চলতি বছরের গত ১০ মাসে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ও এর বিভিন্ন অঙ্গ–সহযোগী সংগঠনের প্রায় ৩ হাজার নেতা–কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। গ্রেপ্তারকৃতরা বিভিন্ন ঝটিকা মিছিলে অংশ নিয়েছিলেন।
শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) বিকেলে রাজধানীর মিন্টো রোডের ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা মহানগর পুলিশের গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের উপ-কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান এ তথ্য জানান। শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন স্থান থেকে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ঝটিকা মিছিল থেকে ৪৬ জনকে গ্রেপ্তার উপলক্ষে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে তালেবুর রহমান বলেন, চলতি বছরে ঢাকার বিভিন্ন স্থান থেকে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের প্রায় ৩ হাজার নেতা–কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ। গ্রেপ্তার এসব নেতা–কর্মীরা সবাই ঝটিকা মিছিলে অংশ নেন। ঝটিকা মিছিল থেকে আটকের পর যাচাই-বাছাই করে গ্রেপ্তার করা হয়।
শুক্রবার রাজধানীর সাতটি স্থান থেকে ৪৬ জনকে গ্রেপ্তারের তথ্য উল্লেখ করে তালেবুর রহমান বলেন, এর মধ্যে শেরেবাংলা নগর থানা এলাকা থেকে ১৮ জন, বিজয়নগর থেকে ১৩ জন, খিলক্ষেত থেকে ৪ জন, উত্তরার ৯ নম্বর সেক্টর থেকে ২ জন, বাড্ডা থেকে ৩ জন, বনানী থেকে ৩ জন এবং তেজগাঁও থেকে ৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
এক প্রশ্নের জবাবে তালেবুর রহমান বলেন, ঢাকার বাইরে থেকে এসে টাকার বিনিময়ে ঝটিকা মিছিলে এসব নেতা–কর্মী অংশ নিচ্ছেন। এই মিছিলের পেছনে অনেকেই আর্থিকভাবে সহযোগিতা করছেন। যারা আর্থিকভাবে সহায়তা করছেন, তাদেরও আইনের আওতায় আনার কাজ চলছে।
মানুষের মাঝে আতঙ্ক সৃষ্টি ও যেকোনো মূল্যে রাজধানীতে অবস্থান জানান দিতেই এসব মিছিল করা হচ্ছে বলে মনে করেন পুলিশ কর্মকর্তা তালেবুর রহমান। তিনি বলেন, ‘আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে রাজনৈতিক তৎপরতা বাড়বে। তবে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। আমরা এসব বিষয় মাথায় রেখে নির্বাচনী প্রস্তুতি চালিয়ে যাচ্ছি। আমরা সতর্ক রয়েছি। যেকোনো অপতৎপরতা রুখে দেওয়ার সক্ষমতা আমাদের রয়েছে।’
শুক্রবার গ্রেপ্তার হওয়া নেতা–কর্মীরা হলেন নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি বরিকুল ইসলাম বাঁধন (৩২), সাতক্ষীরা জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সুমন হোসেন (৩৩), কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মেজবাউল ইসলাম (২৫), বগুড়া জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বজলুর রহমান বাঁধন (৩০), নোয়াখালী পৌর যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক নুর আলম সিদ্দিক (৪১), বরগুনা সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ দোলন (২৩), ত্রিশাল উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মোমিনুল হাসান সোহান (২৯), সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সদস্য আশরাফ আল কবির চৌধুরী (২৭), ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সদস্য দেব যুথি দে নব (২৩), ছাত্রলীগের সদস্য রকিবুল হাসান (৩৪), ইয়াসিন আরাফাত শুভ (২০), তাসরীপ হোসেন (২১), খালেদ বিন কাওসার (২৮), সাইফুল ইসলাম সাইফ (৩১), মিঠুন দেবনাথ (৩৪), মনির হোসেন ফরহাদ (২১) ও মিঠু দেবনাথ (৩০)।
আওয়ামী লীগের কর্মী আনিসুজ্জামান রনি (৩১), মুন্না মিয়া (২৬), জাকির হোসেন খান (২২), মো. কামরুজ্জামান (২৫), মোস্তাফিজুর রহমান জনি (৩৭), শেখ রাশেদুজ্জামান (৩৫), জাহিদুল ইসলাম সুনু (৪০), মো. রবিউল আওয়াল (২৫), আলমগীর হোসেন জনি (৩০), বিশ্বজিৎ সাহা (৩০), মাহাফুজুর রহমান (৩০), আ. শুকুর (৩৫), আবিদুর রহমান (২০), মো. সাব্বির (১৯), ইমন হোসেন (১৯) ফাতিনুর শিমুল (১৯), আরিফুল ইসলাম (১৯), শ্রীকান্ত কর্মকার (২০), জিয়াদ মাহমুদ (২১), মো. জিয়াদ (২০), মো. আসলাম (২১), রিফাত ইসলাম (১৯), মিল্লাত বাবু (১৮), স্বপন মিয়া (২২)। যুবলীগের কর্মী মোহাম্মদ মামুন শেখ পরশ (৩২), শফিউল আলম (৩৫), মোহাম্মদ কুদ্দুস সরদার (৩২), স্বেচ্ছাসেবক লীগের কর্মী মামুন সেখ (৪০), মোহাম্মদ রাজু (৩০)।

