English

31 C
Dhaka
সোমবার, এপ্রিল ২৯, ২০২৪
- Advertisement -

বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম ভৈরব এর আয়োজনে ভৈরব মুক্ত দিবস পালিত

- Advertisements -
Advertisements
Advertisements

বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম ভৈরব উপজেলা শাখা কর্তৃক আয়োজিত এসো মুক্তিযুদ্ধ ও ভৈরবের ইতিহাস কে জানার শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। পানাউল্লারচর বধ্যভূমি প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন ,বিএমএসএফ ভৈরব শাখার প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মোহাম্মদ ছাবির উদ্দিন রাজু।
উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ভৈরব উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি, বীর মুক্তিযোদ্ধা তালাত হোসেন বাবলা, বিশেষ অতিথিদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ আব্দুস সাত্তার মিয়া প্রবাসী ইতালি শম্ভূপুর , বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ রেনু মিয়া শম্ভূপুর , নিরাপদ সড়ক চাই ভৈরব শাখার সাধারণ সম্পাদক ও বিএমএসএফ ভৈরব শাখার উপদেষ্টা মোঃ আলালউদ্দিন, ভৈরব উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল ইসলাম রঞ্জু, অন্যান্যদের মধ্যে আরো বক্তব্য রাখেন শিবপুর ইউনিয়নের সাবেক প্যানেল চেয়ারম্যান মোহাম্মদ নীল মিয়া।
উপস্থিত অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ সুলতান উদ্দিন ইব্রাহিমপুর, বীর মুক্তিযোদ্ধা আলতাফুর রহমান ইব্রাহিমপুর, বীর মুক্তিযোদ্ধা রজব আলী ইব্রাহিমপুর,বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তফা ইব্রাহিমপুর, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু কাওসার ইব্রাহিমপুর, বেলাব থানার প্রজন্ম কমান্ডারএর সিনিয়র সহ-সভাপতি মোশাররফ হোসেন, অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মোঃ বিপুল রায়হান ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক মোঃ সোহানুর রহমান ।
অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মোঃ শামসুল হক মামুন,দপ্তর সম্পাদক মাহমুদুর রহমান রতন,সহযোগী সদস্য ইয়াসিন পারভেজ,মোঃ আকরাম হোসেন,নাগর টিভির বেলাব উপজেলা প্রতিনিধি মোঃ তুহিন মিয়া,কার্যনিবাহী সদস্য মোঃ জুযেল মিয়া,মনছুড়া কফি হাউজের মালিক শাহিন মিয়া সহ এলাকার গণ্যমান্য বক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় বক্তারা বলেন ,আজ ১৯ ডিসেম্বর, ভৈরব মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এ দিনে বীর মুক্তিযোদ্ধারা মিত্র বাহিনীর সহায়তায় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর কবল থেকে ভৈরবকে মুক্ত করতে সক্ষম হন। দীর্ঘ নয় মাস যুদ্ধ শেষে হানাদার বাহিনীর আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে ১৬ ডিসেম্বর বিশ্বের মানচিত্রে বাংলাদেশ নামের একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের জন্ম হলে ও বন্দরনগরী ভৈরব তখনো ছিল অবরুদ্ধ। চূড়ান্ত বিজয়ের স্বাদ পেতে ভৈরববাসীকে অপেক্ষা করতে হয় আরো তিনদিন।
১৯৭১ সালের ১৪ এপ্রিল ভৈরব উপজেলার শিবপুর ইউনিয়নের পানাউল্লারচর নামক স্থানে ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে পারাপারের জন্য অপেক্ষায়মান নিরস্ত্র-অসহায় পাঁচ শতাধিক সাধারণ মানুষকে ব্রাশফায়ারে হত্যার মধ্য দিয়ে ভৈরবের দখল নেয় হানাদার বাহিনী। সেখানে পরে লোকজনকে গণকবর দেয় আশপাশের মানুষ। পানাউল্লারচর বর্তমানে ভৈরবের বধ্যভূমি হিসেবে সংরক্ষিত। নির্মিত হয়েছে স্মৃতিস্তম্ভ।
