English

28 C
Dhaka
রবিবার, জুলাই ১৩, ২০২৫
- Advertisement -

জালিয়াতি করে ৪০ শিক্ষার্থীকে বৃত্তি দেওয়া সেই শিক্ষা কর্মকর্তা বরখাস্ত

- Advertisements -

এক দশক আগে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষার ফল জালিয়াতির অভিযোগে রাজশাহীর বোয়ালিয়া থানার তৎকালীন শিক্ষা কর্মকর্তা রাখী চক্রবর্তীকে সরকারি চাকরি থেকে চূড়ান্তভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। রাজশাহী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এ কে এম আনোয়ার হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, ওই ঘটনায় রাখী চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা ছিল। এ ছাড়া দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা আলাদা একটি মামলাও বর্তমানে আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। গত ২ জুলাই প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তদন্ত ও শৃঙ্খলা শাখা থেকে রাখী চক্রবর্তীর বরখাস্তের আদেশ জারি করা হয়। আদেশটি ৮ জুলাই তারা হাতে পেয়েছেন।

বরখাস্তের আদেশে উল্লেখ করা হয়, বিভাগীয় মামলায় রাখী চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে আনা অসদাচরণ ও দুর্নীতির অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮-এর ৪(৩)(গ) ধারা অনুযায়ী তাকে ‘চাকরি থেকে অপসারণ’ গুরুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে পূর্বের সাময়িক বরখাস্তের আদেশও প্রত্যাহার করা হয়েছে।

এর আগে ২০১৬ সালের ২৭ অক্টোবর একই বিধিমালার ৩(খ) ও ৩(ঘ) ধারায় তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করা হয়। মামলার জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

বিভাগীয় তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৫ সালে বোয়ালিয়া থানা শিক্ষা কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকাকালে নম্বর ফর্দ, গোপনীয় নথিপত্র ও কম্পিউটার ছিল রাখী চক্রবর্তীর নিয়ন্ত্রণে। তার অনুমতি বা অংশগ্রহণ ছাড়া নম্বর পরিবর্তন বা টেম্পারিং সম্ভব ছিল না। ওই সময় থানা এলাকার বিভিন্ন স্কুলের ৪০ জন শিক্ষার্থীর নম্বর জালিয়াতির মাধ্যমে বাড়িয়ে দেওয়া হয়। এর ফলে তারা বৃত্তি পায়। অভিভাবকদের অভিযোগের ভিত্তিতে বিষয়টি গণমাধ্যমে আসে। পরে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের উপপরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) সাইফুল ইসলাম তদন্ত করে মহাপরিচালকের কাছে প্রতিবেদন দাখিল করেন। সেই প্রতিবেদনের ভিত্তিতে তিনজন কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হয়।

তিন জনের মধ্যে শুধুমাত্র শিক্ষা কর্মকর্তা রাখী চক্রবর্তীকে চাকরি থেকে চূড়ান্তভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। তৎকালীন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল কাশেমকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়। তিনি রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা চেয়ে পুনরায় চাকরিতে ফিরলেও পরে আরেকটি পরীক্ষাসংক্রান্ত অভিযোগে আবারও বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়। তার বিরুদ্ধেও দুদকের মামলা চলমান। অপর কর্মচারী সোনিয়া রওশনকে বিভাগীয় মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয় এবং দুদকের মামলার অভিযোগপত্র থেকেও তার নাম বাদ দেওয়া হয়।

ঘটনার পর ভুক্তভোগী অভিভাবকেরা সংশোধিত ফল প্রকাশের দাবিতে আন্দোলনে নেমেছিলেন। তাদের দাবির মুখে ২০১৭ সালের ১১ এপ্রিল সংশোধিত ফল প্রকাশ করা হয়। এতে দেখা যায়, জালিয়াতির মাধ্যমে বৃত্তি পাওয়া ৪০ জন শিক্ষার্থীর বৃত্তি বাতিল করা হয়। যার মধ্যে ৩০ জন ট্যালেন্টপুল এবং ১০ জন ছিল সাধারণ গ্রেডে। সংশোধিত ফলাফলে রাজশাহী নগরীর শিমুল মেমোরিয়াল নর্থ সাউথ স্কুলের ১৫ শিক্ষার্থীর বৃত্তিও বাতিল করা হয়।

অভিযোগ রয়েছে, এই বিদ্যালয়ে কয়েকজন প্রভাবশালী শিক্ষক নেতা ও বিশিষ্ট ব্যক্তির সন্তানরা পড়াশোনা করতো। পরে বৃত্তির অর্থ ট্রেজারির মাধ্যমে সরকারকে ফেরত দিতে বলা হয়। এ বিষয়ে কথা বলতে রাখী চক্রবর্তীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তিনি বলেন, ‘এই বিষয়ে আমি এখন কথা বলতে ইচ্ছুক নই।’

The short URL of the present article is: https://www.nirapadnews.com/ipx0
Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন