বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী মেয়েটি ভালো থাকবে, সেই প্রত্যাশায় তাকে স্কুলে পাঠিয়েছিল পরিবার। অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী এই কিশোরীকে যৌন নির্যাতন করেন ওই স্কুলেরই পরিচালনা কমিটির সদস্য। কিশোরীর বাবা থানায় মামলা করেন। বিচারিক হাকিম আদালতে নির্যাতনের বিষয়ে জবানবন্দিও দিয়েছিল কিশোরী। এক অভিযুক্তকে গ্রেপ্তারও করেছে পুলিশ। কিন্তু তার আগেই জীবনের হিসাব চুকিয়ে দিয়েছে কিশোরী। বেছে নিয়েছে আত্মহননের পথ। গত ৭ নভেম্বর নির্যাতনের শিকার হওয়ার পর থেকেই তার পরিবারকে হুমকি দেওয়া হচ্ছিল। প্রধান আসামি স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী হওয়ার কারণেই হয়তো হতাশা দেখা দিয়েছিল কিশোরীর মনে। খবরে প্রকাশ, অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার না হওয়া এবং ক্রমাগত হুমকির কারণেই আত্মহননের পথ বেছে নেয় সে।
বাংলাদেশে শিক্ষার্থী, বিশেষ করে শিশু ও কিশোরীরা যৌন নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের এক জরিপ জানাচ্ছে, গত মে মাসে ধর্ষণের শিকার হয় ৫৫ শিশু। এর মধ্যে তিনজনকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়। গত আগস্টে ৫২ শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে। সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করা হয়েছে সাত শিশুকে। আর ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে এক শিশুকে। শেরপুরের শ্রীবরদীতে ধর্ষণের শিকার হয়ে তৃতীয় শ্রেণির এক ছাত্রীর অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার অভিযোগ পাওয়া যায় গত সেপ্টেম্বরে। গত বছর ধর্ষণের শিকার হয়ে লোকলজ্জার ভয়ে আত্মহননের পথ বেছে নিয়েছিল পঞ্চগড়ের ষষ্ঠ শ্রেণির এক শিক্ষার্থী।
সহিংস নিপীড়নের শিকার হচ্ছে শিশু। এ ধরনের নির্যাতন ও নিপীড়নের ঘটনা কেন বাড়ছে? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নির্যাতনের মামলাগুলোর ‘ঠিকমতো বিচার না হওয়ার’ কারণেই সহিংসতার ঘটনা বাড়ছে। কঠোর আইনও ধর্ষণ প্রতিরোধে ফলপ্রসূ না হওয়ার কারণ হলো যারা এ অপরাধ করছে, তারা ধর্ষণকে অপরাধ বলেই মনে করে না। পারিপার্শ্বিক নানা কারণে গড়ে ১০০টি ঘটনার মধ্যে ১০টির ক্ষেত্রেও ভুক্তভোগী নারী বা তার পরিবার মামলা করতে রাজি হয় না। আর যা-ও বা মামলা করা হয়, সেগুলো বছরের পর বছর ঝুলে থাকে। এর মধ্যে জামিনে বেরিয়ে এসে ভুক্তভোগীসহ তার পরিবারকে হুমকি-ধমকি দিতে থাকে আসামি।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, নির্যাতন কমাতে হলে সত্যিকার অর্থে আইনের কঠোর প্রয়োগ হতে হবে। মামলাগুলোর দ্রুত বিচার হতে হবে।
The short URL of the present article is: https://www.nirapadnews.com/3cnw
সাবস্ক্রাইব
নিরাপদ নিউজ আইডি দিয়ে লগইন করুন
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন