English

26.1 C
Dhaka
মঙ্গলবার, জুলাই ৮, ২০২৫
- Advertisement -

ভোগান্তির অপর নাম কুষ্টিয়া-ঈশ্বরদী মহাসড়ক: রাস্তার ওপর আছড়ে পড়ল ট্রাক!

- Advertisements -

দক্ষিণবঙ্গের সঙ্গে উত্তরাঞ্চলের যোগাযোগের গুরুত্বপূর্ণ কুষ্টিয়া-ঈশ্বরদী মহাসড়কের প্রায় ৪শ মিটার গর্ত আর খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। এ ছাড়াও সড়কটির কিছু অংশ দেবে যাওয়ায় কুষ্টিয়ার ত্রিমোহনী থেকে ভেড়ামারা বারোমাইল পর্যন্ত সড়কের প্রায় ৭ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। এবার রাস্তার ওপর আছড়ে পড়ল ১৭ টন এলপিজি গ্যাস বহনকারী ট্রাক!

এ ঘটনায় চালক ও সহকারী গুরুতর আহত হয়। তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে স্থানীয়রা।

রবিবার বিকেলে কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার খাদিমপুর মাদ্রাসার কাছে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে এলপিজি গ্যাসের গাড়ি সড়কের মাঝখানে উল্টে যায়! এতে বন্ধ হয়ে যায় কুষ্টিয়া-পাবনা সড়কের পরিবহন চলাচল। পরে ফায়ার সার্ভিস ও হাইওয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধার কাজ চালায়। গত ২৪ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও সড়ক থেকে উদ্ধার করতে না পারায় দক্ষিণবঙ্গের সঙ্গে উত্তরাঞ্চলের যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।

এদিকে প্রতিদিনই রাস্তার দুপারে কয়েক শত বাস-ট্রাককে রাস্তা পারাপারের জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা এই মহাসড়কে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে। দেবে যাওয়া অংশের দুই প্রান্তের সামান্য এই ৪ শ মিটার সড়ক পার হতে প্রায় ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা সময় লেগে যাচ্ছে। তা ছাড়া দেবে যাওয়া এই সড়কে চলাচল করতে গিয়ে প্রায়ই ছোট-খাট দুর্ঘটনা ঘটছে।

অন্যদিকে, দেখা দিয়েছে চরম ভোগান্তি। সড়ক বিভাগ ইট-বালু ফেলে জরুরি মেরামত কাজ করলেও এতে তেমন কোনো সুফল মিলছে না। গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়কটি এখন মহাদুর্ভোগে পরিণত হয়েছে।

কুষ্টিয়া-ঈশ্বরদী মহাসড়কটির দেবে যাওয়া এই অংশটি দেখে বোঝার কোনো উপায় নেই যে এটি একসময় মহাসড়ক ছিল। দেখে মনে হবে এটি প্রত্যন্ত অঞ্চলের কোনো এক কাঁচা সড়ক। অথচ এই সড়কটিই হচ্ছে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের সঙ্গে উত্তরাঞ্চলের একমাত্র যোগাযোগের মাধ্যম। জাতীয় সড়কের অংশ গুরুত্বপূর্ণ এই মহাসড়কটি প্রায় এক বছর ধরেই যান চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছিল।

এর মধ্যেই আবার গত দিন দশেক আগে কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার রানাখড়িয়া জ্যোতি ফিলিং স্টেশনের কাছ থেকে কবরস্থান পর্যন্ত প্রায় ৪ শ মিটার সড়ক দেবে গেছে। পিচ উঠে গিয়ে কাদামাটি বের হয়ে বোঝার কোনো উপায় নেই এটি একসময় মহাসড়ক ছিল। সড়কটি দেবে যাওয়ায় কুষ্টিয়ার ত্রিমোহনী থেকে ভেড়ামারা বারোমাইল পর্যন্ত প্রায় ৭ কিলোমিটার সড়কের দুই ধারে প্রায় শত শত বাস-ট্রাকসহ অন্যান্য যানবাহনকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা রাস্তা পারাপারের জন্য দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে।

ঢাকা থেকে আসা এসবি সুপার ডিলাক্সের চালক রিপন নবী জানান, বারোমাইল থেকে কুষ্টিয়া শহর পর্যন্ত সড়কে তিন ঘণ্টা সময় লেগেছে। এ সড়কের কারণে আমরা গাড়ির ট্রিপ মিস করছি। এ ছাড়াও গ্রামের ভেতর দিয়ে আসতে গিয়ে সরু সড়কের কারণে দুর্ঘটনায় পতিত হতে হয়েছে। আবার কখনো ভেড়ামারা থেকে দৌলতপুর, খলিশাকুন্ডি মিরপুর হয়ে ঘুরে আসতে গিয়ে অনেক সময় ও জ্বালানি খরচ বেড়ে যায়।

স্থানীয় সড়ক বিভাগের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রায় দুই বছর দুই মাস আগে গুরুত্বপূর্ণ এই মহাসড়কটি নির্মাণ করা হয়। সে সময় পণ্যবোঝাই ভারী ভারী যানবাহন চলাচলের মতো সক্ষমতার বিষয়টি মাথায় না রেখেই সড়কটি নির্মাণ করায় কয়েকদিন পর থেকেই সড়কের বিভিন্ন স্থানে উঁচু-নিচু হতে দেখা যায়। বছর ঘুরতে না ঘুরতেই খানাখন্দের সৃষ্টি হয়ে সড়কটি একেবারেই যান চলাচলের অনুপোযোগী হয়ে পড়ে।

স্থানীয়রা জানান, যে স্থানে সড়ক দেবে গেছে তার পাশেই রানাখড়িয়া বালুর ঘাট রয়েছে। প্রতিদিন বালুবোঝাই শত শত ভারী ট্রাক এখান দিয়ে মহাসড়কে উঠছে। সে সময় ভারী যানবাহন এই মহাসড়ক দিয়ে চলাচল করবে এমন সক্ষমতার কথা বিবেচনা না করেই মহাসড়কটি নির্মাণ করায় এখন জনসাধারণকে এর খেসারত দিতে হচ্ছে। সড়ক ও জনপথ বিভাগ জনদুর্ভোগ লাঘবে এই মহাসড়কে ইট-বালু ফেলে জরুরি মেরামত কাজ করলেও এর কোনো সুফল পাওয়া যাচ্ছে না।

কুষ্টিয়া সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শাকিরুল ইসলাম জানান, কুষ্টিয়ার ত্রিমোহনী থেকে ভেড়ামারা উপজেলার বারোমাইল পর্যন্ত প্রায় ১২ কিলোমিটার সড়কটি পুনর্নির্মাণের জন্য সম্প্রতি দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। আশা করা হচ্ছে খুব শিগগিরই সড়কটির নির্মাণ কাজ শুরু হবে। সড়কটি পুনর্নির্মাণ সম্পন্ন হলে জনদুর্ভোগ নিরসন সম্ভব হবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

The short URL of the present article is: https://www.nirapadnews.com/b7zd
Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন