English

30 C
Dhaka
বৃহস্পতিবার, মে ১৬, ২০২৪
- Advertisement -

ধুনটে রূপচাঁদার নামে প্রতারনা করে অবাধে বিক্রি হচ্ছে বিষাক্ত রাক্ষুসে মাছ পিরানহা

- Advertisements -

কারিমুল হাসান লিখন, ধুনটঃ রূপচাঁদা। সামুদ্রিক এই মাছটি দেখতে বেশ সুন্দর, নামটি শুনতেও অনেক ভালো শোনা গেলেও এই নামকেই পূজিঁ করে বগুড়ার ধুনট উপজেলা জুড়ে প্রত্যেক বাজার গুলোতে অবাধে বিক্রি হচ্ছে পিরানহা নামক বিষাক্ত মাছ। মৎস অধিদপ্তর ও প্রশাসনিক ভাবে এই মাছ উৎপাদন, বিপননসহ ক্রয় বিক্রয়ে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও, বাজার নিয়ন্ত্রনে হস্তক্ষেপ না থাকায় নির্ভয়ে চলছে কেনাবেচা। সহজলভ্য হওয়ায় স্বল্প মানুষের কাছে পিরানহা স্থান করে নিয়েছে রূপচাঁদা নামে। মৎসজীবিরা এ মাছ বিক্রির সুচনা লগ্ন থেকেই রূপচাঁদা নাম দিয়ে ক্রেতাদের সাথে প্রতারনা করে আসছে। গ্রামের খেটে খাওয়া স্বল্প শিক্ষিত কৃষিজীবিরা রূপচাঁদা না চেনা এবং পিরানহা মাছ সম্পর্কে ধারনা না থাকার কারনে নিজের স্বাস্থ্যঝুকিসহ প্রতারনার শিকার হচ্ছে।

Advertisements

পিরানহা মুলত একটি রাক্ষুসে মাছ। এ মাছের দাঁত গুলো মানুষের দাঁতের মতই দু চোয়ার বিশিষ্ট পরিপাটি। জিহ্বাও মানুষের মতই। এ মাছের খাদ্য চাহিদা বা ধরন অন্যান্য মাছের মত নয়। এরা অন্য মাছসহ রক্ত মাংসও খেতে পারে। বৈশিষ্টগত ভাবে বসবাসের স্থান ও দৈহিক কাঠামোর কিছু মিল থাকলেও অধিকাংশ মিল পিরানহা মাছে খুজে পাওয়া যায়না। সুযলা সুফলা নদীমাতৃক আমাদের সোনার বাংলাদেশে ২৬০ প্রজাতির স্বাদু পানির মাছ এবং ৪৭৫ প্রজাতির সামুদ্রিক মাছ রয়েছে। রাক্ষুসে মাছ নদীতে বা বদ্ধ জলাশয়ে প্রবেশ করলে হুমকির মুখে পড়ে বিলুপ্ত হতে পারে দেশীয় প্রজাতির মাছ। ইতিমধ্যেই অনেক মাছ বিলুপ্ত হয়েছে, দোদুল্যমানও রয়েছে অনেক। পিরানহা মাছের চর্বি শ্বাষ-প্রশ্বাষের বিঘ্ন ঘটায়।

Advertisements

এ মাছের বিষক্রিয়া পাকস্থলী নষ্ট করতে সক্ষম। এক তথ্যমতে, ১ বোতল এ্যালকোহলের চেয়ে পিরানহা মাছের ৫০ গ্রাম মাংস মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর। এরকম আরো বিভিন্ন দিক গবেষণা, বিবেচনা করে ২০০৮ সালের ফেব্রুয়ারী মাসে পিরানহা মাছ উৎপাদন, পরিবহন, বিপননসহ ক্রয় বিক্রয় নিষিদ্ধ করে সরকার। একুই কারনে আফ্রিকান মাগুর আমদানী, বিপনন নিষিদ্ধ করা হয় ২০১৪ সালে। কেননা এ মাছগুলো যদি মুক্ত জলাশয়ে চলে আসে তাহলে মৎস সম্পদের উপর হতে পারে মহা বিপর্যয়। শুধু তাই নয়, আফ্রিকান মাগুর ও পিরানহা মাছের রেণু ও পোনা আমদানী করলে জেল জরিমানার বিধান রেখে মৎস নিরোধ আইন ২০১৭ অনুমোদন দেয় মন্ত্রি পরিষদ। এই আইন অমান্য করলে ২ বছরের জেল ও ৫ লাখ টাকা জরিমানা অথবা উভয় দন্ডের বিধান রয়েছে।

অনুকুল পরিবেশ পেলে পিরানহা মাছ ৮ থেকে ১০ বছর পর্যন্ত বাঁচতে পারে। আশ্বার্যের বিষয় হলো এ মাছ যদি অবরুদ্ধ করে চাষ করা হয় এবং সেখানে যদি কোন মানুষ পড়ে যায় তাহলে পিরানহা জ্যান্ত মানুষকে খেয়ে সাবার করতে পারে। ৩০টি পিরানহা মাছ ১টি হরিণকে ১ ঘন্টায় খেয়ে শেষ করতে পারে। এই মাছের অবাধ বেচাকেনার দৃশ্য সবার দৃষ্টিতে থাকলেও নেই কোন আইনী ব্যবস্থা। বাজার ইজারাদারেরা দেখেও না দেখা। নিশ্চুপ থাকাটাই পিরানহা মাছ বিক্রিতে ইজারাদারদের সম্মতি। এখনই যদি প্রশাসনিক হস্তক্ষেপ না হয় তাহলে বিষাক্ত নিষিদ্ধ মাছ ক্রয় বিক্রয় আরো বৃদ্ধি পাওয়ার আশংকাসহ স্বাস্থ্য ও পরিবেশগত ঝুঁকি রয়েছে। মৎস খাতে জরুরী প্রশাসনের হস্তক্ষেপ চান সুশীল ও স্বাস্থ্য সচেতন নাগরিকগন।

সাবস্ক্রাইব
Notify of
guest
0 মন্তব্য
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন