English

29 C
Dhaka
বৃহস্পতিবার, মার্চ ২৮, ২০২৪
- Advertisement -

ডায়ানা অ্যাওয়ার্ড পেলেন চট্টগ্রামের মেয়ে আনুশা চৌধুরী

- Advertisements -

শফিক আহমেদ সাজীব: মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে বিভিন্ন স্তরের মানুষের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে আনুশা চৌধুরীর হাত ধরে ২০১৮ সালে যাত্রা শুরু করে ‘লেটস টক মেন্টাল হেলথ’। তাঁর একান্ত প্রচেষ্টায় সংগঠনটি দেশ-বিদেশের অগণিত মানুষের মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করছে।

মানসিক স্বাস্থ্যক্ষেত্রে তাঁর এই অসামান্য অবদানের জন্য এ বছর তিনি ভূষিত হয়েছেন সম্মানজনক ‘ডায়ানা অ্যাওয়ার্ডে’। আনুশা চৌধুরী কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের (সিইউবি) এক্সটার্নাল অ্যাফেয়ার্সের ডিরেক্টর হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন।

একজন কাছের বন্ধুকে মানসিক অসুস্থতার কাছে হেরে যেতে দেখে আনুশা চৌধুরী লেটস টক মেন্টাল হেলথ প্রতিষ্ঠানের গোড়াপত্তন করেন। বিভিন্ন শিল্পের মাধ্যমে মানসিক স্বাস্থ্যের প্রতি সচেতনতা সৃষ্টি করাই এই প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য। বর্তমানে তিনি এই প্রতিষ্ঠানের সহপ্রতিষ্ঠাতা ও প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

সূচনালগ্ন থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে বিপুল সাড়া পাওয়া এই প্রতিষ্ঠান আজ একটি আন্তর্জাতিক সংস্থায় রূপান্তরিত হয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশ, কানাডা, দুবাই, ভারত, ফিলিপাইন, স্পেন, আমেরিকা ও জাম্বিয়ার মোট ১১২ জন স্বেচ্ছাসেবী এই সংগঠনের হয়ে মানসিক স্বাস্থ্যের প্রতি সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছেন। এ ছাড়া যেকোনো রাষ্ট্রের যেকোনো নাগরিক অনলাইনে মানসিক স্বাস্থ্য সেবা নিতে পারছে এই সংস্থা থেকে। মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে প্রচলিত কুসংস্কার ভাঙতে নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে আনুশা চৌধুরী ও তাঁর সংগঠন লেটস টক মেন্টাল হেলথ।

দেশে-বিদেশে ৩৭ হাজারের বেশি মানুষকে মেন্টাল হেলথ কাউন্সেলিংয়ের আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে এই সংস্থার পক্ষ থেকে। চার বছরে ৩৭ হাজার মানুষকে মানসিক স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের মাধ্যমে ডায়ানা অ্যাওয়ার্ডে ভূষিত হয়েছেন চট্টগ্রামের মেয়ে আনুশা চৌধুরী। নয় থেকে ২৫ বছর বয়সী তরুণ উদ্যোক্তা ও স্বেচ্ছাসেবীদের বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি হিসাবে ব্রিটিশ রাজ পরিবারের পক্ষ থেকে ১৯৯৯ সালে প্রিন্সেস ডায়ানার নামে এই পুরষ্কার চালু করা হয়। চলতি বছর সারা বিশ্বের ৮ জন তরুণ উদ্যোক্তা এই পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছেন।

১ জুলাই পুরষ্কারপ্রাপ্তদের নাম ঘোষণা করা হয়, যেখানে আনুশা চৌধুরীর নামও ছিল। নিজের প্রতিষ্ঠিত ‘লেটস টক মেন্টাল হেলথ’ নামের প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে সারা বিশ্বে মানসিক স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম ছড়িয়ে দেওয়ার স্বীকৃতি হিসাবে তাকে এই পুরষ্কার দেওয়া হচ্ছে। সম্প্রতি ‘হার্ভার্ড বিজনেস স্কুল অনলাইন’ তাদের ইন্সটাগ্রাম হাইলাইটে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে আনুশা চৌধুরীর অনন্য সাধারণ কার্যক্রম নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে।

আনুশা চৌধুরীর হাত ধরে ২০১৮ সালে যাত্রা শুরু করে ‘লেটস টক মেন্টাল হেলথ’। তার প্রচেষ্টায় সংগঠনটি দেশ-বিদেশের অগণিত মানুষের মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। মানসিক সমস্যাগ্রস্থদের রোগী হিসাবে না ভেবে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের মাধ্যমে পরিপূর্ণ সেবা প্রদানে কাজ করছে আনুশার প্রতিষ্ঠান। সারা বিশ্বে ৩৭ হাজার ও বাংলাদেশে সাড়ে ৫ হাজারের বেশি শিশু-কিশোরকে সেবা দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

নিরাপদ নিউজের সাথে কথা হয় আন্তর্জাতিক ডায়ানা অ্যাওয়ার্ড বিজয়ী আনুশা চৌধুরীর। তিনি বলেন, পুরষ্কারের জন্য কাজ করিনি। মানুষের জন্য কিছু করব এই চিন্তা থেকে ২০১৮ সালে নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি থেকে বিবিএ সম্পন্ন করে এই কাজে যুক্ত হয়।

মানসিক সমস্যাগ্রস্থদের অনেকে ভিন্ন চোখে দেখেন। আমরা তাদের বন্ধু মনে করি। বর্তমানে বাংলাদেশে ৬টি মেগা প্রজেক্ট ও ৯টি ক্যাম্পেইন চালু রয়েছে। আমেরিকা, কানাডা, আমিরাত, ভারত, ফিলিপাইন, জাম্বিয়া ও বাংলাদেশ এই সাত দেশে ১১২ জন সেচ্ছাসেবী লেটস টক মেন্টাল হেলথের হয়ে সক্রিয় কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জানান তিনি।

চট্টগ্রাম নিয়ে আলাদা কোনো চিন্তা আছে কিনা এই প্রশ্নে আনুশা চৌধুরী বলেন, শিশুর মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে চট্টগ্রামে একটি অগ্রাধিকার প্রকল্প চালু রয়েছে। যেখানে এক হাজারের বেশি শিশু সেবা পাচ্ছে। ভবিষ্যতে মুঠোফোনে ‘এপস‘ এর মাধ্যমে সেবা কার্যক্রম আরো বাড়ানোর চেষ্টা চলছে।

আনুশা চৌধুরী চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার পরৈকোড়া ইউনিয়নের অজিত চৌধুরী ও শিপ্রা চৌধুরীর (অনুশ্রী) ৩ সন্তানের মধ্যে সবার বড়। বর্তমানে তিনি লেটস টক মেন্টাল হেলথের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও প্রেসিডেন্ট এবং কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের (সিইউবি) এঙটার্নাল অ্যাফেয়ার্সের ডিরেক্টর হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

সাবস্ক্রাইব
Notify of
guest
0 মন্তব্য
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন