খাগড়াছড়িতে সেনাবাহিনীর সঙ্গে গোলাগুলির সময় পালাতে গিয়ে ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়ে কংচাইঞো মারমা (৩১) নামের এক মগ লিবারেশন পার্টির (এমএলপি) আঞ্চলিক কমান্ডারের মৃত্যু হয়েছে। আজ শুক্রবার সকালে এ ঘটনা ঘটে। এর আগে ভোরে অস্ত্রসহ তার সহযোগী ইসমাইল হোসেনকে আটক করা হয়।
মৃত কংচাইঞো জেলার মহালছড়ি উপজেলার গড়িয়াছড়ি এলাকার অংগ্যজাই মারমার ছেলে। তিনি পরিবার নিয়ে শহরের শান্তিনগর এলাকায় একটি বাড়িতে ভাড়ায় থাকতেন।
সূত্র জানায়, আজ শুক্রবার ভোরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সিন্দুকছড়ি জোনের সেনা সদস্যরা মানিকছড়ির তিনটহরী এলাকায় অভিযান চালিয়ে ইসমাইলকে আটক করে। এ সময় তার কাছ থেকে দুটি এলজি ও পাঁচ রাউন্ড কার্তুজ উদ্ধার করা হয়। পরে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে একই দিন সকালে খাগড়াছড়ি শহরের শান্তিনগরে ব্যবসায়ী সুজিত দের দুতলা ভাড়া বাসায় অভিযান চালায় সেনাবাহিনী।
এ সময় সেনা সদস্যদের উপস্থিতি টের পেয়ে কংচাইঞো সেনাবাহিনীকে লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ করেন। পরে পালানোর পথ না পেয়ে প্রাণে বাঁচতে ভবনটির ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়লে গুরুতর আহত হয়। তাকে উদ্ধার করে খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানের দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ সময় সেই বাড়িটিতে তল্লাশি চালিয়ে একটি পিস্তল, পাঁচটি এলজি, ২১টি কার্তুজ ও ১৮টি পিস্তলের গুলি উদ্ধার করা হয়।
ভবনের মালিক সুজিত দে বলেন, ‘তার ভাগনীর মৃত্যুর কারণে গতকাল রাত থেকে তারা কেউ বাড়িতে ছিলেন না। খবর পেয়ে বাসায় এসে দেখেন ভাড়াটিয়ার বাসায় সব এলোমেলো হয়ে আছে। দেড় বছর ধরে স্ত্রী সন্তান নিয়ে কংচাইঞো মারমা এখানে ভাড়া থাকতেন। ভাড়া নেওয়ার সময় তিনি বিএসআরএম কোম্পানিতে চাকরি করতে বলে আমাদের জানিয়েছেন। স্ত্রী-সন্তান নিয়মিত বাসায় থাকলেও সে মাঝে মধ্যে আসতেন।’
সদর হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. দিপা ত্রিপুরা জানান, হাসপাতালে আনার আগেই তার মৃত্যু হয়েছে। উঁচু জায়গা থেকে পড়ায় তার শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তবে, শরীরে গুলির চিহ্ন পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে খাগড়াছড়ি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল বাতেন মৃধা জানান, হাসপাতাল থেকে মৃত্যুর বিষয়টি জানানোর পর পুলিশ সুরতহাল করেছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।