১৪ এপ্রিলের পর থেকে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী ও তাদের এদেশীয় দোসররা কৌশলগত কারণে ভৈরবে শক্ত অবস্থান ধরে রাখে মুক্তিযুদ্ধের পুরো ৯ মাস। ভৈরবে ছিল পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর শক্তঘাঁটি। ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহের পর আখাউড়া, ব্রাহ্মণবাড়িয়াসহ পূর্বাঞ্চলের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে পরাজিত পাকিস্তানী বাহিনীর সদস্যরা পিছু হটে ভৈরবে এসে অবস্থান নেয়। ফলে জনবল ও অস্ত্রসস্ত্রে ভৈরবে পাকিস্তানী বাহিনীর শক্তি বহুগুণ বৃদ্ধি পায়।
১৩ ডিসেম্বর পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী পূর্বদিক ব্রাহ্মণবাড়িয়া-আশুগঞ্জ থেকে এগিয়ে আসা মুক্তিবাহিনী ও ভারতীয় মিত্রবাহিনীর গতিরোধ করতে ভৈরবে অবস্থিত ঢাকা-চট্টগ্রাম-সিলেট রেলপথের মেঘনা নদীর ওপর নির্মিত ‘ভৈরব রেলওয়ে সেতু’ শক্তিশালী ডিনামাইট দিয়ে উড়িয়ে দেয়।
ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনী রাজধানী ঢাকার দিকে দ্রুত এগিয়ে যেতে থাকে। রাজধানীর দিকে যাওয়ার পথে একে একে বিভিন্ন অঞ্চল পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর দখলমুক্ত হয়। সে সময় ভৈরবে তাদের শক্তিশালী ঘাটি থাকায়, যৌথবাহিনী ভৈরবকে মুক্ত করার কোনো উদ্যোগ নেয়নি। এখানকার যুদ্ধে লোক ক্ষয় না করে আগে রাজধানী ঢাকাকে মুক্ত করা কৌশলগতভাবে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করে অগ্রসর হতে থাকে। তারা ভৈরব শহরকে পাশ কাটিয়ে ঢাকার দিকে এগিয়ে যায়। ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানী বাহিনী যৌথবাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করলেও ভৈরব অবরুদ্ধই থেকে যায়। স্থানীয় জব্বার জুট মিলে আশ্রয় নেওয়া প্রায় ১০ হাজার পাকিস্তানী সেনাকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র-শস্ত্রসহ চারপাশ থেকে ঘিরে রাখে মুক্তি ও মিত্রবাহিনী।
১৮ ডিসেম্বর মুক্তিবাহিনীও মিত্রবাহিনী পুরো ভৈরব শহর ঘেরাও করে পাকিস্তানী বাহিনীকে আত্মসমর্পণের আহ্বান জানায়। ১৯ ডিসেম্বর সকালে ভৈরব রেলস্টেশনে মিত্র বাহিনীর মেজর মেহতার কাছে পাকিস্তানী বাহিনীর কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার সায়দুল্লাহ্সহ স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের উপস্থিতিতে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হন।
মুক্ত হয় শহীদ আতিক, নূরু, ক্যাডেট খোরশেদ আলম, আলকাছ মিয়া, আশুরঞ্জন দে, আক্তার মিয়া, নোয়াজ মিয়া, আবু লায়েছ মিয়া, সহিদ মিয়া, নায়েব আলী, মো. গিয়াস উদ্দিন, রইছ উদ্দিনসহ অসংখ্য মুক্তিযোদ্ধা ও অগণিত সাধারণ মানুষের রক্তে রঞ্জিত ভৈরব শহর। স্বাধীনতাযুদ্ধে আত্মদানকারীদের স্মরণে শহরের ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ভৈরব বাসস্ট্যান্ডে নির্মিত হয়েছে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি ভাস্কর্য ‘দুর্জয় ভৈরব’।

সাবস্ক্রাইব
Notify of
guest
0 মন্তব্য
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ

আল কোরআন ও আল হাদিস

- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন