নাসিম রুমি: টাইগারদের কাছে টানা দুই ম্যাচে হেরে তিন ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজ খুঁইয়েছে সফরকারী পাকিস্তান। এদিন টার্গেট তাড়ায় ব্যাটিংয়ে নেমে টাইগারদের বোলিং তোপে পড়ে মাত্র ১৫ রানে ৫ উইকেটে হারায় পাকিস্তান। শেষ পর্যন্ত ১৯.২ ওভারে ১২৫ রানে অলআউট হয়ে যায়। এ জয়ে ২-০ ব্যবধানে জিতে সিরিজ নিশ্চিত করে বাংলাদেশ।
গতকাল মঙ্গলবার রাতে মিরপুরে বাংলাদেশের দেওয়া ১৩৪ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে একটা পর্যায়ে ৪৭ রানে ৭ উইকেট পড়ে যায়। খেলার এমন অবস্থায় ম্যাচ থেকে কার্যত ছিটকে যায় সফরকারীরা।
সেই অবস্থা থেকে দলকে গর্ত থেকে টেনে খেলায় রোমাঞ্চ ফেরান ফাহিম আশরাফ ও আব্বাস আফ্রিদি। অষ্টম উইকেটে ২৭ বলে তারা ৪১ রানের জুটি গড়েন।
আফ্রিদি ১৩ বলে ১৯ রান করে আউট হওয়ার পরও হাল ছাড়েননি ফাহিম আশরাফ।
এরপর জুটি গড়েন এই ম্যাচে অভিষেক হওয়া তরুণ পেসার আহমেদ দানিয়ালের সাথে। নবম উইকেটে ১৭ বলে তারা ৩৩ রানের জুটি গড়ে দলকে জয়ের দুয়ারে নিয়ে যান।
জয়ের জন্য শেষ দিকে ৭ বলে পাকিস্তানের প্রয়োজন ছিল মাত্র ১৩ রান।
খেলার এমন যখন অবস্থা ১৯তম ওভারের একিবারে শেষ বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন ফাহিম আশরাফ। তার বিদায়ে ম্যাচ জয়ের আশা ছেড়ে দেয় পাকিস্তান! মূলত তার ব্যাটেই জয়ের আশা দেখেছিল। কিন্তু ফাহিম আশরাফ আউট হওয়া শেষ আশাটুকুও শেষ হয়ে যায়!
শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে মাঠে নামেন পেসার সালমান মিরাজ। উইকেটের অপর প্রান্তে ছিলেন ১৩ রানে অপরাজিত দানিয়াল। তিনি ইনিংসের শেষ ওভারে মোস্তাফিজের করা প্রথম বলে বাউন্ডারি হাকিয়ে দলকে জয়ের স্বপ্ন দেখান।
কিন্তু পরের বলে মিড উইকেটের ওপর দিয়ে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে সীমানার কাছে ধরা পরেন দানিয়াল। তার উইকেট হারিয়ে ১৯.২ ওভারে ১২৫ রানে অলআউ হয় পাকিস্তান। ৮ রানের জয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ জয়ের ইতিহাস গড়ে বাংলাদেশ।
ম্যাচ হারলেও ফাহিম আশরাফ, আব্বাস আফ্রিদি এবং দানিয়ালের অবিশ্বাস্য ব্যাটিংয়ে ম্যাচে রোমাঞ্চ ফেরায় খুশি পাকিস্তানের অধিনায়ক সালমান আলি আগা।
তাইতো খেলা শেষে পাকিস্তানের অধিনায়ক বলেন, ১৫ রানে ৫ উইকেট পতনের পর খেলাটিকে গভীরে নিয়ে যাওয়ার জন্য ফাহিম আশরাফকে ধন্যবাদ। সে যেভাবে ব্যাটিং করেছে তা এক কথায় অসাধারণ। সে খেলাটি প্রায় টাইগারদের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছিল। এ জন্য তাকে অভিনন্দন। দর্শকদের জন্য খেলাটি রোমাঞ্চকর ছিল।
তিনি আরও বলেন, দল হিসেবে আমরা এমন রোমাঞ্চকর খেলা উপহার দিতে চাই। আমরা ম্যাচে হারলেও হাল ছেড়ে দেইনি। ফাহিম আশরাফ, আব্বাস আফ্রিদি ও দানিয়ালের প্রচেষ্টা আমাকে মুগ্ধ করেছে। আমি সতীর্থদের কাছ থেকে এটাই আশা করি। যে পরিস্থিতিতেই থাকি না কেন, হাল ছেড়ে দেওয়া যাবে না।
পাকিস্তানের অধিনায়ক বলেন, শুরু থেকেই মনে হয়েছে আমরা ম্যাচ জিততে পারব। সেই বিশ্বাস আমাদের দলের সবার মধ্যে রয়েছে। আমি আমার দলের সবার কাছ থেকে এই ধরণের বিশ্বাস চাই। আমি মনে করি এই খেলাটি দেখার জন্য দর্শকরা যে টাকা খরচ করেছেন; তা বৃথা যায়নি।
এর আগে সিরিজের প্রথম ম্যাচে পাকিস্তানকে ৭ উইকেটে হারায় বাংলাদেশ।