English

24 C
Dhaka
শুক্রবার, মার্চ ২৯, ২০২৪
- Advertisement -

প্রধানমন্ত্রীর নাম ভাঙিয়ে প্রতারণা: দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করুন

- Advertisements -

অতীতে অনেক ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার কথা শুনেছি, যাঁরা মুক্তিযোদ্ধা না হয়েও জাল-জালিয়াতি কিংবা প্রতারণার মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধার সনদ নিয়েছিলেন, পাশাপাশি বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধাও নিয়েছিলেন। তাঁদের সনদ বাতিল হয়েছে, কারো কারো শাস্তিও হয়েছে। এঁদের সবাইকে টেক্কা দিয়েছেন আবুল হোসেন মানিক। সাবেক এই পোস্টমাস্টার নিজেকে পরিচয় দিতেন সচিব বলে। মুক্তিযোদ্ধা না হয়েও তিনি বনে গেছেন মুক্তিযোদ্ধা, বানিয়েছেন ‘বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা লীগ’ নামের সংগঠন, যার ‘প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি’ তিনি নিজেই।

এই সংগঠনের মাধ্যমে বহু প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধার সঙ্গেও প্রতারণা করেছেন। বহু মানুষের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। মানুষের বিশ্বাস অর্জনের জন্য চিঠিতে প্রধানমন্ত্রীর সইও জাল করেছেন। সই জাল করেছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রীরও। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলার নাটক করে তিনি মানুষকে ধোঁকা দিতেন। গণমাধ্যমে এই মানিকের প্রতারণা নিয়ে বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।

সাম্প্রতিক সময়ে প্রতারণার ঘটনা অনেক বেড়ে গেছে। প্রায়ই ধরা পড়ছে ভুয়া ডাক্তার, যারা রোগীদের সর্বনাশ করছে। প্যাথলজি পরীক্ষায় ভুয়া রিপোর্ট দেওয়া তো বহু পুরনো ঘটনা। সম্প্রতি কভিড-১৯-এর ভুয়া সনদপত্রও দেওয়া হয়েছে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর ভুয়া কর্মকর্তা সেজে অপহরণ, অর্থ আত্মসাতের মতো ঘটনা ঘটেছে। বিভিন্ন সমিতির নামে মানুষের টাকা লোপাটের বহু ঘটনা ঘটেছে। চাকরি দেওয়ার নামে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে।

বাড়ি বিক্রি, জমি বিক্রির নামে প্রতারণার ঘটনা অনেক আগে থেকেই চলছে। সাম্প্রতিক সময়ে পণ্য বিক্রির নামে অনলাইনে প্রতারণার ঘটনা অনেক বেড়ে গেছে। জাল টাকা, নকল-ভেজাল ওষুধ, খাদ্যে ভেজালসহ আরো কত প্রতারণার ঘটনা অহরহ ঘটছে। সেসব ঘটনায় দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হওয়ায় প্রতারণার ঘটনা প্রতিনিয়ত বেড়েই চলেছে। তৈরি হয়েছে আবুল হোসেন মানিকের মতো প্রতারক, দেশের প্রধানমন্ত্রীর নাম ভাঙিয়ে প্রতারণা করতেও যার আটকায় না।

সমাজে নৈতিকতার অবক্ষয় ভয়ংকর রূপ নিয়েছে। সমাজে এমন বহু মানুষ তৈরি হয়েছে অন্যায় করতে যাদের সামান্য দ্বিধা হয় না। বড় বড় অন্যায়-অপরাধ তারা অনায়াসে করতে পারে। তাদের অন্যায়ের কারণে একজন মানুষের জীবন চলে গেলেও তা নিয়ে তাদের বিন্দুমাত্র অনুশোচনা হয় না। বিশিষ্টজনরা এ জন্য দেশে আইনের শাসনের অভাবকেই দায়ী করেন। দীর্ঘদিন অপরাধকারীরা রাজনৈতিক আশ্রয় পেয়েছে। ক্ষমতার প্রশ্রয় পেয়েছে।

অপরাধ করেও পার পেয়ে গেছে। ফলে অপরাধের মাত্রা ক্রমেই বেড়েছে। যারা আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করবে, তাদের মধ্যেও বড় ধরনের বিচ্যুতি তৈরি হয়েছে।

আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত বিভিন্ন বাহিনীর অনেক সদস্যের সঙ্গে অপরাধীদের ঘনিষ্ঠতার অভিযোগ রয়েছে। ফলে নানা ধরনের অপরাধ ক্রমেই ডালপালা বিস্তার করেছে।

দেশ অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে চলেছে। এখন আইনের শাসনের দিক থেকেও দেশকে এগিয়ে নিতে হবে। মানিকদের মতো অপরাধীদের কঠোরভাবে দমন করতে হবে। যেসব প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা মানিকের প্রতারণার শিকার হয়েছেন, তাঁদের ক্ষতি পূরণ করতে হবে।

সাবস্ক্রাইব
Notify of
guest
0 মন্তব্য
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন