কুমিল্লার তিতাসে পরকীয়া প্রেমিক নজরুলকে (৩৫) ৬ আগস্ট রাতে ফোনে ডেকে এনে নিজ ঘরে হত্যা করে হোসেন-স্মৃতি দম্পতি। পরে লাশটি চার টুকরো করে বাজারের ব্যাগে ভরে খালে ফেলে দেয়। পুলিশ খাল থেকে খণ্ডিত দুই হাত উদ্ধার করে। বাকি অংশ এখনো পাওয়া যায়নি।
এদিকে হত্যার চার দিন পর ঘর ধোয়ামোছা করে শনিবার রাতে খিচুড়ি পাকিয়ে মিলাদ পড়ায় হোসেন-স্মৃতি দম্পতি।
ঘটনাটি ঘটেছে তিতাস উপজেলার মজিদপুর গ্রামের দম্পতির নিজ বাড়িতে।
নিহত নজরুল একই উপজেলার শাহাবৃদ্ধি গ্রামের হানিফ ভূঁইয়ার ছেলে। আটককৃত খুনি দম্পতির স্বীকারোক্তি অনুযায়ী খাল থেকে দুটি হাত উদ্ধার করেছে তিতাস থানা পুলিশ।
রোববার দুপুর ১২টা থেকে শুরু করে বিকাল ৫টা পর্যন্ত উদ্ধার অভিযান চালিয়ে উপজেলার মজিদপুর ইউনিয়নের মজিদপুর গ্রামের উত্তর পাশের খাল থেকে স্থানীয় জেলে দিয়ে লাশের খণ্ডিত দুই হাত উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, যুবক নজরুলের সম্পূর্ণ লাশ উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। কারণ তার লাশটি চার টুকরো করে বস্তায় ভরে খালে ফেলে দিয়েছে। এর মধ্যে স্থানীয় জেলে দিয়ে একটি বস্তা উদ্ধার হয়েছে- যার মধ্যে লাশের খণ্ডিত দুই হাত পাওয়া গেছে। শরীরের বাকি অংশ ডুবুরি দিয়ে উদ্ধার করার চেষ্টা চলছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ৬ আগস্ট রাতে নিখোঁজ হন উপজেলার সাহাবৃদ্ধি গ্রামের মো. হানিফ ভূঁইয়ার ছেলে নজরুল ভূঁইয়া। এরপর ৮ আগস্ট তার বাবা হানিফ ভূঁইয়া তিতাস থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরি করেন।
পরে পুলিশ নিখোঁজ নজরুলের মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে রোববার (১০ আগস্ট) ভোরে উপজেলার মজিদপুর গ্রামের মৃত মজু মিয়ার ছেলে সিএনজি চালক মোহাম্মদ হোসেন (৩২) ও তার স্ত্রী স্মৃতিকে (২৭) জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা দুজনই নজরুলকে কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে হত্যার কথা স্বীকার করেন। এরপর লাশ চার টুকরো করে চার বস্তায় ভরে খালে ফেলে দেওয়ার কথাও জানান।
তারা আরও জানান, হত্যার চার দিন পর ঘর ধোয়ামোছা করে শনিবার রাতে খিচুড়ি পাকিয়ে মিলাদ পড়ায় খুনিরা।
তিতাস থানার ওসি শহিদ উল্যাহ বলেন, নিখোঁজ ডায়েরির সূত্র ধরে তদন্ত করে আমরা অভিযুক্তদের গ্রেফতার করেছি। তারা নজরুলের লাশ চার টুকরো করে চার বস্তায় ভরে খালে ফেলে দেওয়ার কথা স্বীকার করেছে। তাদের দেওয়া তথ্য মতে চারটি বস্তার মধ্যে একটি উদ্ধার করা হয়েছে; যার মধ্যে লাশের খণ্ডিত দুই হাত পাওয়া গেছে। বাকি তিনটি বস্তা উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।