English

29 C
Dhaka
বৃহস্পতিবার, মার্চ ২৮, ২০২৪
- Advertisement -

একের পর এক হাতি হত্যা: অপরাধীদের বিচার নিশ্চিত করুন

- Advertisements -

সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে হাতি হত্যার ঘটনা অনেক বেড়ে গেছে। প্রাপ্ত পরিসংখ্যানে জানা যায়, ২০০১ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত ১৭ বছরে ৯০টি হাতি মারা হয়েছিল। আর ২০২০-এর জানুয়ারি থেকে ২০২১-এর আগস্ট পর্যন্ত ২০ মাসেই মারা হয়েছে ২৮টি হাতি। হত্যাকারীদের বেশির ভাগই থেকে গেছে ধরাছোঁয়ার বাইরে। আগস্টের পরও তিনটি হাতি মারা পড়েছে। সর্বশেষ ঘটনাটি ঘটেছে গত শনিবার। আগের রাতের কোনো একসময়ে ধানক্ষেতের পাশে টানিয়ে রাখা বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে হাতিটি মারা যায়। স্থানীয়রা সকালে মৃত হাতিটিকে ধানক্ষেতে দেখতে পায়। হাতিটির শুঁড়ে বিদ্যুত্স্পৃষ্ট হওয়ার ক্ষত রয়েছে। বন বিভাগ এ ঘটনায় মামলা করলেও কাউকে গ্রেপ্তারের খবর পাওয়া যায়নি। ঘটনাস্থলের আশপাশের জমি থেকে কিছু বৈদ্যুতিক তার জব্দ করা হয়েছে।
একসময় বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এশীয় হাতির অবাধ বিচরণ থাকলেও এখন কয়েকটি জায়গায় অল্পসংখ্যক হাতি দেখতে পাওয়া যায়। বন বিভাগ ও আইইউসিএনের জরিপ অনুযায়ী বাংলাদেশে হাতি রয়েছে ২৬৮টি। এর দুই-তৃতীয়াংশ রয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার এলাকায়। কক্সবাজারে ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গা আশ্রয় নেওয়ায় সেখানে হাতির বসবাসযোগ্যতা অনেক হ্রাস পেয়েছে। আবার পার্বত্য বনাঞ্চল থেকে হাতি সমতলে নামলেই নানাভাবে মারা পড়ছে। সাম্প্রতিক সময়ে হাতি মারার একটি প্রধান উপায় হয়ে উঠেছে রাতে ফসলি জমির চারপাশে বিদ্যুতের তার টানিয়ে রেখে বিদ্যুত্স্পৃষ্ট করে মারা।
যদিও হাতি কারো ফসলি জমি বা ঘরবাড়ির ক্ষতি করলে ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে, তবু হাতির প্রতি কিছু মানুষের নির্দয় আচরণ কমছে না। সচেতনতা সৃষ্টির নানা উদ্যোগও কোনো কাজে আসছে না। সম্প্রতি গুলি করে হাতি মারারও বেশ কিছু ঘটনা ঘটেছে। গত বছরের ৬ নভেম্বর চকরিয়া উপজেলার খুটাখালিতে গুলি করে একটি হাতি মারা হয়। এর ১০ দিন পর গুলি করে আরেকটি হাতি মারা হয় রামু উপজেলার জোয়ারিয়ানালায়। গত ৩১ আগস্ট রামুতে বিদ্যুতায়িত করে একটি হাতি মারার পর দুষ্কৃতকারীরা হাতিটিকে টুকরা টুকরা করে কেটে কাদায় পুঁতে রেখেছিল। এই দুষ্কৃতকারীদের আইনের আওতায় আনতে না পারার কারণে হাতি হত্যার ঘটনা ক্রমেই বাড়ছে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা।
স্থলের বৃহত্তম প্রাণী হাতি বাংলাদেশের প্রাকৃতিক ঐতিহ্যের নিদর্শন। প্রতিবেশগত ভারসাম্য রক্ষায়ও এর রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ অবদান। সারা পৃথিবী আজ যেখানে পরিবেশ রক্ষায়, প্রাকৃতিক ঐতিহ্য রক্ষায় ব্যাপক উদ্যোগ গ্রহণ করছে, তখন বাংলাদেশে আমরা প্রাকৃতিক ঐতিহ্য ধ্বংসে এত তৎপর কেন? এভাবে হাতি মারা একটি ফৌজদারি অপরাধ। আমরা চাই দ্রুত এই অপরাধীদের গ্রেপ্তার করে বিচারের মুখোমুখি করা হোক।

সাবস্ক্রাইব
Notify of
guest
0 মন্তব্য
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন