English

25.1 C
Dhaka
বুধবার, জুলাই ৯, ২০২৫
- Advertisement -

‘বিয়েপাগল’ যুবলীগ নেতাকে পেটালেন দুই স্ত্রী

- Advertisements -

রাজনৈতিক পরিচয়ের সূত্র ধরে জন্মদিনের নিমন্ত্রণ। সেখান থেকে নাম জানাজানি। এরপর মোবাইল নম্বর ও ফেসবুক আইডি বিনিময়। শুরু হয় প্রাথমিক আলাপন। ধীরে ধীরে তা ঘনিষ্ঠতায় রূপ নেয়।

দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে চলে এই আলাপচারিতা। বয়সের সামঞ্জস্যতা না থাকা সত্ত্বেও সবশেষ পরিবারকে না জানিয়েই সেই সম্পর্ক বিয়েতে রূপ নেয়। বিয়ের পর কয়েক মাস ভালোই চলছিল তাদের সংসার। সংসারে আসে নতুন অতিথি।

এরই মধ্যে স্ত্রী নিশি জানতে পারেন তার স্বামী যুবলীগ নেতা শাহ ফয়েজউল্লাহ ফয়েজ আরেকটি বিয়ে করেছেন। বিয়ের বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন ‘ওই মেয়ে ভালো না, বিভিন্ন মানুষকে ব্ল্যাকমেইল করা তার কাজ’। কিন্তু কিছুদিন পর জানতে পারেন ফয়েজের সঙ্গে আরও একটি মেয়ের সম্পর্ক রয়েছে। তখন আর চুপ থাকতে পারেননি স্ত্রী নিশি। সরাসরি স্বামী ফয়েজউল্লাহ ফয়েজকে হাতেনাতে ধরে ফেলেন। তাকে মারধরও করেন।

সম্প্রতি নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবলীগের সংস্কৃতিবিষয়ক সম্পাদক শাহ ফয়েজ উল্লাহ ফয়েজকে দুই নারী মিলে জুতাপেটা করার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

এর আগেও যুবলীগ নেতা ফয়েজের বেশ কয়েকটি বিয়ের খবর ফাঁস হয়েছিল। নিশি আক্তারের দাবি, তিনি ফয়েজের পাঁচ নম্বর স্ত্রী। নথি ছাড়া আরও দুজন স্ত্রীর খবর তিনি জেনেছেন। অন্য স্ত্রীদের মতো নিশিকেও মারধর করে নির্যাতন করে তাড়িয়ে দিয়েছেন। এ ঘটনায় ফয়েজের বিরুদ্ধে নিশি যৌতুক না পেয়ে মারধরের অভিযোগে মামলা করেছেন। আদালত অভিযোগ আমলে নিয়ে ফয়েজের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন।

নিশি আক্তারের দাবি, আগের বিয়ের তথ্য গোপন করে তাকে নানা প্রলোভন দেখিয়ে বিয়ে করেছেন ফয়েজ। তাদের তিন মাসের একটি সন্তান রয়েছে। কিন্তু ফয়েজ এখন বিয়ের বিষয়টি অস্বীকার করছেন এবং তাকে নানাভাবে হুমকি দিচ্ছেন। নিশি তার সন্তানের অধিকার আদায়ের বিষয়ে সবার সহযোগিতা চেয়েছেন।

জুতাপেটা করার ভিডিওর বিষয়ে জানতে চাইলে নিশি আক্তার বলেন, ‘তার নতুন সম্পর্কের কথা জানতে পেরে হাতেনাতে ধরে ফেলি। তখন জানতে পারি যার সঙ্গে তার সম্পর্ক তিনি ফয়েজের স্ত্রী। ওই নারীর সঙ্গে তার ১৩ বছর বিয়ের সম্পর্ক। এরপর সেখানে তাকে মারধর করা হয়। ওই মারধরের পর কিছুদিন আমার সঙ্গে ভালো সম্পর্ক চলে। নিয়মিত বাসায় আসা-যাওয়া করে।’

‘এরই মধ্যে আমার গর্ভে থাকা সন্তান পৃথিবীর আলোর মুখ দেখে। সেসময় ফয়েজ হাসপাতালে গিয়ে আমার সন্তানকে দেখে আসে। তবে হাসপাতাল থেকে বের হওয়ার পর থেকেই আমার সন্তানকে আর দেখতে আসেনি। সন্তানের খোঁজখবর নেয় না। এর কারণ খুঁজতে গিয়ে লোক মারফত জানতে পারলাম ফয়েজ নাকি আমাকে ডিভোর্স দিয়েছে।’

‘এ বিষয়ে ফয়েজকে জিজ্ঞাসা করা হলে সে বলে ডিভোর্স দিয়ে দিছি। তখন তাকে বলি আমি এই ডিভোর্স মানি না। তুমি একের পর বিয়ে করবা, আমি কিছু বললেই আমাকে ডিভোর্স দিয়ে দিবা, এটা হয় না। আমি ডিভোর্স কাগজে সই করি না। এজন্য তার বোনেরা ও ভাড়াটে গুন্ডারা আমাকে বিভিন্নভাবে নির্যাতন করছে। ফয়েজ এভাবে কয়দিন পরপর একজনকে বিয়ে করছে এবং কয়েক মাস তার সঙ্গে সংসার করার পর নির্যাতন করে তাড়িয়ে দিচ্ছে। সে একজন বিয়েপাগল লোক’, বলেন নিশি আক্তার।

‘কাবিনের কাগজ খোঁজ করতে গিয়ে দেখি সেখানে আমার সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে’ বলেও উল্লেখ করেন নিশি আক্তার। তিনি বলেন, ‘১০ লাখ টাকা কাবিনের কথা বলে এক লাখ টাকা দেওয়া হয়েছে। সেখানে আবার ৫০ হাজার টাকা উসুল দেখানো হয়েছে। তার পরিচিত কাজি দিয়ে এই কাজটি করিয়েছে। বর্তমানে আমি অসহায় অবস্থায় দিনযাপন করছি। কোর্টে দায়ের করা মামলায় তার বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট হলেও পুলিশ তাকে খুঁজে পাচ্ছে না। আমি এখন কার কাছে যাবো?’

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এরআগে ২০২০ সালের ২৮ মার্চ শহরের জামতলা থেকে ফয়েজকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। সেদিন বিকেলে ৯৯৯ নম্বরে কল পেয়ে পুলিশ ফয়েজের স্ত্রী আরোহী হাওলাদারকে (২২) স্বামীর বাড়ি থেকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে। পরে তিনি তার স্বামীর বিরুদ্ধে যৌতুকের দাবিতে মারধর ও নির্যাতনের অভিযোগ এনে মামলা করেন। ওইদিন রাতেই অভিযান চালিয়ে ফয়েজকে সেই মামলায় গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে তিনি জামিনে মুক্তি পান।

ফয়েজউল্লাহ ফয়েজ শহরের জামতলা এলাকার শাজাহান মিয়ার ছেলে। ২০১০ সালের এপ্রিল মাসে গাজীপুরে দুর্বৃত্তের হাতে খুন হওয়া নারায়ণগঞ্জের ফাইভ স্টার গ্রুপের দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী এবং ইন্টারপোলের গ্রেফতারি পরোয়ানাভুক্ত আসামি নুরুল আমিন মাকসুদ ওরফে বরিশাইল্লা মাকসুদের শ্যালক তিনি।

এ বিষয়ে কথা বলতে শাহ ফয়েজউল্লাহ ফয়েজের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।

মামলার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফতুল্লা মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আতিকুল ইসলাম বলেন, আমরা ওয়ারেন্ট কপি হাতে পেয়েছি। তাকে গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবলীগের সভাপতি আব্দুল কাদির বলেন, আমরা এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ পাইনি। যদি কেউ অভিযোগ করে থাকেন এবং তার প্রমাণ পাওয়া যায় তাহলে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

The short URL of the present article is: https://www.nirapadnews.com/pthy
Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ

আল কোরআন ও আল হাদিস

- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন