নাসিম রুমি: এশিয়া কাপে সুপার ফোরের দ্বিতীয় ম্যাচে ভারতের কাছে বড় ব্যবধানে হার মেনেছে বাংলাদেশ। বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) রাতে দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস হেরে ভারত আগে ব্যাট করতে নেমে অভিষেক শর্মা, হার্দিক পান্ডিয়া ও শুভমান গিলের ব্যাটে ভর করে ৬ উইকেটে ১৬৮ রান সংগ্রহ করে। জবাব দিতে নেমে ১৯.৩ ওভারে সবকটি উইকেট হারিয়ে ১২৭ রানে থামে বাংলাদেশ। পরাজয় মানে ৪১ রানে।
আর এই জয়ে ফাইনাল নিশ্চিত করল ভারত। যেখানে অপেক্ষা বাড়ল বাংলাদেশের। কারণ, ফাইনালে যেতে আজ বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সুপার ফোরের শেষ ম্যাচে পাকিস্তানকে হারাতে হবে লিটন দাসের টিমকে। যদি জয় আসে তাহলেই কেবল ভারতের বিপক্ষে ফাইনালেও দেখা হবে তাদের।
রান তাড়া করতে নেমে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা ব্যর্থতার পরিচয় দেন। বাংলাদেশের কেবল দুজন ব্যাটসম্যান দুই অঙ্কের কোটায় রান করতে পেরেছেন। তার মধ্যে উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান সাইফ হাসান ৫১ বলে ৩টি চার ও ৫ ছক্কায় করেন ৬৯ রান। আর ওয়ান ডাউনে নামা পারভেজ হোসেন ইমন ২ চার ও ১ ছক্কায় করেন ২১ রান। বাকিদের কেউ ছুঁতে পারেননি দুই অঙ্কের ঘর।
বল হাতে ভারতের কুলদীপ যাদব ৪ ওভারে ১৮ রানে ৩টি উইকেট নেন। জাসপ্রিত বুমরাহ ৪ ওভারে ১৮ রানে ২টি ও বরুণ চক্রবর্তী ৪ ওভারে ২৯ রানেন নেন ২টি উইকেট।
তার আগে ব্যাট করতে নেমে প্রথম ৩ ওভারে মাত্র ১৭ রান তোলে ভারত। তানজিম হাসান সাকিব প্রথম ওভারে মাত্র ৩ রান দেন। নাসুম আহমেদ দ্বিতীয় ওভারে দেন ৭ রান। পরের ওভারে তানজিম দেন ৭ রান। এই তিন ওভারে বেশ নড়বড়ে ও অস্বস্তিকর ব্যাটিং করেন অভিষেক শর্মা ও শুভমান গিল।
এরপর অবশ্য খোলস ছেড়ে বের হন তারা। নাসুমের করা চতুর্থ ওভারে গিল-অভিষেক দুটি ছক্কা ও এক চারে তোলেন ২১ রান। পঞ্চম ওভারে মোস্তাফিজকে দুই ছক্কা মেরে অভিষেক তোলেন ১৭ রান। এরপর সাইফউদ্দিনের ওভারে চারটি চার মেরে অভিষেক তোলেন আরো ১৭ রান।
প্রথম তিন ওভারে যেখানে ১৭ রান ও পরের তিন ওভারে সেটি হয়ে গেল ৫৫! এর জোরেই বিনা উইকেটে পাওয়ার প্লেতে ৭২ রান তুলে ফেলে সূর্যকুমারের টিমমেটরা।
সপ্তম ওভারে রিশাদ হোসেন বোলিংয়ে এসে গিলকে ফিরিয়ে ভাঙেন বিপদজ্জনক হয়ে ওঠা এই জুটি। রিশাদকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে লং অফে তানজিমের হাতে ধরা পড়েন গিল; তার তার স্কোর ১৯ বলে ২টি চার ও ১ ছক্কায় ২৯ রান।
এরপর অবশ্য নির্দিষ্ট বিরতিতে উইকেট হারিয়ে ভারতের রানের চাকা কিছুটা থেমে যায়। তবে অভিষেক যতক্ষণ ছিলেন ততক্ষণ মেরে খেলে যান। নবম ওভারের প্রথম বলে রিশাদ আবার উইকেট নেন। এবার ফেরান শিভম দুবেকে (৩)। তাতে ১০ ওভার শেষে ভারতের রান দাঁড়ায় ২ উইকেটে ৯৬। ১১তম ওভারে সাইফউদ্দিন আবার বোলিংয়ে আসেন। এবার এক ছক্কা ও এক চারে অভিষেক তোলেন ১৬ রান। তাতে মাত্র ৩৭ বলে ৬টি চার ও ৫ ছক্কায় তার রান হয়ে যায় ৭৫।
১২তম ওভারের প্রথম বলে ভয়ংকর এই ব্যাটসম্যান রান আউট হলে বাংলাদেশ শিবিরে স্বস্তি নামে। এই ওভারের ষষ্ঠ বলে অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদবকে উইকেটের পেছনে জাকের আলীর হাতে ক্যাচ বানিয়ে ফেরান মোস্তাফিজ। তিনি ৫ রানের বেশি করতে পারেননি।
গিল, দুবে, অভিষেক ও সূর্য ফিরলেও দাঁড়িয়ে যান হার্দিক পান্ডিয়া। তিনি সুযোগ পেলেই মারতে থাকেন।
১৫তম ওভারের তৃতীয় বলে তিলক ভার্মাকে ফেরান তানজিম সাকিব। তিলক এই মাচে ৭ বল থেকে মাত্র ৫ রান তুলতে সক্ষম হন। তবে পুষিয়ে দেন হার্দিক। তিনি ২৯ বলে ৪টি চার ও ১ ছক্কায় ৩৮ রান করে ইনিংসের শেষ বলে আউট হন। তার উইকেটটি নেন সাইফউদ্দিন।
৬ উইকেট হারিয়ে ভারতের রানের রথ থামে ১৬৮-তে। এই স্কোর বাংলাদেশের ক্রিকেট ভক্তদের জন্য বেশ আশা জোগায়। আগের ম্যাচে একই স্কোর তাড়া করে শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে টি-টোয়েন্টির ক্লাসিক ম্যাচের নজির স্থাপন করেছিলেন লিটনরা। তবে ভারতকে তাড়া করতে নেমে শুরু থেকে নড়বড়ে ব্যাটিংয়ের কারণে অধরাই থেকে গেল শেষ হাসিটা। এখন অপেক্ষা পাকিস্তানের মুখোমুখি হওয়া।