স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কলহের জেরে মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইরে মীম আক্তার নামে এক বছর বয়সী শিশুকন্যাকে পানিতে চুবিয়ে ও হাত পা কেটে হত্যা করার দায় স্বীকার করেছেন বাবা। ওই পাষণ্ড বাবার নাম আল-আমিন (৩০)। সে উপজেলার চান্দহর ইউনিয়নের ফতেপুর গ্রামের আবদুল হালিমের ছেলে। গত সোমবার (১৬ নভেম্বর) বিকালে শিশু সন্তান হত্যার কথা স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন তিনি। পরে আদালতের নির্দেশে তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়।
থানা পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, তিন বছর আগে সিঙ্গাইর উপজেলার চকবাড়ি ওয়াইজনগর গ্রামের মৃত রহমত আলীর মেয়ে হোসনে আরাকে বিয়ে করেন আল-আমিন। বিয়ের পর থেকেই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বনিবনা হচ্ছিল না। প্রায়ই জগড়াঝাটি হতো। গত ৩ নভেম্বর স্বামী আল-আমীন স্ত্রী হোসনে আরাকে মারধর করে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়। একই দিন এক বছর বয়সী নিজের ঔরসজাত শিশু সন্তান মীম আক্তারকে নিয়ে বাড়ি থেকে উধাও হয়ে যান তিনি। অনেক খোঁজাখুজি করেও স্বামী-সন্তানের সন্ধান না পাওয়ায় ৪ নভেম্বর থানায় লিখিত অভিযোগ করেন হোসনে আরা। ৬ নভেম্বর সন্ধ্যায় কালিগঙ্গা নদীর পাড় থেকে হাত-পা বিহীন ওই শিশুর অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এরপর শিশুটির লাশের ময়নাতদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।
এ ঘটনায় ওই দিনই স্বামী আল-আমিন, শ্বশুর আবদুল হালিম, শাশুড়ি নাছিমা বেগমসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে থানায় হত্যা মামলা করেন শিশুটির মা হোসনে আরা। মামলার অন্য আসামিরা হলেন আল-আমীনের ভাই আজিজুল (৩৫), বোন মুক্তা আক্তার (২০) ও স্বজন ছাবিনা আক্তার (৩২)।
এদিকে উদ্ধারকৃত লাশ মীম আক্তারের কি-না তা নিশ্চিত হওয়ার জন্য আদালতের নির্দেশে রবিবার কবরস্থান থেকে লাশ উত্তোলন করা হয়। পরে নমুনা সংগ্রহ করে ডিএনএ টেস্টের জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরীক্ষাগারে (ল্যাবরেটরি) পাঠানো হয়। এ সময় উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) নিগার সুলতানা উপস্থিত ছিলেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও সিঙ্গাইর থানাধীন শান্তিপুর তদন্তকেন্দ্রের এসআই ফরহাদুজ্জামান ভূইয়া বলেন, ঘটনার পর থেকেই নিহত শিশুর পিতা আল-আমিনসহ মামলার অন্য আসামিরা বাড়ি-ঘর ছেড়ে পালিয়ে যান। গত রবিবার (১৫ নভেম্বর) সোর্স ও তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় মামলার প্রধান আসামি আল-আমীনকে উপজেলার সিরাজপুর-পাড়াগ্রাম এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে সোমবার আদালতে হাজির করা হয়। নিজের শিশু সন্তান মীম আক্তারকে পানিতে চুবিয়ে ও হাত-পা কেটে হত্যার কথা স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন তিনি। পরে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালতের বিচারক।
The short URL of the present article is: https://www.nirapadnews.com/eylt
সাবস্ক্রাইব
নিরাপদ নিউজ আইডি দিয়ে লগইন করুন
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন