English

40 C
Dhaka
শনিবার, এপ্রিল ২০, ২০২৪
- Advertisement -

বগুড়ায় স্ত্রীকে হত্যা করে লাশ তড়িঘড়ি করে দাফনের চেষ্টা

- Advertisements -

গোলাম রব্বানী শিপন, বগুড়া প্রতিনিধিঃ বগুড়া সদরের লাহিড়ীপাড়া ইউনিয়নের সাতশিমুলিয়া গ্রামে স্ত্রীকে হত্যা করে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত বলে লাশ তড়িঘড়ি করে দাফনের চেষ্টা। অতঃপর স্বামী পলায়নের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

বুধবার বেলা ১২টায় সরেজিনে গিয়ে এলাকাবাসী ও নিহতের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, বগুড়া সদরের গোকুল ইউনিয়নের গোকুল মধ্যপাড়া গ্রামে কামাল হোসেনের মেয়ে নাজমা আকতার কাজলী (২৯) এর সাথে প্রায় ১৪ বছর পর্বে একই উপজেলার সাতশিমুলিয়া ইউনিয়নের মাঝিপাড়া গ্রামের অলী মিয়ার পুত্র শহিদ উদ্দীন (৩০) এর সাথে পারিবারিক প্রস্তাবে অনুষ্ঠানিক ভাবে বিয়ে হয়।

নাজমা আকতার কাজলী ও শহিদের সংসারে ২ কন্যা সন্তান রয়েছে। বিয়ের পর থেকে নাজমাকে নানা কারণে অকারণে অত্যাচার ও শারীরিক নির্যাতন করতেন স্বামী শহিদ।

এনিয়ে মেয়ে কাজলীর অভিযোগে পিতা অনেক দেনদরবার করেও অগ্নিশর্মা জামাইকে সুপথগামী করতে পারেননি। বরং দিনদিন তার নির্যাতনের মাত্রাবৃদ্ধি পায়। এক সময় অত্যাচারী জমাইয়ের হাত থেকে রক্ষা করতে মেয়েছে বাড়িতে নিয়ে আসেন পিতা কামাল। শেষ সিদ্ধান্ত নেন মেয়েকে আর জামায়ের বাড়িতে পাঠাবেন না। অত্যাচারী জামাই শহিদের সাথে যোগাযোগ বিছিন্ন করেন মেয়ের পরিবার। এরপর নানা ভাবে যোগাযোগের চেষ্টা করে শহিদ। তাতেও ব্যর্থ হয়। একপর্যায়ে নতুন পরিকল্পনার নীলছক তৈরী করে শহিদ। শ্বশুর বাড়িতে প্রস্তাব দেয় আগে যা হয়েছে তার জন্য ক্ষমা চাই। আমার ভুল বুঝতে পেরেছি। আমি স্ত্রী সন্তান কে নিয়ে ঢাকায় গিয়ে চাকরি করব। ২ মেয়ের মুখের দিকে তাকিয়ে স্ত্রী নাজমা ও শ্বশুর কামালকে অনুরোধ করেন আবার নতুন করে সংসার জীবন ফিরে পেতে চায় কৌশলী শহিদ।

মেয়ে ও ২ নাতনীর ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে রাজি হয় শ্বশুর কামাল। এতে নতুন করে শর্ত আটে শ্বশুর কামাল হোসেন। তিনি বলেন বারবার মেয়ের ওপর নির্যাতন সহ্য করা যাবে না। একটি লিখিত করতে হবে। স্ত্রীকে নির্যাতন করবে না মর্মে প্রায় ৫ মাস পূর্বে নানা শর্তে লিখিত একটি ষ্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করে শহিদ স্ত্রীকে ঢাকা সাভারে নিয়ে যায়। ঢাকা সাভার হেমায়েতপুর গিয়ে স্ত্রীকে গার্মেন্টসে চাকরি দিয়ে শহিদ হয়ে যায় ভবঘুরে। আর মাস শেষে স্ত্রী নামজা বেতন তুলে সংসার চালায়। সেখানেও সুখ মেলেনা নাজমার। আবারও শুরু হয়ে যায় স্বামী শহিদের সাথে বিবাদ। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২/৩ দিন পূর্বে থেকে শহিদ স্ত্রীর সাথে ঝগড়ায় লিপ্ত হন। আর এই নির্যাতনের বিষয় গুলো নাজমা তার পরিবার করে মোবাইল ফোনে সব বলে দেয়।

পরিশেষে মঙ্গলবার দিবাগত রাতে শহিদ বাড়ির লোকজনকে বলতে শুরু করেন স্ত্রী নাজমা ডায়রিয়ায় মারা গেছে। মৃত্যুর খবর ওই রাতে শ্বশুর বাড়িতেও পাঠানো হয়।

পরদিন বুধবার ভোর বেলা লাশ নিয়ে আসা হয় শহিদের বাড়িতে। সেখানে শহিদের নির্দেশে তাড়াহুড়ো করে কবর খনন ও কাফনের কাজ শেষ করা হয়। এদিকে নিহত নাজমা আকতার কাজলীকে শেষ বারের মত দেখতে আসেন তার আত্মীয় স্বজন। তারা মরদেহ দেখতে চাইলে শহিদের পরিবার নারাজি হয়। গ্রামের লোকজন দেখাতে বললে তাতেও শহিদের পরিবারের লোকজনদের মনগলেনা। একসময় জোর করে দেখতে চাইলে শহিদের পরিবারের লোকজন ক্ষিপ্ত হয়। সাদা কাফনের কাপড় রক্ত মাখা দেখে নাজমার পরিবারের লোকজনের সন্দেহ হলে তারা লাশ জোর করে দেখেন। পরে লাশের বুকে ক্ষত ও চোখে আঘাতের কালো দাগ দেখে পুলিশ কে খবর দেয়। তাৎক্ষণিক বগুড়া সদর থানা পুলিশ এসে লাশের সুরতহাল রিপোর্ট শেষে কাফনে মোড়া অবস্থায় উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। সুরতহালে নিহতের কপাল ও বুকে ক্ষত চি‎হ্ন পাওয়া যায়। এদিকে ঘটনার বেগতিক দেখে কৌশলে পালিয়ে যায় শহিদ।

ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন, বগুড়া সদর থানার এসআই জাকির আল আহসান। তিনি বলেন, মরদেহে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পেলে নিহতের বিষয় নিশ্চিত হওয়া যাবে।
এবিষয়ে বগুড়া সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সেলিম রেজার সাথে কথা বললে তিনি নিরাপদ নিউজকে জানান, হত্যার ঘটনাটি ঢাকায় ঘটেছে। এটি আমার ইনচার্জে নয়। তারপরেও অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সাবস্ক্রাইব
Notify of
guest
0 মন্তব্য
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন