বিয়ের সব আয়োজন শেষ, স্বপ্ন ছিল নতুন অধ্যায় সূচনার। কিছুদিন পরেই বিয়ের পিড়িতে বসতেন তিনি। বিয়ের কেনাকাটা করতেই চট্টগ্রামের উদ্দেশ্য রওনা দিয়েছিলেন। কিন্তু তার আগেই সড়ক দুর্ঘটনায় থেমে গেলো রিমঝিমের জীবন।
সোমবার (১৬ জুন) সকালে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্য রওনা দেয় পূরবি পরিবহনের বাসটি। চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের রশিদনগর ইউনিয়নের বিপদজনক জেটির রাস্তার মাথা এলাকায় পৌছাতেই বিপরীত দিক থেকে আসা কাভার্ড ভ্যানের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়।
এতে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের পাশেই উলটে যায় বাসটি। ঘটনাস্থলে মৃত্যু হয় রিমঝিমের। এ ঘটনায় প্রাণ হারায় আরও দুজন—বাবা ও তার ১১ বছর বয়সী সন্তান। এ সময় আহত হন আরও ৭ জন।
নিহতের পরিবার বলছে, চট্টগ্রামে রিমঝিমের ছোটবোন পড়ালেখা করেন। সে সুবাদে রিমঝিমের কথা ছিল চট্টগ্রামে বিয়ের বাজার করার। তাই চট্টগ্রাম যাচ্ছিলেন রোহিঙ্গা শিবিরের একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থায় কর্মরত রিমঝিম বড়ুয়া।
রিমঝিমের হবু স্বামী সানি বড়ুয়া চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার ভান্ডারগাঁও এলাকার বাসিন্দা। পেশায় একজন ব্যবসায়ী। রিমঝিমের এমন আকস্মিক মৃত্যু মেনে নিতে পারছে না পরিবারসহ এলাকাবাসী।
একই ঘটনায় আরেকটি হৃদয়বিদারক ঘটনা ঘটে। ব্যবসায়ী হাবিবউল্লাহ তার ১১ বছর বয়সী ছেলে রিয়াদকে হাফেজ বানানোর উদ্দেশে ভর্তি করাতে চট্টগ্রাম যাচ্ছিলেন। দুর্ঘটনায় বাবা ও ছেলের দুজনেরই মৃত্যু হয়। তাদের এই করুণ বিদায়ে শোকাহত পরিবার ও এলাকা।
হাবিবউল্লাহ পিএমখালী ইউনিয়নের দক্ষিণ পাতলী এলাকার বাসিন্দা হলেও ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান ছিল রামু চৌমুহনিতে। তিনি দীর্ঘদিন ধরে রামুতে কাপড়ের দোকানে ব্যবসা করে যাচ্ছিলেন।
চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কটি প্রশস্তকরণের পরিকল্পনা থাকলেও এখনো তা বাস্তবায়ন হয়নি। ফলে সরু এই সড়কে প্রতিনিয়ত ঘটছে প্রাণঘাতী দুর্ঘটনা। অনিরাপদ এই মহাসড়ক যেন এক মৃত্যু ফাঁদে পরিণত হয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে—এই মৃত্যুর মিছিল কবে থামবে?