তম সভা করেছে। তাদের নির্লিপ্ততায় কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। ২০০৭ সালে ১৩টি স্থানে আর ২০১৭ সালে অনেক স্থানে ধ্বস হয়। প্রকৃতি সতর্ক করতে চাইলেও আমরা তা হই না। এখানে পাহাড় শেষ করে বিন্না ঘাস লাগানো হয়। রক্ষাকারীরা ১৮টা পাহাড় কেটে নির্বাক থাকেন। তারা এই পরিবেশের অংশ না। আমরা পরিবেশের অংশীদার। আমলার মামলা দিয়ে নদী রক্ষা পাহাড় রক্ষা হবে না। প্রধানমন্ত্রী ঢাকা থেকে আপনাকে চট্টগ্রামের পাহাড় নদী দেখতে হবে। তা না হলে চট্টগ্রামকে রক্ষা করা যাবে না। আপনি দ্রুত পদক্ষেপ নিন।

সভাপতির বক্তব্যে পিপলস ভয়েসের সভাপতি শরীফ চৌহান বলেন, যারা পাহাড় দখল করেছেন তাদের তালিকা পাহাড় রক্ষা কমিটি করেছিল। কারো বিরুদ্ধে আজো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। পাহাড়ের বসতিতে নাগরিক সুবিধা পানি, গ্যাস, বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করা হয়নি। এক দিকে সব সুবিধা রাখবেন আর অন্যদিকে পাহাড় রক্ষার কথা বলবেন তা হয় না। যে হারে পাহাড় কাটা হচ্ছে এক দশক পর কোনো পাহাড় থাকবে না। পাহাড় বিহীন এক চট্টগ্রাম হবে। পাহাড় সমুদ্র নদীর যে নান্দনিক চট্টগ্রাম তা থাকবে না। জনমত পাহাড় রক্ষার পক্ষে। চট্টগ্রামের মানুষ বাধ্য হলে যে কোনো কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে পারে। চট্টগ্রাম, তিন পার্বত্য চট্টগ্রামসহ সারাদেশে পাহাড় ধ্বংস হচ্ছে। পাহাড় রক্ষায় জীববৈচিত্র রক্ষায় পদক্ষেপ নিতে হবে। জলবায়ু ফান্ডের টাকায় কোটি টাকা খরচ হয় পাহাড় রক্ষায় একটি টাকা খরচ হয় না।

Advertisements

প্রমা আবৃত্তি সংগঠনের সভাপতি রাশেদ হাসান বলেন, সমাজ যেভাবে এগুচ্ছে বড় স্থাপনা দেখছি তেমন ধনী গরিবের বৈষম্য লাগামহীন বেড়েই চলেছে। পাহাড় ধ্বস শুধুই কি প্রাকৃতিক নাকি অন্য কোনো কারণ আছে? কারণ বন্ধ করা না গেলে এভাবে প্রতিবার আন্দোলনে পথে দাঁড়াতে থাকব। একটা গোষ্ঠী লাগামহীন অর্থ আয়ের জন্য পরিবেশ ধ্বংস করছে। কদিন পরই বর্ষা। যদি পাহাড় ধ্বসে কোনো ক্ষতি হয় তার দায় কী প্রশাসন বা সরকার নেবে? হয়ত পত্রিকায় সংবাদ হবে। কিন্তু যারা জীবন দিল তারা স্বার্থান্বেষী মানুষের লোভের বলি হয়ে গেল। দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।

সাংবাদিক প্রীতম দাশ বলেন, ১০ বছরে পরিবেশ আদালতে কয়টি মামলার বিচার শেষ হয়েছে? সেই আদালতে বিচারক থাকে না। পাহাড় কাটা চলছে বছর জুড়ে। শুধু দিবস আর বর্ষা এলে প্রশাসন সক্রিয় হয়। এভাবে হবে না।

পিপলস ভয়েসের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আতিকুর রহমানের সঞ্চালনায় নাগরিক সমাবেশে বক্তব্য রাখেন যুব মৈত্রীর খোকন মিয়া, নারী প্রগতি সংঘের এস এম এরশাদুল করিম, চেরাগী আড্ডার এডমিন শৈবাল পারিয়াল, কারিতাস চট্টগ্রামের শ্যামল মজুমদার, ইকো’র সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য এস এম আবু ইউসুফ সোহেল, সাংবাদিক মিন্টু চৌধুরী, স্বরূপ ভট্টাচার্য, শফিক আহমেদ সাজীব, সংগঠক সুপায়ন বড়ুয়া, ডা. মো. মহসিন, শিমুল দত্ত, মতিউর রহমান শাহ ফাউন্ডেশনের প্রকৌশলী তিতুমীর শাহ বান্না, নারী প্রগতি সংঘের তপন কান্তি দে প্রমুখ। সংহতি জানায় পরিবেশ ছাত্র ফোরাম।

সাবস্ক্রাইব
Notify of
guest
0 মন্তব্য
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন