English

28 C
Dhaka
শনিবার, মে ৪, ২০২৪
- Advertisement -

জামায়াতের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনার সুযোগ নেই: তানিয়া আমীর

- Advertisements -

রিটকারী পক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার তানিয়া আমীর বলেছেন, নিবন্ধন বাতিলে রায়ের বিরুদ্ধে জামায়াতের আপিল খারিজ হয়ে যাওয়ায় দলটির আর কোনো অস্তিত্ব থাকলো না। তাই জামায়াত আজ থেকে কোনো ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতে পারবে না। কোনো মিছিল মিটিং করতে পারবে না।

তিনি বলেন, এখন যদি জামায়াত কোনো ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে তাহলে আমরা আদালত অবমাননার আবেদন নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে যাবো।

Advertisements

রোববার (১৯ নভেম্বর) সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের আদেশের পর তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।

এর আগে রাজনৈতিক দল হিসেবে জামায়াতে ইসলামীকে দেওয়া নিবন্ধন অবৈধ বলে হাইকোর্টের দেওয়া রায় বহাল রাখেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। এর ফলে জামায়াতের নিবন্ধন বাতিলে হাইকোর্টের রায় বহাল রয়েছে বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।

রোববার (১৯ নভেম্বর) এ সংক্রান্ত আপিল খারিজ করে হাইকোর্টের রায় বহাল রাখার আদেশ দেন আপিল বিভাগ। এদিন প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের বিচারপতির আপিল বিভাগের বেঞ্চ এ আদেশ দেন। জামায়াতের মূল আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলীর অনুপস্থিতিতে আপিল খারিজ করে আদেশ দেন আপিল বিভাগ। আইনের ভাষায় এটাকে বলে ‘ডিসমিস ফর ডিফল্ট’।

অন্যদিকে জামায়াতের রাজনৈতিক কর্মসূচিতে নিষেধাজ্ঞা ও আদালত অবমাননার অভিযোগের আবেদন শুনানির জন্য হাইকোর্টে যেতে বলেছেন আপিল বিভাগ।

Advertisements

আদালতে আজ আবেদনের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী তানিয়া আমীর ও আহসানুল করীম। এসময় উপস্থিত ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার এম আমির উল ইসলাম। জামায়াতে ইসলামীর আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলীর পক্ষে শুনানিতে ছিলেন অ্যাডভোকেট মো. জিয়াউর রহমান।

এ বিষয়ে আবেদনের পক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার তানিয়া আমীর বলেন, তারা বারবার সময় চেয়ে কালক্ষেপণ করছেন। সেজন্য আপিল বিভাগ তাদের আবেদন ‘ডিসমিসড ফর ডিফল্ট’ করেছেন। আপিল তারা করেছেন। তারা যদি শুনানি করতে ইচ্ছুক না হন, আদৌ যদি তাদের কোনো গ্রাউন্ড থাকতো তাহলে তারা শুনানি করতেন। তারা নিজেরাই জানেন তাদের কোনো ম্যারিট নেই। এ কারণে তারা বারবার সময় চেয়ে কালক্ষেপণ করে আসছেন।

পরে এ বিষয়ে জিয়াউর রহমান বলেন, আমাদের সিনিয়র আইনজীবী এজে মোহাম্মদ আলীর ব্যক্তিগত অসুবিধা রয়েছে। আর অ্যাডভোকেট অন রেকর্ড জয়নুল আবেদীনও অনুপস্থিত। এ ব্যক্তিগত অসুবিধার কারণে ছয় সপ্তাহ সময় চেয়েছিলাম। আর অন্য পক্ষ আদালত অবমাননা ও নিষেধাজ্ঞার দরখাস্ত দিয়েছিল। যেহেতু আমাদের আইনজীবীরা উপস্থিত নেই, সেহেতু আদালত এটা ‘ডিসমিসড ফর ডিফল্ট’ করেছেন। অর্থাৎ আইনজীবী উপস্থিত না থাকার কারণে খারিজ করেছেন।

আদালত অবমাননার আবেদনের বিষয়ে আদালত বলেছেন, যেহেতু কনটেম্পটা হয়েছে হাইকোর্টের আদেশ। আপিল বিভাগের আদেশের কোনো কনটেম্পট হয়নি। সে কারণে এটা হাইকোর্ট বিভাগে উপস্থাপন করতে বলা হয়েছে। আর যেহেতু আপিল খারিজ করা হয়েছে, তাই নিষেধাজ্ঞার আবেদনের আর কোনো প্রয়োজনীয়তা থাকলো না। পরে আইনি সুযোগ কি আছে? এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, রেস্টোর আবেদনের সুযোগ আছে। সেক্ষেত্রে এটা আদালতের এখতিয়ার।

এর আগে জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে সময় আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত রোববার প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের আপিল বিভাগের একই বেঞ্চ পরবর্তী শুনানির জন্য ১৯ নভেম্বর দিন ধার্য করেন। আদালতে ওইদিন জামায়াতের পক্ষে সময় চান আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. জিয়াউর রহমান।

জামায়াতের রাজনৈতিক কর্মসূচিতে নিষেধাজ্ঞা ও আদালত অবমাননার অভিযোগের আবেদনের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার তানিয়া আমীর ও আইনজীবী আহসানুল করিম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল আবু মোহাম্মদ (এ এম) আমিন উদ্দিন, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ মোহাম্মদ (এসকে) মোর্শেদ ও অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার মোহাম্মদ মেহেদী হাসান চৌধুরী।

ওইদিন দলের নিবন্ধন বাতিলের আপিল শুনানির জন্য আইনজীবী উপস্থিত হতে না পারায় আট সপ্তাহ সময় চেয়ে আবেদন করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। সকালে জামায়াতের আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলীর পক্ষে সময় চান অন্য আইনজীবী মো. জিয়াউর রহমান। ওই আবেদনের শুনানিতে এই আদেশ দেন আদালত।

এর আগে হাইকোর্টের রায়ে নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণা করে দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী দায়ের করা লিভ টু আপিলের ওপর সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে শুনানির দিন ধার্য ছিল। তারই ধারাবাহিকতায় শুনানি হলো আজ।

জামায়াতে ইসলামীর পক্ষের আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলীর আজ ব্যক্তিগত সমস্যা থাকায় তার পক্ষ থেকে আট সপ্তাহ সময় চাইলে আপিল বিভাগ এক সপ্তাহ সময় দিয়ে ১৯ নভেম্বর শুনানির দিন ধার্য করেন।

গত ১৯ অক্টোবর জামায়াতের রাজনৈতিক কার্যক্রম, রাজনৈতিক সভা, জনসভা বা মিছিলের ওপর নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করেন ব্যারিস্টার তানিয়া আমীর।

পৃথক আবেদন দুটি হলো- রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন অবৈধ ঘোষিত হওয়া বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীকে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করা থেকে বিরত রাখতে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করা হয়েছে।

পাশাপাশি জামায়াতের আমির, সেক্রেটারি জেনারেল, নায়েবে আমির, ঢাকা মহানগরের দক্ষিণের আমির ও দক্ষিণের নায়েবে আমিরসহ আটজনের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগে আবেদন করা হয়েছে।

জামায়াতের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিটকারী মাওলানা সৈয়দ রেজাউল হক চাঁদপুরীসহ তিনজন হাইকোর্ট বিভাগের রায়ে নিবন্ধন অবৈধ করার বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত জামায়াতে ইসলামীর রাজনৈতিক কার্যক্রম, রাজনৈতিক সভা, জনসভা বা মিছিলের ওপর নিষেধাজ্ঞা এবং ১০ বছর পর রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করে নিবন্ধন ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি করায় আদালত অবমাননার অভিযোগ এনে পৃথক আবেদন করে।

আপিল বিভাগে করা এই আবেদনে জামায়াতের নিবন্ধন সংক্রান্ত মামলা বিচারাধীন থাকা অবস্থায় সম্প্রতি দলটি নিবন্ধন ফিরে পাওয়ার দাবি করে। তাদের এ দাবিকে আদালত অবমাননার অভিযোগ আনা হয়। একই সঙ্গে জামায়াতে ইসলামী যাতে কোনো ধরনের রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করতে না পারে সে বিষয়েও নিষেধাজ্ঞা চাওয়া হয়।

জামায়াতে ইসলামীর সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মসূচি পালনে নিষেধাজ্ঞার আবেদনে পক্ষভুক্ত হয়েছেন বিশিষ্ট ৪২ নাগরিক। অন্যদিকে জামায়াত রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করতে পারেন বলে যুক্তি দিতে দলটির পক্ষে পক্ষভুক্ত হয়েছেন ৪৭ জন।

২০১৩ সালের ১ আগস্ট জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল ও অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন হাইকোর্ট। এরপর ২০১৮ সালের ৭ ডিসেম্বর বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। পরে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের সারসংক্ষেপ জমা দেয় জামায়াতে ইসলামী।

সাবস্ক্রাইব
Notify of
guest
0 মন্তব্য
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন