English

34 C
Dhaka
রবিবার, অক্টোবর ১৯, ২০২৫
- Advertisement -

পাগলা মসজিদের সিন্দুকে মিলল রেকর্ড ১২ কোটি টাকা

- Advertisements -

কিশোরগঞ্জের পাগলা মসজিদে আবারও দেখা গেল দানের ঢল। চার মাস ১৭ দিন পর আজ শনিবার সকাল ৭টায় খোলা হয় মসজিদের ১৩টি লোহার দানবাক্স। বাক্স খোলার সঙ্গে সঙ্গেই চোখে পড়ে টাকার স্তুপ। এ যেন টাকার পাহাড়।

এগুলো ভরতে প্রয়োজন হয় ৩২টি বস্তা। টাকা গণনার কাজ চলে মসজিদের দোতলায়। সেখানেই চলে দিনভর গণনা। টানা ১৩ ঘণ্টা গণনা করে রাত ৮টার পর শেষ হয় গণনা-কার্যক্রম।

শেষ পর্যন্ত পাওয়া যায় ১২ কোটি ৯ লাখ ৩৭ হাজার ২২০ টাকা, যা মসজিদের ইতিহাসে সর্বোচ্চ দানের রেকর্ড। রাত সোয়া আটটার দিকে পাগলা মসজিদ পরিচালনা কমিটির পক্ষ থেকে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।

গণনায় অংশ নেন সাড়ে সাড়ে চার শতাধিক কর্মী। ছিলেন মসজিদের কর্মচারী, মাদরাসার ছাত্র, ব্যাংক কর্মকর্তা ও স্বেচ্ছাসেবকরা।কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে চলে গণনার কাজ। এই গণনার কাজ তদারকি করেন জেলা প্রশাসনের বেশ কয়েকজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। নিরাপত্তায় ছিল সেনা, পুলিশ, র‌্যাব ও আনসার সদস্যরা।

নগদ টাকার পাশাপাশি দানবাক্সে পাওয়া গেছে স্বর্ণালঙ্কার, রূপা ও বৈদেশিক মুদ্রাও। শুধু দানবাক্স নয়, এবার প্রথমবারের মতো চালু করা হয় অনলাইনে দানের ব্যবস্থা।

অনলাইন প্ল্যাটফর্ম থেকেও এসেছে ৫ লাখেরও বেশি টাকা।

এর আগে চলতি বছরের ১২ এপ্রিল দানবাক্স খোলা হয়েছিল। তখন পাওয়া যায় ৯ কোটি ১৭ লাখ ৮০ হাজার ৬৮৭ টাকা। এবারের পাওয়া দানের টাকা সেই রেকর্ডও ছাড়িয়ে গেছে।

মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক ফৌজিয়া খান বলেন, দানকারীদের বিশ্বাস, এখানকার দানে পূর্ণ হয় মনোবাসনা। অনেকে সুস্থতা ও মনের শান্তির জন্যও দান করেন এই মসজিদে। শুধু মুসলমান নয়, সব ধর্মের লোকজনই এখানে দান করে থাকেন। অনেকে নগদ টাকার পাশাপাশি দেন গরু, ছাগল, হাঁস-মুরগিও। তিনি বলেন, মানুষের দানের টাকা দিয়ে এখানে প্রায় শতকোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হবে একটি দৃষ্টিনন্দন আন্তর্জাতিক মানের বহুতল ইসলামি কমপ্লেক্স। খুব শিগগিরই কমপ্লেক্সের কাজ শুরু করার জোর প্রস্তুতি চলছে।

কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরী বলেছেন, গণনা প্রক্রিয়াটি ছিল সম্পূর্ণ সুরক্ষিত ও স্বচ্ছ। কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা ছাড়াই মসজিদের টাকা গণনার কাজ শেষ হয়েছে।

মসজিদ পরিচালনা কমিটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ব্যাংকে জমা রাখা মসজিদের তহবিলের অর্থ থেকে যে লভ্যাংশ পাওয়া যায়, তা থেকে ক্যান্সার, কিডনি ও অন্যান্য জটিল রোগে আক্রান্ত দরিদ লোকদের সহায়তা করা হয়। পাগলা মসজিদের আর্থিক সহযোগিতায় চলে একটি মাদ্রাসাও। তহবিলে বর্তমানে প্রায় শতকোটি টাকা রয়েছে। এই অর্থ দিয়ে এখানে তৈরি হবে একটি আন্তর্জাতিক মানের বহুতল ইসলামিক কমপ্লেক্স। আর ভবিষ্যতে পাগলা মসজিদের সামাজিক সুরক্ষামূলক কর্মকাণ্ড আরো বাড়ানো হবে।

তিনতলা বিশিষ্ট এই ঐতিহ্যবাহী মসজিদটি শুধু ধর্মীয় নয়, কিশোরগঞ্জবাসীর বিশ্বাস ও আবেগের কেন্দ্রস্থল। যার খ্যাতি এরইমধ্যে দেশবিদেশে ছড়িয়ে পড়েছে। তিনটি গম্বুজ ও পাঁচতলা ভবনের সামনে উঁচু মিনারবিশিষ্ট এই স্থাপনা যেন দাঁড়িয়ে আছে মানুষের ভালোবাসা আর দানের অসীম শক্তির সাক্ষ্য হয়ে।

The short URL of the present article is: https://www.nirapadnews.com/36q3
Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন