বিয়ের বয়স এখনও দুই মাস অতিবাহিত হয়নি। মোছেনি হাতের মেহেদির রঙ। গ্রামের বাড়িতে ছুটি কাটিয়ে চট্টগ্রামে কর্মস্থলে ফেরার পথে ফেনীর ফতেপুর রেলক্রসিংয়ে ট্রেনের ধাক্কায় রোববার (১১ অক্টোবর) বাস উল্টে দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান সাদ্দাম হোসেন (২৮)।
নিহত সাদ্দাম জেলার সদর দক্ষিণ উপজেলার সুয়াগাজী সংলগ্ন কৃষ্ণপুর গ্রামের তাজুল ইসলামের ছেলে। রোববার রাত ১১টার দিকে তার মরদেহ গ্রামের বাড়ি আনার পর জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। এখনও তার বাড়িতে চলছে শোকের মাতম।
নিহতের চাচাতো বোন তাসলিমা আক্তার জানান, সাদ্দাম হোসেন চট্টগ্রাম প্রগতি ইন্ডাস্ট্রিতে চাকরি করতেন। তিনি বাড়িতে ছুটি কাটিয়ে কর্মস্থলে ফিরছিলেন। শনিবার (১০ অক্টোবর) দিবাগত শেষ রাতে নূরজাহান হোটেলের সামনে থেকে তিনি চট্টগ্রামগামী নাইট কোচে ওঠেন। ভোরে বাড়ির লোকজন দুর্ঘটনার খবর পান।
তিনি আরও জানান, সাদ্দাম অত্যন্ত মিশুক প্রকৃতির ছিল। তিন ভাই ও এক বোনের মধ্যে সাদ্দাম ছিল সবার বড়। টানাপোড়নে চলা সংসারে তিনি অনেক ঘাত-প্রতিঘাত অতিক্রম করে মাস্টার্স শেষ করে চট্টগ্রামে প্রগতিতে চাকরি নেন। তার বাবা তাজুল ইসলাম সুয়াগাজীতে একটি ফিলিং স্টেশনে চাকরি করেন।
সাদ্দামের বাবা তাজুল ইসলাম বলেন, আমার তিন ছেলে ও এক মেয়ের মধ্যে সাদ্দাম ছিল সবার বড়। আমার অভাবের সংসারে সে অনেক ঘাত-প্রতিঘাত অতিক্রম করে মাস্টার্স শেষ করে চট্টগ্রামে প্রগতিতে চাকরি নেয়। তার ছোট দুই ভাই এখনও লেখাপড়া শেষ করতে পারেনি। একজন কলেজে পড়ছে, অন্যজন একটি হাফেজিয়া মাদরাসায় পড়ে।
গত ১৪ আগস্ট সাদ্দামের বিয়ে হয়েছে। তার বিয়ের বয়স এখনও দুই মাস পার হয়নি। স্বামীকে হারিয়ে তার স্ত্রী উর্মী এখন পাগলপ্রায়। উপার্জনক্ষম বড় সন্তানকে হারিয়ে তাদের পরিবারে শোকের ছায়া নেমে এসেছে বলেও তিনি জানান।
রোববার (১১ অক্টোবর) ভোর ৬টার দিকে ফেনীর ফতেপুর রেলক্রসিংয়ে ট্রেনের ধাক্কায় বাস উল্টে তিনজনের মৃত্যু হয়। কুমিল্লার সাদ্দাম তাদেরই একজন। ওই ঘটনায় আরও ১৫ জন আহত হন।
The short URL of the present article is: https://www.nirapadnews.com/w1q5
সাবস্ক্রাইব
নিরাপদ নিউজ আইডি দিয়ে লগইন করুন
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন