English

39 C
Dhaka
মঙ্গলবার, এপ্রিল ৩০, ২০২৪
- Advertisement -

‘ফ্রি-ফায়ার গেম’ খেলে মানসিক সমস্যা, যে কাণ্ড ঘটালেন যুবক

- Advertisements -
Advertisements
Advertisements

নেত্রকোণার মোহনগঞ্জে মোবাইলে ফ্রি-ফায়ার গেম খেলে মানসিক ভারসাম্য হারানো হারেছ রাকিব (২০) নামের এক যুবক সড়কে থাকা অন্তত ২০টি গাড়ি ভাঙচুর করেছে।

মঙ্গলবার (৩ অক্টোবর) বেলা ১১টার দিকে মোহনগঞ্জ পৌরশহরের বসুন্ধরা মোড়ে ভাঙচুরের এ ঘটনা ঘটান তিনি।

এ সময় রাস্তার পাশে থামানো মাইক্রোবাস, প্রাইভেটকার, মোটরসাইকেল, সিএনজি ও অটোরিকশাসহ অন্তত ২০টি গাড়ি লাঠির আঘাতে ভাঙচুর করেন রাকিব। তিনি উপজেলার বাহাম গ্রামের ফজল হকের ছেলে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, রাকিব নামের ওই যুবক শহরের হাসপাতাল রোডের শৌখিন কমিউনিটি সেন্টারের সামনে থাকা সিএনজি অটোরিকশা, মাইক্রোবাসে লাঠি দিয়ে আঘাত করে। পরে সড়ক দিয়ে সামনে এগিয়ে যেতে যেতে বসুন্ধরা মোড় পর্যন্ত সামনে যে গাড়ি পড়েছে সব লাঠির আঘাতে ভেঙে দিয়েছে।

এক পর্যায়ে বসুন্ধরার মোড়ে ক্ষতিগ্রস্ত গাড়ির চালক ও মালিকরা রাকিবকে আটক করে তার দুই হাত একটি ভবনে বেঁধে রাখে। খবর পেয়ে পুলিশও সেখানে হাজির হয়। মানসিক ভারসাম্যহীন রাকিবকে তার বাবার হাতে বুঝিয়ে দিয়ে পুলিশ চলে যায়। এ ঘটনায় স্থানীয় ইউপি সদস্য মোহাম্মদ আলী বিষয়টি সুরাহা করবেন বলে ক্ষতিগ্রস্তদের আশ্বস্ত করলে ভুক্তভোগীরা রাকিবকে ছেড়ে দেয়। পরে রাকিবকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হয়।

ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেছে, রাস্তার দুই পাশে মোটরসাইকেল, অটোরিকশা, মাইক্রোসহ অসংখ্য গাড়ি ভাঙাচোরা অবস্থায় রয়েছে। লাঠির আঘাতে কোনোটার ট্যাংকি চ্যাপ্টা হয়েছে। কোনো গাড়ির কাচ ভেঙেছে। রাস্তার পাশেই পড়ে আছে কাচের ভাঙা টুকরো। ভাঙচুরের ঘটনায় কিছু সময়ের জন্য রাস্তায় গাড়ি চলাচলও বন্ধ হয়ে যায়। এসব দেখতে উৎসুক মানুষের ভিড় জমে যায়।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী একজন বলেন, ওই ছেলেটা অস্বাভাবিক আচরণ করছিল। হয়তো পাগল, নয়তো অতিরিক্ত নেশা করেছে। হাতে থাকা লাঠি দিয়ে সড়কে থামানো সব গাড়ি ভেঙে দিয়েছে।

লোকজন নিরুপায় হয়ে তাকে বেঁধে রেখেছে। ভাগ্য ভালো যে কোনো মানুষকে আঘাত করেনি। শুনেছি গতকাল বারহাট্টা এলাকায় একজন মানুষকে পিটিয়ে চলে এসেছে রাকিব।

ক্ষতিগ্রস্ত সিএনজি অটোরিকশার মালিক শহরের বাসিন্দা শফিক মিয়া বলেন, চাকার টায়ার পরিবর্তন করে রাস্তার পাশে সিএনজিটা রেখে বাসায় গিয়েছিলাম। এসে দেখি লাঠি দিয়ে আঘাত করে সামনের কাচ ভেঙে দিয়েছে। এই কাচের দাম ১২ হাজার টাকা। ছেলেটা পাগল বা নেশাখোর মনে হচ্ছে। মেম্বার বিষয়টি সমাধানের উদ্যোগ নিয়েছেন।

তিনি আরও জানান, সে অসুস্থ হলে অভিভাবকদের উচিত বাসায় আটকে রাখা। রাস্তায় ছাড়লে তো এভাবে আমাদের মতো গরিবের ক্ষতি করবে।

বাহাম গ্রামের বাসিন্দা ও স্থানীয় ইউপি সদস্য মোহাম্মদ আলী বলেন, রাকিব একসময় সুস্থ ছিল। প্রায় দুই বছর আগে মোবাইলে অতিরিক্ত মাত্রায় ফ্রি-ফায়ার গেম খেলে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে। পরে ঢাকায় নিয়ে চিকিৎসা করানোর পর কিছুটা ভালো হয়েছিল।

গত ছয় মাস ধরে সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠেছিল। কিন্তু এক সপ্তাহ আগে আবার রাকিবের মাথায় সমস্যা দেখা দিয়েছে। গাড়ি ভাঙার বিষয়ে ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে আলোচনা করে এটি সমাধান করে দেব।

এ বিষয়ে মোহনগঞ্জ থানার এসআই মো. মজিবুর রহমান বলেন, গাড়ি ভাঙার খবর পেয়ে গিয়ে ওই যুবককে তার বাবার হাতে বুঝিয়ে দিয়ে এসেছি। ছেলেটাকে মানসিক ভারসাম্যহীন মনে হয়েছে।

কী কারণে এমন অবস্থা তার এ বিষয়ে জানা নেই। ক্ষতিগ্রস্ত গাড়ির কোনো মালিক এ বিষয়ে অভিযোগ করেননি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সাবস্ক্রাইব
Notify of
guest
0 মন্তব্য
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন