English

29 C
Dhaka
শনিবার, এপ্রিল ২৭, ২০২৪
- Advertisement -

মানুষের রক্তে মিললো প্লাস্টিকের কণা!

- Advertisements -

প্রথমবারের মতো মানুষের রক্তে মিললো মাইক্রোপ্লাস্টিক। বিজ্ঞানীরা পরীক্ষা করে প্রায় ৮০ শতাংশ মানুষের রক্তেই প্লাস্টিকের ক্ষুদ্র কণা খুঁজে পেয়েছেন। তবে এগুলো স্বাস্থ্যের উপর কীভাবে প্রভাব ফেলছে তা এখনো জানা যায় নি।

Advertisements

তবে গবেষকরা উদ্বিগ্ন হচ্ছেন এই ভেবে যে, মাইক্রোপ্লাস্টিক মানব কোষের ক্ষতি করে। বায়ু দূষণের কারণে বছরে লাখ লাখ মানুষ মৃত্যুবরণ করছেন। আর উদ্বেগের বিষয় হলো বায়ু দূষণের কারণেই কণাগুলো মানব শরীরে প্রবেশ করে।

বর্তমানে যেমন বেড়েছে প্লাস্টিক ব্যবহার, তেমনই প্রচুর পরিমাণে প্লাস্টিক বর্জ্যও ফেলা হচ্ছে যত্রতত্র। মাউন্ট এভারেস্টের চূড়ায় গেলে কিংবা গভীর মহাসাগরেও এখন মেলে প্লাস্টিক বর্জ্য।

Advertisements

বিজ্ঞানীরা গবেষণা করে দেখেছেন, খাদ্য ও জলের পাশাপাশি শ্বাস নেওয়ার মাধ্যমেও প্লাস্টিকের ক্ষুদ্র কণাগুলো সব বয়সী মানুষের শরীরেই প্রবেশ করছে প্রতিদিন।

বিজ্ঞানীরা ২২ বেনামী দাতাদের রক্তের নমুনা বিশ্লেষণ করেন। এসব সুস্থ প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তিদের মধ্যকার ১৭ জনের রক্তে প্লাস্টিকের কণা পাওয়া গেছে। অর্ধেক নমুনায় পিইটি প্লাস্টিক মিলেছে, যা সাধারণত পানীয়ের বোতলগুলোতে ব্যবহৃত হয়।

আর এক তৃতীয়াংশে পাওয়া গেছে পলিস্টেরিন। যা খাবার ও অন্যান্য পণ্য প্যাকেটজাত করার জন্য ব্যবহৃত হয়। রক্তের নমুনার এক চতুর্থাংশে মিলেছে পলিথিন। এর দ্বারা প্লাস্টিকের ক্যারিয়ার ব্যাগ তৈরি করা হয়।

নেদারল্যান্ডসের ভ্রিজ ইউনিভার্সিটি আমস্টারডামের ইকোটক্সিকোলজিস্ট অধ্যাপক ডিক ভেথাক এ বিষয়ে জানান, ‘গবেষণাটি প্রথম ইঙ্গিত যে আমাদের রক্তে পলিমার কণা মিলেছে। এটি একটি যুগান্তকারী ফলাফল। তবে আমাদের গবেষণাটি এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে আছে। এ বিষয়ে আরও গবেষণা প্রয়োজন।’।

তিনি জানান, ‘বিষয়টি অবশ্যই উদ্বিগ্ন হওয়ার মতোই এক বিষয়। প্লাস্টিকের কণাগুলো রক্তের মাধ্যমে পুরো শরীরেই পরিবাহিত হয়।’।

তিনি আরও জানান, পূর্ববর্তী গবেষণায় উঠে আসে প্রাপ্তবয়স্কদের তুলনায় শিশুদের মলে মাইক্রোপ্লাস্টিক পাওয়া গেছে ১০ গুণ বেশি। অন্যদিকে প্লাস্টিকের পাত্রে যেসব শিশুদের খাবার খাওয়ানো তাদের শরীরের দিনে লাখ লাখ মাইক্রোপ্লাস্টিক কণা প্রবেশ করে। অধ্যাপক ডিক ভেথাক বলেন, ‘এটি আমাকে অনেক চিন্তিত করে।’

নতুন গবেষণাটি এনভায়রনমেন্ট ইন্টারন্যাশনাল জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। মানুষের রক্তে ০.০০০৭ মিলি মিটারের মতো ছোট কণা শনাক্ত করা হয়েছে। কিছু রক্তের নমুনায় দুই বা তিন ধরনের প্লাস্টিক মিলেছে। গবেষকরা দূষণ এড়াতে ইস্পাত সিরিঞ্জের সূঁচ ও কাচের টিউব ব্যবহার করে এই পরীক্ষা করেছেন।

ডা. ভেথাক বলেন, ‘এখন বড় প্রশ্ন হলো আমাদের শরীরে কি ঘটছে? এগুলো কি নির্দিষ্ট অঙ্গে স্থানান্তরিত হয়, যেমন রক্ত-মস্তিষ্কে? নাকি এই এসব প্লাস্টিকের কণা জটিল রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়াচ্ছে? এসব বিষয়ে এখন জরুরিভাবে গবেষণা করা জরুরি।’

নতুন গবেষণাটি ডাচ ন্যাশনাল অর্গানাইজেশন ফর হেলথ রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ও কমন সিজ নামক প্লাস্টিক দূষণ কমাতে কাজ করে এমন একটি সামাজিক উদ্যোগ দ্বারা অর্থায়ন করা হয়েছিল।

দাতব্য সংস্থা কমন সিজের প্রতিষ্ঠাতা জো রয়েল বলেছেন, ‘২০৪০ সাল নাগাদ প্লাস্টিক উৎপাদন দ্বিগুণ হবে। এসব প্লাস্টিক শরীরে কী করছে তা জানার অধিকার আমাদের আছে।’

সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে, মাইক্রোপ্লাস্টিক লোহিত রক্তকণিকার বাইরের ঝিল্লিতে আটকে যেতে পারে। ফলে অক্সিজেন পরিবহনের তাদের ক্ষমতা কমে যাওয়া ঝুঁকি থাকে।

গর্ভবতী নারীদের প্ল্যাসেন্টাতেও কণা পাওয়া গেছে। এমনকি গর্ভবতী ইঁদুরের উপর গবেষেণা চালিয়ে দেখা যায়, কণাগুলো দ্রুত ফুসফুসের মাধ্যমে হৃৎপিণ্ড, মস্তিষ্ক ও ভ্রূণের অন্যান্য অঙ্গে প্রবেশ করে।

সাবস্ক্রাইব
Notify of
guest
0 মন্তব্য
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন