মোঃ আলাল উদ্দিন: কিশোরগঞ্জের ভৈরবে ইতালি প্রবাসী নারী মোমেনা আক্তার নীলি’র ক্রয়কৃত ভূমিতে আদালতের অনুমতি নিয়ে নির্মাণ কাজ করতে গিয়ে একটি প্রভাবশালী ভূমিদস্যু সিন্ডিকেট ৫০লাখ টাকা চাঁদা দাবিসহ জমি দখল ও প্রাণনাশের হুমকি দেয়ার অভিযোগ উঠেছে।
এঘটনায় আজ ১৮ আগস্ট, সোমবার দুপুরে কমলপুর বাল্লাবিল এলাকায় ভূমিদস্যু সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভুক্তভোগী প্রবাসী নারী।
লিখিত অভিযোগে ভুক্তভোগী প্রবাসী নারী মোমেনা আক্তার নীলি অভিযোগ বলেন, ৪০ বছর ধরে ভোগদখলীয় নিজের জায়গায় আদালতের বৈধ অনুমতি নিয়ে জায়গার নির্মাণ কাজ করতে গেলে একটি প্রভাবশালী ভূমিদস্যু চক্র প্রথমে ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। তাদের দাবিকৃত চাঁদার টাকা না দেওয়ায় স্থাপনা ভাংচুর করেন এবং জমি দেখল ও প্রাণনাশের হুমকি দেয় চাঁদাবাজ ও জবরদখলকারী ভূমিদস্যু সিন্ডিকেটের সদস্য রফিক, কাউসার, মোজাম্মেল, জাকির, সবুজ সরকার, কবির মিয়া ওরফে পান কবির, ফারুক ও দালাল সুমন রেফারি গংরা। গত ২২জুলাই রফিকগং ও অজ্ঞাতনামা দাঙ্গাবাজরা রামদা, লোহার রডসহ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে নির্মানাধীন দেয়াল ভাংচুর করেন। এঘটনায় ভৈরব থানায় লিখিত অভিযোগ দেওয়ায় বিভিন্নভাবে হুমকি ধামকি ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, ভৈরব হাজী জহির উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা এবং সমাজের একজন সুপরিচিত ও সম্মানিত ব্যক্তি তার বাবা হাজী জহির উদ্দিন। তিনি একজন সৎ, শিক্ষানুরাগী ও ন্যায়পরায়ণ মানুষ ছিলেন। তিনি কমলপুর মৌজার ৩১৬৭ দাগে ১৯৮৬ সালে শামসুল হক চৌধুরীর কাছ থেকে সোয়া ২১ শতাংশ, ১৯৮৭ সালে আজিজুল হক চৌধুরীর কাছ থেকে পৌনে ১৬ শতাংশ এবং ২০০৮ সালে তাদের বোন হামিদা, শহিদা ও রাসিদার কাছ থেকে সাড়ে ৫ শতাংশ ভূমি ক্রয় করে দীর্ঘদিন ধরে ভোগদখল করে আসছিলেন।
২০০৮ সালে মোমেনা আক্তার নীলি তার বাবার কাছ থেকে এই সম্পত্তি ক্রয় করেন এবং সেখানে মার্কেট ও দোকান নির্মাণ করে শান্তিপূর্ণভাবে ভোগদখল করে আসছেন। কিন্তু তিনি পরিবারসহ ইতালিতে বসবাস করার সুযোগে একটি ভূমিদস্যু সিন্ডিকেট তার নিজের নামে দলিলকৃত সাড়ে ৪২ শতাংশ জায়গা জোরপূর্বক দখলের অপচেষ্টা চালাচ্ছে।
ওই ভূমিদস্যু চক্রের পিছনেও একটি প্রভাবশালী মহল ইন্দন দিয়ে গত ১৪ আগস্ট, বৃহস্পতিবার তার স্বামী হাজী মো: জসিম উদ্দিন ও তার বিরুদ্ধে মিথ্যা ও ভুয়া অভিযোগ তোলে ভৈরব প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে তারা তাদের নিজেদের অপকর্ম লুকানোর চেষ্টা করে আমাদের উপরই উল্টো ভুমি দখলের অপবাদ দিচ্ছে ওই কুচক্রীমহল তাদের স্বার্থ হাসিল করার হীনচক্রান্তে।
তিনি বলেন, তার স্বামী হাজী মো: জসিম উদ্দিন একটি সম্ভ্রান্ত পরিবারের সন্তান। তিনি প্রবাসে নিজের কর্মের পাশাপাশি ইতালির রোম শহরে স্কুল ও মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করছেন। তাছাড়া তিনি একটি অনলাইন পত্রিকার চেয়ারম্যান ও মানবাধিকার সংগঠনের সদস্য হয়ে সামাজিক কর্মকাণ্ড নিজেকে নিয়োজিত রেখেছেন। অথচ আমাদের নামেই মিথ্যা কুৎসা রটাচ্ছে ভূমিদস্যুরা।
তিনি আরো অভিযোগ করেন, ওই ভূমিদস্যু সিন্ডিকেট কমলপুর বাল্লাবিলের সরকারি জায়গা জবরদখল করে মাটি ভরাট ও স্থাপনা নির্মাণসহ কতশত মানুষের জায়গা দখল করে নিচ্ছে।
তিনি আরও অভিযোগ করেন, ভূমিদস্যু সিন্ডিকেটের সাথে একটি প্রভাবশালী মহল পিছন থেকে কলকাটি নাড়ছে এবং সামাজিক দরবারের অজুহাতে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়ার জন্য ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। এঘটায় থেকে পরিত্রাণ পেতে ভূমিদস্যু ও চাঁদাবাজ চক্রের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনের প্রতি জোর দাবি জানান এবং তার জায়গাটি জবরদখলকারীদের হাত রক্ষাসহ প্রবাসী পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার অনুরোধ করেন।
অপরদিকে ওই প্রবাসী পরিবারের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করে মিথ্যাচার কুৎসা রটিয়ে দেশে বিদেশে তাদের মানহানি করায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান ভুক্তভোগী প্রবাসী নারী মোমেনা আক্তার নীলি। এবিষয়ে অন্যান্যদের মাঝে আরো বক্তব্য রাখেন সাবেক ইউপি সদস্য এলাকার মাতব্বর মোঃ তৌহিদ মিয়া, মোঃ শাহাদাত সরকার, চুন্নু মিয়া ও মোহাম্মদ আলী প্রমুখ। উক্ত সাংবাদিক সম্মেলনে ভৈরব উপজেলার বিভিন্ন গণমাধ্যম কর্মীগণ উপস্থিত ছিলেন