খাগড়াছড়ির গুইমারা উপজেলায় গুলিতে তিনজন নিহত হয়েছেন। তবে নিহতদের বিস্তারিত পরিচয় এখনও জানা যায়নি। এই ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও অন্তত তিনজন।
রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম রেঞ্জের উপমহাপুলিশ পরিদর্শক (ডিআইজি) আহসান হাবিব পলাশ। তিনি জানান, নিহতদের মরদেহ হাসপাতালে রয়েছে, তবে কার গুলিতে কীভাবে এ ঘটনা ঘটেছে, তা এখনও স্পষ্ট নয়।
খাগড়াছড়ি জেলা সিভিল সার্জন মো. সাবের জানান, গুইমারা থেকে তিনজন পুরুষের মরদেহ জেলা হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। সোমবার সকালে ময়নাতদন্ত করা হবে। এছাড়া গুইমারা থেকে আহত অবস্থায় চারজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
গত মঙ্গলবার এক পাহাড়ি কিশোরী দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হওয়ার প্রতিবাদে ‘জুম্ম-ছাত্র জনতা’ ব্যানারে শনিবার সকাল থেকে পার্বত্য এলাকায় অবরোধ কর্মসূচি চলছে। এই অবরোধের জেরে খাগড়াছড়ি-চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি-রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ি-সাজেক সড়কে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।
রোববার দুপুরে গুইমারার রামেসু বাজারে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে বাজারের বেশ কয়েকটি দোকান ও পাশে থাকা বসতবাড়ি পুড়ে যায়। ঘটনাস্থল চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি সড়ক থেকে মাত্র ১০০ গজ দূরে।
বাজারে আগুন দেওয়ার ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে, যেখানে আগুনে দোকানপাট পুড়তে দেখা যায়। বাজারটির অধিকাংশ দোকান পাহাড়িদের বলে জানা গেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রোববার দুপুরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে অবরোধকারীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও কথাকাটাকাটির এক পর্যায়ে গুলির ঘটনা ঘটে। মংসাজাই মারমা ও কংজরী মারমা নামে দুজন প্রত্যক্ষদর্শী দাবি করেন, শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান নেওয়ার সময় তাদের ওপর গুলি চালানো হয়। এরপর মুখোশ পরা লোকজন এসে বাজারে ও বাড়িঘরে লুটপাট চালায় এবং আগুন ধরিয়ে দেয়।
খাগড়াছড়ি সদরসহ গুইমারা উপজেলায় এখন থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এলাকাজুড়ে মোতায়েন রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। শহরের মোড়ে মোড়ে নিরাপত্তা বাহিনীর অবস্থান দেখা গেছে। অধিকাংশ দোকানপাট বন্ধ, চলাচলরত ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
গুইমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. এনামুল হক চৌধুরী জানান, পাহাড়ি ও বাঙালিদের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গেও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। পরিস্থিতি এখনো উত্তপ্ত, বিস্তারিত পরে জানানো হবে।