English

29.2 C
Dhaka
শুক্রবার, জুলাই ৪, ২০২৫
- Advertisement -

বগুড়ার শিবগঞ্জে প্রতিবন্ধীদের লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে উধাও ভুয়া সংস্থা

- Advertisements -

বগুড়ার শিবগঞ্জে মেঘনা প্রতিবন্ধী সংস্থার নামে সংঘবদ্ধ এক চক্র কর্তৃক লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, শিবগঞ্জ উপজেলার কিচক ইউনিয়নের বেলতলী বাজারে তথাকথিত একটি অফিস দিয়ে এলাকার সহজ-সরল প্রতিবন্ধী নারী-পুরুষদের টার্গেট করেন মেঘনা প্রতিবন্ধী সংস্থার নামে মোঃ মুক্তার হোসেন নিজে সভাপতি হয়ে প্রায় ৩০০ প্রতিবন্ধীদের কার্ড দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে সদস্য তৈরি করেন। প্রথমে কথা ছিলো প্রতিবন্ধী সদস্য হতে শুধু ৫০ টাকা ভর্তি ফি দিতে হবে। কিন্তু সদস্য করে বিভিন্ন কৌশলে হাতিয়ে নেন টাকা। ভর্তি করে প্রত্যেককে দেওয়া হয় বাজারের ২টাকা দামের পাশ বহি। প্রতি সপ্তাহ ও মাসে সদস্যদের কাছ থেকে আদায় করা হয় ৫০-থেকে ১০০ টাকা।

এখানেই শেষ নয়, প্রতারক মোঃ মুক্তার হোসেনের থাবা পড়ে প্রতিবন্ধী স্মার্ট কার্ড দেওয়ার নামে সদস্য প্রতি নেওয়া হয় ৩০০ টাকা করে। প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ড দেওয়ার নামে প্রতি সদস্য ১০০০ টাকা। এভাবে ৩০০ প্রতিবন্ধী সদস্যদের জিম্মি করে প্রতারক মোঃ মুক্তার হোসেন হাতিয়ে নেয় লাখ লাখ টাকা। অনুসন্ধানে কিচক ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা যায়, প্রায় অর্ধশতাধিক প্রতিবন্ধী যারা অনেকেই পঙ্গু ও বাকপ্রতিবন্ধী। তাদের বেশিরভাগ পেশা ভিক্ষাবৃত্তি। তারপরেও এদের কাছ থেকে প্রতারনা করে টাকা গুনতে প্রতারক মুক্তারের হৃদয় কাঁপানি। আর এই প্রতারনা চালিয়ে যাচ্ছেন প্রায় ১থেকে দেড় বছর ধরে।

মুক্তার হোসেনের দেওয়া প্রতিশ্রুতি নির্ধারিত সময়ে সুবিধা না পেয়ে সম্প্রতি করোনা ভাইরাসে রোজগারহীন অনেকেই টাকা ফেরত চান। এরপর মুক্তার হোসেনের শুরু হয় তালবাহানা। কে? এই মুক্তার হোসেন! মুক্তার হোসেন এর বাড়ি কিচক হরিপুর গ্রামে। তিনি নিজেও একজন প্রতিবন্ধী সুবিধাভোগী। সে শিবগঞ্জ সদর ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোক্তাকর্মী। ঘুষ জালিয়াতির কারনে একাধিক পরিষদ থেকে তিনি চাকুরি হারিয়ে এখন এই পরিষদের কর্মী।

প্রতিবন্ধী শাহাজুল নামে এক ব্যক্তি টাকা ফেরত চাওয়াকে কেন্দ্র করেই বিষয়টি জানাজানি হয়। পরে মুক্তার হোসেন প্রতিবন্ধীদের গচ্ছিত(জমানো) টাকা ফেরত দেওয়ার নামে অনেকের পাশ বহি ডকুমেন্ট জমা নেয়। পরে ভুক্তভোগীরা মুক্তার হোসেনের সাথে যোগাযোগ করতে চাইলেও মুক্তার হোসেন তালবাহানা করে এড়িয়ে চলেন। তখনই তারা বোঝেন এটা সম্পূর্ণ ভুয়া একটি প্রতিষ্ঠান। তাই তারা টাকা ফেরত চান।

প্রতিবন্ধী মুঞ্জু মিয়া, তাহেরা বেগম, আলেমন বিবি, মনিকা বিবি, ওলেদা ও ছফুরা বিবি জানান, মেঘনা প্রতিবন্ধীর সভাপতি মুক্তার হোসেন আমাদের বিভিন্ন সুবিধা দেখিয়ে জমাকৃত বহি দিয়ে টাকা নিয়েছে। আমরা আমাদের দেওয়া টাকা ফেরত চাই। তারা এই প্রতারকের বিচার চায়।

একই দাবীতে কিচক হরিপুর হিন্দু মালিপাড়ার হিন্দু সম্প্রদায় মেঘনা প্রতিবন্ধী সংস্থার সদস্যরা। তারাও টাকা ফেরতের চেষ্টায় আছেন। ভুক্তভোগী নারী-পুরুষরা টাকা ফেরত চেয়ে বিক্ষোভ করে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।

এ ব্যাপারে মেঘনা প্রতিবন্ধী সংস্থার সভাপতি মোঃ মুক্তার হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, সমিতির সঞ্চয় গ্রহণ করা হয়েছে স্বীকার করে বলেন অন্যকোন সুবিধা দেওয়ার কথা কাউকে বলা হয়নি। তিনি পত্রিকায় নিউজ না করার জন্য এ প্রতিবেদকে অনুরোদ করেন।

এ ব্যাপারে কিচক ইউপি চেয়ারম্যান এবিএম নাজমুল কাদির শাহজাহান চৌধুরী জানান, বিষয়টি আমি শুনেছি এবং এ ধরনের কাজ না করতে মুুক্তার হোসেনকে নিষেধ করেছি৷ বিষয়টি আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে তিনি জানান।

The short URL of the present article is: https://www.nirapadnews.com/l7q3
Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ

আল কোরআন ও আল হাদিস

- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন