জুলাই গণঅভ্যুত্থানে রাজধানীর সরকারি আলিয়া মাদরাসার ছাত্র সাইফুদ্দিনকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে ১৪ অভিনয়শিল্পীর বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। মামলায় আসামি করা হয়েছে ১৫ জন সাংবাদিক এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য, শিক্ষকসহ ২০১ জনকে। মামলার প্রধান আসামি ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম (সিএমএম) আদালতে গত ২০ মার্চ এ মামলার আবেদন করেছিলেন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার কমিশনের বাংলাদেশ বিষয়ক প্রেসিডেন্ট ও তিনি ফ্যাসিবাদ উৎখাত আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির প্রধান সমন্বয়ক এম এ হাশেম রাজু।
এ আবেদনের ওপর শুনানি নিয়ে বুধবার (৩০ এপ্রিল) রাজধানীর শাহবাগ থানাকে এজাহার হিসেবে মমলাটি গ্রহণ ও তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দিতে নির্দেশ দেন ঢাকা মহানগর হাকিম মো. মনিরুল ইসলাম।
মামলায় ১৪ জন অভিনয়শিল্পীকে আসামি করা হয়েছে। তারা হলেন— মামুনুর রশীদ, রিয়াজ, ফেরদৌস আহমেদ, চঞ্চল চৌধুরী, জায়েদ খান, সাজু খাদেম, মেহের আফরোজ শাওন, অরুণা বিশ্বাস, রোকেয়া প্রাচী, জ্যোতিকা জ্যোতি, শামীমা তুষ্টি, শমী কায়সার, আশনা হাবীব ভাবনা ও সোহানা সাবা।
মামলায় সাংবাদিক আসামিদের মধ্যে রয়েছেন— ইকবাল সোবহান চৌধুরী, আবেদ খান, দৈনিক কালবেলার সম্পাদক সন্তোষ শর্মা, এটিএন নিউজের মুন্নী সাহা, নঈম নিজাম, শ্যামল দত্তসহ ১৫ জন।
জাফর ইকবাল, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য মীজানুর রহমান, সাবেক ঢাবি অধ্যাপক মুনতাসির মামুনসহ ১৩ জন শিক্ষকও রয়েছেন আসামির তালিকায়। এছাড়া ইমরান এইচ সরকার ও লাকী আক্তারকেও মামলার আসামি করা হয়েছে।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে গত ৪ আগস্ট সকাল সাড়ে ১১টায় এম এ হাশেম রাজুর নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার থেকে একটি মিছিল পরীবাগ হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের সামনের মোড়ে পৌঁছায়। ওই সময় তাদের পথ আটকান ছাত্রলীগ, যুবলীগ, আওয়ামী লীগের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা। একই সঙ্গে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলিবর্ষণ, হাত বোমা, পেট্রোল বোমা ও ককটেল বিস্ফোরণ করেন তারা।
মিছিল ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশের পিপার স্প্রে ও ছররা গুলিতে মাদরাসাছাত্র সাইফুদ্দিন মোহাম্মদ এমদাদের ডান চোখ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। একপর্যায়ে তিনি রাস্তায় লুটিয়ে পড়লে ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও পুলিশ সদস্যরা মারধর করতে থাকেন। এতে তিনি গুরুতর আহত হন।
এজাহারে আরও বলা হয়, অভিনয়শিল্পী রোকেয়া প্রাচী, মেহের আফরোজ শাওনসহ যাদের নাম মামলায় উল্লেখ রয়েছে তারা আওয়ামী সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলের যোদ্ধা।
তারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক, টুইটার, হোয়াটসঅ্যাপে ‘আলো আসবে’ গ্রুপে হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনরত ছাত্র-জনতার ওপর হত্যা ও নির্যাতন ‘গ্লোরিফাই’ করতে বিষোদ্গার ছড়ান।
এদিকে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময়ের ঘটনায় করা আরেকটি হত্যাচেষ্টা মামলায় সাবেক অভিনেত্রী সুবর্ণা মুস্তাফা, চিত্রনায়িকা অপু বিশ্বাস, নিপুণ আক্তারসহ ১৭ অভিনয়শিল্পীকে আসামি করা হয়েছে। গত ২৮ এপ্রিল রাজধানীর ভাটারা থানায় এ মামলা রেকর্ড হয়েছে।