English

24 C
Dhaka
শুক্রবার, মার্চ ২৯, ২০২৪
- Advertisement -

মশা নিয়ে বিড়ম্বনায় আছেন চসিক মেয়র

- Advertisements -

মশা নিয়ে বিড়ম্বনা ও বিব্রতকর অবস্থায় পড়েছেন জানিয়ে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, ‘নগরের ৩৯ নম্বর ওয়ার্ডে কয়েক দিন আগে গিয়ে সাধারণ মানুষের কাছে লজ্জায় পড়েছি। খালের বাঁধে পানি জমে আছে। ঢিল ছুড়ে মারলাম, মনে হলো কয়েক হাজার কোটি মশা উড়ছে। অথচ তিন দিন আগে সেখানে মশার ওষুধ ছিটানো হয়েছে।

বাস্তবতাকে আমি অস্বীকার করি না। অবস্থা এমন হয়েছে দিনেও মশা, রাতেও মশা। জলাবদ্ধতা প্রকল্প শেষ না হলে মশা নির্মূল সম্ভব হবে না। মশা নিয়ে বিড়ম্বনায় আছি।’
বুধবার দুপুরে চসিকের কে বি আবদুচ ছত্তার মিলনায়তনে মেয়র হিসেবে দায়িত্বগ্রহণের এক বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। গত বছরের ২৭ জানুয়ারি নির্বাচনে মেয়র পদে নির্বাচিত হওয়ার পর ১৫ ফেব্রুয়ারি দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন তিনি।
মশার উৎপাতে নগরবাসী অতিষ্ঠ, সমাধান কোন পথে―সাংবাদিকদের অপর এক প্রশ্নের জবাবে জানতে চাইলে চসিক মেয়র বলেন, ‘মশার উৎপাতের বিষয়টি আমি অস্বীকার করি না। মশা নিধনের ওষুধ প্রয়োগের জন্য চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদল একটি ফর্মুলা দিয়েছেন। সেটা আমরা প্রয়োগ করছি। আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ওষুধও প্রয়োগ করছি। কিন্তু মশা নিয়ন্ত্রণ করতে পারছি না। ‘

নগরে জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের কাজের কথা জানিয়ে মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, ‘শহরের ৩৬টি খালে বাঁধ দেওয়া হয়েছে। এ কারণে খাল ও নালায় খণ্ড খণ্ড হয়ে পানি জমাট বেঁধে আছে। পানি যেতে পারছে না। পানিপ্রবাহ স্বাভাবিক না হলে মশার উপদ্রব কমবে না। জলাবদ্ধতা নিরসনের কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত আমরা মশা নিয়ন্ত্রণ করতে পারব না। মশা পুরোপুরি নির্মূল হয়তো করা সম্ভব হবে না, কিন্তু নিয়ন্ত্রণ করতেও আমাদের অপেক্ষা করা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই। ‘

চসিকে অস্থায়ীভাবে একজন কীটতত্ত্ববিদ নিয়োগ দেওয়া হয়েছে জানিয়ে মেয়র বলেন, ‘আমরা বিশেষজ্ঞ মতামত নিয়ে ওষুধ প্রয়োগ করে মশা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছি। কিন্তু এটা খুবই দুরূহ হয়ে গেছে। কারণ জমে থাকা পানিতে কোটি কোটি মশা উৎপন্ন হচ্ছে। অথচ শহরের বাইরে গ্রামে যান, দেখবেন এখানকার মতো এত মশা সেখানে নেই। কারণ সেখানে পানি জমে থাকার সুযোগ কম। এখানে জলাবদ্ধতা নিরসনের কাজ তো আছে, এরপর ওয়াসাও রাস্তাঘাটে গর্ত করে রেখে দেয়, সেখানে পানি জমে। আর পানি জমলেই মশা। এ মশা নিয়ে আমি খুবই বিড়ম্বনায় আছি। ‘

খালের বাঁধ তুলে না নিলে আসন্ন বর্ষায় জলাবদ্ধতা আরো ‘ভয়াবহ’ হবে জানিয়ে মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, ‘জলাবদ্ধতা নিরসনের কাজ আমি সার্বক্ষণিক মনিটর করছি। কয়েক দিন আগেও সমন্বয় সভা করেছি। সব সংস্থা একসঙ্গে বসেছিলাম। কিন্তু একটা বিষয় আমি বারবার বলছি যে, গত বর্ষায় যদি গলা পানিতে থাকি, এবার পানি মাথার ওপর উঠবে। এপ্রিলের শেষে যদি বাঁধ খুলে দেওয়া না হয়, তাহলে আমি জীবন দিয়েও মানুষকে জলাবদ্ধতার হাত থেকে রক্ষা করতে পারব না।’

এক বছরের কর্মকাণ্ডে নিজেকে সফল নাকি ব্যর্থ মনে করেন এ প্রশ্নের জবাবে সিটি মেয়র বলেন, ‘নিজের সফলতা-ব্যর্থতা নিজে পরিমাপ করা কঠিন। এটা পরিমাপ করবেন আপনারা সাংবাদিকরা। আপনারা ভুল দেখলে লিখবেন। সমালোচনা করবেন। সমালোচনার সঙ্গে সমাধানের পথটুকুও দেখিয়ে দেবেন, দিকনির্দেশনা দেবেন। তবে আমি নিরন্তর নগরবাসীর সেবা করার চেষ্টা করে যাচ্ছি। আমি একটি সুন্দর, পরিবেশবান্ধব, স্বাস্থ্যসম্মত, নান্দনিক শহর হিসেবে চট্টগ্রামকে গড়ে তুলতে চাই। ‘

এর আগে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী তার মেয়াদের প্রথম বছরে বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি যেসব কাজ করেছেন তার চিত্র তুলে ধরেন। তিনি বলেন, গত এক বছরে নগরের ৭৬৯ কিলোমিটার সড়কের উন্নয়ন, ২২টি কালভার্ট, ১০টি গোলচত্বর, ১৪টি ব্রিজ, ৩৮টি ফুট ওভারব্রিজ এবং একটি ওভারপাস নির্মাণের জন্য দুই হাজার ৪৯১ কোটি টাকার প্রকল্প একনেকে অনুমোদন হয়েছে। চসিকের ৪১ ওয়ার্ডের ৩৯ লাখ ৩৭ হাজার ৪০ জন নিবন্ধনকৃত নগরবাসীকে কভিড টিকা দেওয়া হয়েছে।

এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন চসিকের প্যানেল মেয়র গিয়াস উদ্দিন, আব্দুস সবুর লিটন ও আফরোজা কালাম এবং করপোরেশনের সচিব খালেদ মাহমুদ প্রমুখ।

সাবস্ক্রাইব
Notify of
guest
0 মন্তব্য
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন