English

27.5 C
Dhaka
শুক্রবার, জুলাই ৪, ২০২৫
- Advertisement -

শচীনের জন্মদিন আজ: ৫২ পেরিয়ে পা দিলেন ৫৩-তে

- Advertisements -

নাসিম রুমি: ‘দেখে যাও, ছেলেটা ঠিক আমার মতো ব্যাটিং করছে’, স্ত্রী জেসি মার্থা মেঞ্জিসকে ডেকে যার ব্যাটিং দেখতে বলেছিলেন স্যার ডোনাল্ড ব্র্যাডম্যান, সেই ছেলেটির আজ জন্মদিন। ৫২ পেরিয়ে পা দিলেন ৫৩-তে।

ছেলেটির নাম শচীন টেন্ডুলকার। শচীন দেব বর্মণের গুণমুগ্ধ ভক্ত তার বাবা রমেশ টেন্ডুলকার ছেলের নাম রেখেছিলেন বাঙালি সুরস্রষ্টার নামে। ২৪ এপ্রিল ১৯৭৩ এ বোম্বেতে (বর্তমান মুম্বাই) জন্ম এই গ্রহের প্রথম ব্যাটার হিসাবে ১০০ সেঞ্চুরির মালিক শচীনের।

ব্র্যাডম্যান পরে নিজের ৯০তম জন্মদিনে শচীনকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন নিজের সিডনির ১৭২ ফ্রেডেরিক স্ট্রিটের বাড়িতে। ১৯৯৮ সালে। স্বভাবতই দুই ক্রিকেট লিজেন্ডের কথোপকথন ছিল ব্যাটিংয়ের খুঁটিনাটি নিয়ে। শচীনের টেকনিক, আঁটোসাঁটো ব্যাটিং, স্ট্রোকের সুরভি ছড়ানোর অনায়াস দক্ষতা, তার নান্দনিক কভার ড্রাইভে নিজের ব্যাটিংয়ের ছায়া দেখতে পেয়েছিলেন ব্র্যাডম্যান।

বাবা ছিলেন কবি। অধ্যাপক। মা বিমা কোম্পানির চাকুরে। শচীনের তখন ১১। কাকডাকা ভোরে বিছানা ছেড়ে ৩১৫ নম্বর বাসে বান্দ্রা ইস্টের বাড়ি থেকে তার গন্তব্য শিবাজি পার্ক। সেখানে রমাকান্ত আচরেকার স্যারের কাছে ক্রিকেটে প্রথম হাতেখড়ি শচীনের। সকাল সাড়ে ৭টায় শুরু হতো ব্যাটিং অনুশীলন। চলত ঝাড়া দুই ঘণ্টা। শচীনের ব্যাটিংয়ের সময় ফিল্ডার থাকতেন ৭০ জন। আচরেকার স্যারের সব শিক্ষার্থীর কাজ ছিল শচীনকে রান করতে না দেওয়া। আর শচীনের জন্য আবশ্যক ছিল লফটেড শটের লোভ সংবরণ করে রান চুরি করে নেওয়া। এরপর গ্লাভস-প্যাড পরে মাঠে কয়েক চক্কর।

আচরেকার স্যার মিডল স্টাম্পে এক রুপির কয়েন রেখে দিতেন। পুরো ব্যাটিং সেশনে অপরাজিত থাকলে শচীনের পকেটে যেত ওই কয়েন। আজও তার সংগ্রহে আচরেকার স্যারের কাছ থেকে পুরস্কার হিসাবে পাওয়া অগুনতি কয়েন। বিকালে ৩১৫ নম্বর বাসে বাসায় ফিরে কলোনির নিচেও বন্ধুদের সঙ্গে চলত ক্রিকেট ম্যাচ। এমনকি, ঘুমের মধ্যেও ‘ক্রিকেট-ক্রিকেট’ বলে চিৎকার করতেন।

আচরেকার স্যার এভাবেই তৈরি করেছিলেন শচীনকে। মাত্র ১৬ বছর বয়সে শূন্য রান দিয়ে যার টেস্ট ক্যারিয়ার শুরু, ৪০ এ অবসর, সৌরভ গাঙ্গুলীর সেই ‘ছোটা বাবু’, ২০১২ সালের ১৬ মার্চ মিরপুরে বিশ্বের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসাবে শততম সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে ইতিহাসে চিরতরে ঠাঁই করে নিয়েছেন। তার অমন মাইলফলক ছোঁয়া দিবা-রাত্রির ওডিআইতে বাংলাদেশ জিতেছিল পাঁচ উইকেটে।

‘দ্য ওয়েস্ট ল্যান্ড’ এর কবি টিএস এলিয়ট এপ্রিলকে কেন নিষ্ঠুরতম মাস বলেছিলেন, কে জানে। এই মাসে শচীন থেকে শুরু করে জ্যাকি চ্যান, মুকেশ আম্বানি, আল্লু অর্জুন-আরও কত নক্ষত্রের জন্ম।

এ-ও এক বিস্ময় যে, শচীন একজন ফাস্ট বোলার হতে চেন্নাইয়ের এমআরএফ পেস ফাউন্ডেশনে গিয়েছিলেন। তার উচ্চতা পেসার হওয়ার জন্য আদর্শ নয়, এই কারণ দেখিয়ে কিউই কিংবদন্তি রিচার্ড হ্যাডলি তাকে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন।

সেই প্রত্যাখ্যানই শাপেবর হয় শচীনের জন্য। ক্রিকেটের জন্যও। শচীন ছিলেন ডানহাতি। কিন্তু লেখেন বাঁ হাতে। বাবা ছিলেন শচীন (দেব বর্মণ) ভক্ত। তিনি শোনেন কিশোর কুমারের গান। লং ড্রাইভে তার গাড়িতে বাজে– ‘জিন্দেগি কে সাফার মেঁ গুজার যাতে হ্যায় জো মাকান, ও নাহি আতে, ও ফির নাহি আতে…’

জীবনের বাইশ গজে কাটিয়ে দেওয়া ৫২ বছরও আর ফিরে পাবেন না শচীন। অসংখ্য রেকর্ড-রান, ১০০ সেঞ্চুরি, কীর্তি-গরিমা অক্ষয় থাকবে।

The short URL of the present article is: https://www.nirapadnews.com/kr3g
Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন