মেয়েকে হত্যার দায়ে মাকে মৃত্যদণ্ড দিয়েছেন কিশোরগঞ্জের আদালত। এছাড়াও তাকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। আজ রবিবার দুপুর ১টায় কিশোরগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক মুহাম্মদ হাবিবুল্লাহ আসামির উপস্থিতিতে এ রায় দেন। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আছমা আক্তার (৩৬) কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার লতিবাবাদ ইউনিয়নের পূর্বচরপাড়া গ্রামের মো. সুরুজ মিয়ার মেয়ে। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল-১ এর পাবলিক প্রসিকিউটর এডভোকেট এম. এ আফজল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ২০০৮ সালে নাটোরের আশরাফ উদ্দীন নামে একজনকে নিজের পছন্দে বিয়ে করেন আছমা আক্তার। বিয়ের দুইবছর পর তাদের একটি কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। ২০১৩ সালে রাজধানীর মহাখালীতে এক সড়ক দুর্ঘটনায় তার স্বামী আশরাফ মৃত্যুবরণ করেন। পরে মেয়ে শিউলী আক্তারকে নিয়ে বাবার বাড়িতে চলে আসেন আছমা। বাবার বাড়িতে থাকাকালীন সময়ে ২০১৭ সালে গাজীপুর জেলার জয়দেবপুর এলাকার আবদুল কাদের নামে একজনকে বিয়ে করেন আছমা। বিয়ের পর কাদের প্রায়ই তার শ্বশুর বাড়িতে আসতেন। আছমাও তার মেয়েকে নিয়ে কাদেরের বাড়িতে বেড়াতে যেতেন। এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে মনোমালিন্য হলে কাদের শ্বশুর বাড়িতে আসা বন্ধ করে দেন। কিন্তু আছমা ঠিকই কাদেরের কাছে আসা-যাওয়া করতেন। হঠাৎ একদিন সেখান থেকে বাবার বাড়িতে এসে পরিবারের সদস্যদের সাথে কথাবার্তা কমিয়ে করে দেন তিনি। ২০২০ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি তার ভাইয়ের শাশুড়ি তাদের বাড়িতে আসলে ঘরে ঢুকতে বাধা দেন আছমা। এ নিয়েও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে মনোমালিন্য হয়। পরদিন সকালে তার ১০ বছর বয়সী মেয়ে শিউলী আক্তারকে স্কুল থেকে ডেকে এনে জোরপূর্বক ইঁদুর মারার একটি ট্যাবলেট খাওয়ান। পরে আছমার মা মনোয়ারা বেগম বাধা দিলে তাকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে মেয়ে শিউলীকে শ্বাসরোধে হত্যা করেন। এ ঘটনায় এদিন রাতেই শিউলীর নানা সুরুজ মিয়া বাদী হয়ে মেয়ে আছমাকে একমাত্র আসামি করে কিশোরগঞ্জ মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
২০২০ সালের ৩১ আগস্ট মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক মিজানুর রহমান তদন্ত শেষে আছমাকে একমাত্র আসামি হিসেবে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।