সকল বন্ধ খুলি
 ……………………
ভোরের আবছা আলো ভালো লাগে
 সকালে সূর্য লাগে ভালো
 বাতাস লাগে ভালো
 রোদ ফুলেরা মৃদু মৃদু পরশ দিলো
 হালটের সবুজ ঘাসের কাঁচা ঘ্রাণ
 আহা, ভাঁটফুল আর নয়নতারা দুলে
 ছড়িয়ে গেল প্রেমের যাদু
 মধুগন্ধী স্বর্ণচাঁপা
 কী দারুণ আকন্দ ফুল
 গাছে গাছে ডালে ডালে পাতার ভেতর ডাসা ডাসা
 মনমতো যত ফলের বহর
 বরুণ ফুলের তরুণ ঘ্রাণে মাতাল হলো মুনিয়ার শত জোড়া
 আমিও তো উড়ে উড়ে ঘুরে ঘুরে ফুলে ফুলে ডুবিয়ে চলি ঠোঁট
 প্রজাপতি মৌমাছিদের গলা ধরে আমিও চলি নেচে গেয়ে
 অশোক ফুলে পলাশ শিমুল নাগলিঙ্গমে
 ঘুমিয়ে পড়ি মধু খেয়ে
 মধুর সুখে
আহা, আকাশ থেকে হেসে হেসে আলো এসে আমার ঠোঁটে চুম রেখে যায়
 তবু আমার ঘুম ভাঙে না
 মধুর ঘুমের স্বপ্ন থেকে তুলবে আমায় দোয়েল কোয়েল পাখি ডেকে
নদীর জলের সতেজ প্রাণে বার্তা পাঠাই বিশ্বজনে
 ইথার থেকে ইথার ঘুরে মহাকাশে সৌরলোকে হৃদয় পাঠাই
 কবে কোন জলডুগীতে ফুলে ফুলে নেচেছিলো সৈকতবালি
 দেহমনে কেবলি আমি মাটিলগ্ন
 মাটিছেড়ে ঊর্ধ্বমুখী
 আমি তো সকল প্রাণে ঠিক বুঝেছি প্রাণের শরণ
 জীবন্ত সব মাটির গাথায় চোখ রেখেছি…
কাঁপা কাঁপা ভালোবাসার থর থর জাগর প্রেমের নেশা
 প্রেমকথনে মিলিয়ে দিলাম আজকে আমার শত রঙের ভালোলাগা
 মানুষ যদি মানুষ প্রাণে
 আনন্দ আর হাসি গানে
 এসো সবে সকল বন্ধ খুলি
 আড়ষ্টতা ভুলি।
 …………..
 বিবিধ দূরত্বের যাদু
 ………………………..
কী ভীষণ স্তব্ধতা!
 আপাত বহতা শ্বাসে
 উদ্বেগ আর শঙ্কাকুল
 একাকী দাঁড়িয়ে খোলা রোদে;
 কালবাতাস— নাড়িয়ে যায় চিন্তারেখা;
 দূর থেকে উড়ে আসে কাক;
 কথা বলে—
 একটানা ডাক বাতাসে ভাসে—
 কী গভীর স্বরধ্বনি!
 আমি অই প্রচল বিশ্বাসের কোনও
 বর্ণে— শব্দে— বাক্যে— ভাষ্যেই আস্বস্ত নই আর;
 আমি অই কৃষ্ণ চঞ্চুর ভেতরকার লাল আলজিহ্বার দিকে তাকিয়ে থাকি…;
 কাক— অই বাগযন্ত্রের দিকে তাকাই…;
 অই ধূসর কালো শরীর—
 অই ওড়াউড়ি—
 অই চঞ্চলতা—
 অই ডানা ঝাপটানো দেখি…;
 হায়, আমার এ কম্পমান হৃদয়—
 অই গভীরতর ভাষা বুঝতে চায়!
উহানের স্তব্ধতা—
 পৃথিবীর আরসব স্তব্ধতা দেখি আমি;
 জানি না জীবাণুবাহক সমুদ্র-উদ্ভিদ—
 কিম্বা, বাদুড়—
 কিম্বা, অজগর—
 আরসব প্রাণীর কথা;
হায়, বাকরুদ্ধের তো ভাষা থাকে না কাকের সাথে সংলাপের…!
 পৃথিবীর শাদা বেড়ালের প্রবণতা…
 আদিম প্রকৃতি জানতে চায় মন;
 পৃথিবীর লাশের সারি দেখে আপাত জীবিত চোখগুলো গ’লে গ’লে ঝ’রে পড়ে—
 ফোঁটা ফোঁটা তপ্ত আতঙ্ক!
 প্রকৃত অর্থে ঝ’রে পড়ে কি?
 পরিসংখ্যানবিদের সংখ্যাতাত্ত্বিক হাতের
 আঙুল খ’সে পড়ে পৃথিবীর অবিশ্বস্ত জমিনে!
 আসলেই খ’সে পড়ে কি?…
…যে আছে, অবরুদ্ধ— থেমে গেছে;—
 বিকল্প শ্বাস-প্রশ্বাস!
 সময়কাঁটা শব্দবিহীন ঘোরে;
 সময়রেখা বেড়ে চলছে ধীরে;
 কিম্বা, আগে থেকেই অঙ্কিত ছিলো সবই!
হায়, দৈত্য কিম্বা ইঁদুর— শহর কিম্বা গ্রাম— সবকিছু জরুরি সুরক্ষায়!
 জমে উঠেছে বিবিধ দূরত্বের যাদু…!
 শঙ্কা— সংশয়— সন্দেহরা মৃত্যুর মতো দাঁড়িয়ে…!
 মিলে মিলে কিলবিলিয়ে চলা লোকালয়ে সবশেষ জীবন প্রবণতার আচরণ থেমে গেছে!
 — তবে, পুরোপুরি স্থগিত নয় আপাতত…!

