সিলেটের কানাইঘাটে ১০ মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীর গায়ে পেট্রল ঢেলে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে হোসেন আহমদ চৌধুরী আক্তারকে (৪৫) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এতে আহত অবস্থায় ওই নারীকে ওসমানী হাসপাতালে ভর্তি করে জরুরী অপারেশন করেও তার গর্ভজাত কন্যা সন্তানকে চিকিৎসকেরা বাঁচাতে পারেননি। চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত সন্তান প্রসব করেন।
সোমবার (১৪ জুলাই) দুপুরে উপজেলার সাতবাঁক ইউনিয়নের চরিপাড়া গ্রামে আত্মীয়ের বাড়ি থেকে স্থানীয় জনতার সহযোগিতায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
অগ্নিদগ্ধ গৃহবধূর নাম সাবানা বেগম (২০)। এদিকে অভিযুক্ত হোসেন আহমদ চৌধুরী আক্তার সীমান্তবর্তী লক্ষীপ্রসাদ পূর্ব ইউনিয়নের কান্দলা গ্রামের বীরমুক্তিযোদ্ধা মৃত খাইরুল আলম চৌধুরী ছেলে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আক্তারের সঙ্গে বছরখানেক আগে একই গ্রামের সাবানা বেগমের বিয়ে হয়। গত শনিবার রাত ৮টার দিকে ১০ মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী সাবানা বেগমকে আনতে শ্বশুরবাড়িতে যান হোসেন আহমদ। কিন্তু তার স্বামীর সঙ্গে অসুস্থ সাবানাকে তার বাড়িতে পাঠাতে রাজি হননি শাশুড়ি। এতে খেপে গিয়ে শ্বশুরবাড়ি থেকে বেড়িয়ে যান তিনি। কিছুক্ষণ পরে স্থানীয় কান্দলা নয়াবাজার থেকে টাইগারের বোতলে পেট্রল কিনে ফের শ্বশুরবাড়িতে যান তিনি। সেখানে বিছানায় শুয়ে থাকা অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী সাবানার শরীরে পেট্রল ছিটিয়ে গ্যাস লাইটার দিয়ে আগুন ধরিয়ে দ্রুত পালিয়ে যান তিনি। সাবানার চিৎকারে পরিবারের সদস্যরা ও আশপাশের লোকজন ছুটে এসে আগুন নেভালেও তার শরীরের অনেক অংশ পুড়ে যায়। গুরুতর দগ্ধ অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। গতকাল সকালে অগ্নিদগ্ধ সাবানার একটি মৃত কন্যাসন্তানের জন্ম হয়।
ভিকটিম সাবানার পিতা আব্দুল জব্বার বলেন, বছর খানেক পূর্বে আক্তারের সঙ্গে তার মেয়ের বিয়ে দেন। শনিবার রাত ৮টার দিকে আক্তার যখন তার বাড়িতে যায় তখন তিনি বাড়িতে ছিলেন না। মেয়ে সাবানার শরীরের আক্তার পেট্রোল ছিটিয়ে আগুন ধরিয়ে পালিয়ে যায়। বর্তমানে আমার মেয়ে হাসপাতালে মৃতুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে। আমি এর সুষ্টু বিচার চাই।
কানাইঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল আউয়াল জানান, স্ত্রীকে পেট্রোল ছিটিয়ে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় স্বামী আক্তারকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ঘটনায় ভিকটিমের পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।