বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় নিহত ১১৪টি লাশ রায়ের বাজার কবরস্থান থেকে উত্তোলনের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। পরিচয় শনাক্তের জন্য সোমবার (৪ আগস্ট) ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ মোস্তাাফিজুর রহমান এ আদেশ দেন।
আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর মোহাম্মদ শামসুদ্দোহা সুমন এ তথ্য জানান। জানা যায়, মোহাম্মদপুর থানার উপপরিদর্শক মো. মাহিদুল ইসলাম লাশ উত্তোলন চেয়ে এ আবেদন করেন।
ওই আবেদনে উল্লেখ করা হয়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে বিভিন্ন তারিখ ও সময়ে ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন এলাকায় বিভিন্ন বয়সের নারী ও পুরুষ মৃত্যু বরণ করেন। যাদের মধ্যে ১১৪ জন অজ্ঞাতনামা মরদেহকে অশনাক্ত হিসেবে রায়ের বাজার কররস্থানে দাফন করা হয়েছে। ভবিষ্যতে আইনতগত পদক্ষেপ গ্রহণ এবং মৃতদেহ শনাক্তকরণের জন্য লাশ যথাযথ আইনী প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কবর হতে উত্তোলন করা প্রয়োজন।
এসব লাশ পোস্টমর্টেম রিপোর্ট প্রস্তুত, মৃত দেহের ডিএনএ সংগ্রহের মাধ্যমে পরিচয় নিশ্চিত হতে হবে। এছাড়া আইনি কার্যক্রম শেষে ডিএনএ প্রোফাইলিং এর মাধ্যমে পরিচয় নিশ্চিতকরণের পর পরিবারের চাহিদা মোতাবেক মৃতদেহ তাদের পরিবারের নিকট, হস্তান্তরের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।
এরপর আদালত আবেদনসহ নথি পর্যালোচনা করেন। সার্বিক পর্যালোচনা শেষে আদালত আবেদনটি মঞ্জুর করেন। একইসঙ্গে ১৮৯৮ সালের ফৌজদারি কার্যবিধি এর ১৭৬(২) ধারার বিধান অনুযায়ী একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ঢাকার জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এর আগে অজ্ঞাত সেই লাশগুলো উত্তোলন করার কথা থাকলেও অনিবার্য কারণে সেই কার্যক্রম স্থগিত করা হয়। পরবর্তীতে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মোহাম্মদপুর জোনের এডিসি জুয়েল রানা সংবাদ মাধ্যমকে জানান, অনিবার্য কারণবশত আজকে রায়েরবাজার কবরস্থান থেকে লাশ উত্তোলন ও ডিএনএ প্রোফাইল সংরক্ষণের কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে।
তারও আগে গত ২ আগস্ট রায়েরবাজার কবরস্থানে গণকবর পরিদর্শন যান স্বরাষ্ট্র উপদষ্টো লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। পরে তিনি সাংবাদিকদের জানান, এখানে ১০০ জনের ওপরে দাফন করা হয়েছে। তাদের অনেককে কিন্তু শনাক্ত করা যায়নি। মরদেহগুলো ডিএনএ টেস্টের মাধ্যমে শনাক্ত করবো।