English

25 C
Dhaka
শুক্রবার, মার্চ ২১, ২০২৫
- Advertisement -

অভিযোগ তদন্ত করে ব্যবস্থা নিন: কারাগারে অনিয়ম

- Advertisements -

দেশে দুর্নীতি ক্রমেই ডালপালা মেলছে। আর সরকারি কাজকর্মে তা যেন এক সর্বগ্রাসী রূপ নিয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, শুধু দুর্নীতির কারণে প্রতিবছর বাংলাদেশে জিডিপির ২ থেকে ৩ শতাংশ লোপাট হয়ে যায়। অভিযোগ আছে, ঘুষ ছাড়া সরকারি অফিসগুলোতে কোনো কাজই হয় না।

এর পরও সরকারি অফিসগুলোর সেবা পেতে মানুষকে অনেক ভোগান্তি পোহাতে হয়। সরকারি ভবন নির্মাণে রডের বদলে বাঁশ ব্যবহারের খবরও গণমাধ্যমে এসেছে। কেনাকাটায় অনিয়মেরও কোনো লাগাম নেই। একটি বালিশ কিনতে খরচ হয় সাত হাজার টাকা। এমনই আরেকটি খবর এসেছে । খবরে বলা হয়, ২০২০-২১ অর্থবছরের নিরীক্ষা প্রতিবেদন অনুযায়ী দেশের ১৩ কারাগারে ১৪৩ কোটি ৭৯ লাখ ৪০ হাজার ৮১৬ টাকার অনিয়ম হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। অভিযোগ রয়েছে, সেখানে লোক নিয়োগ, কেনাকাটা, ক্যান্টিনের আয়সহ অনেক কিছুই নিয়ম মেনে করা হয়নি।

২০০৬ সাল পর্যন্ত আগের পাঁচ বছর বাংলাদেশ দুর্নীতিতে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। পরবর্তীকালে দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) শক্তিশালী করা হয়। দুর্নীতির বিরুদ্ধে দুদকের পাশাপাশি অন্যান্য সংস্থাও কিছু পদক্ষেপ নেয়। রাস্তার পাশে অনেক দামি গাড়ি ফেলে যাওয়ার হিড়িক পড়ে যায়। ফলে দুর্নীতির র‌্যাংকিংয়ে বাংলাদেশ কিছুটা উন্নতি করলেও অবস্থান এখনো তলানিতেই রয়ে গেছে। আশঙ্কার বিষয়, সাম্প্রতিক সময়ে আবারও গণমাধ্যমে লাগামহীন দুর্নীতির খবর আসতে শুরু করেছে। নিরীক্ষা অধিদপ্তরের প্রতিবেদন অনুযায়ী কারাগারগুলোতে ছয় ক্যাটাগরিতে অনিয়ম হয়েছে এবং তাতে ৪৪টি খাতে ১৪৩ কোটি ৭৯ লাখ ৪০ হাজার ৮১৬ টাকার দুর্নীতির অভিযোগ তোলা হয়েছে। জানা যায়, কারাগারের ভেতরে সব ধরনের কাজ কয়েদিদের দিয়ে করানোর নিয়ম রয়েছে।

এর বিপরীতে কয়েদিদের পারিশ্রমিক দেওয়া হয়। জানা যায়, এই নিয়মের ব্যত্যয় করে কেরানীগঞ্জ, ময়মনসিংহ ও যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে পরিচ্ছন্নতাকর্মী হিসেবে বাইরের ৫০ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বলে কারা কর্তৃপক্ষের হিসাবেই উল্লেখ আছে। জরুরি বিবেচনায় এই তিন কারাগারে সর্বোচ্চ ১৩ জনকে নিয়োগ দিতে পারে কর্তৃপক্ষ। এই তিন কারাগারের অতিরিক্ত নিয়োগের ফলে সরকারকে অতিরিক্ত খরচ করতে হয়েছে এক কোটি ৫২ হাজার ১৫০ টাকা। সরকারি টাকায় কারাগারের ভেতরে ক্যান্টিন তৈরি করা হয়েছে। এতে সরকারি স্থাপনা, বিদ্যুৎ, গ্যাস, জনবল ব্যবহার করে ক্যান্টিন পরিচালনা করা হয়। কিন্তু ক্যান্টিনের কোনো আয় সরকারের কোষাগারে যায় না। এমনকি কয়েদিদের উৎপাদিত পণ্য বিক্রি করে যে অর্থ পাওয়া যায় তা-ও সরকারি কোষাগারে জমা হয় না। উপরন্তু ক্যান্টিনে ব্যবহৃত গ্যাসের বিল নিয়মিত পরিশোধ না করায় সরকারের ৬৮ লাখ ৫৬ হাজার ৭৯২ টাকা ক্ষতি হয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। কারাগারের বিভিন্ন সম্পত্তি ইজারা দিয়ে পাওয়া ৮৭ লাখ ৬৯ হাজার ১৬৯ টাকা পাওয়া গেলেও তা সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়া হয়নি।

এর আগেও কারাগারের অনেক দুর্নীতির খবর গণমাধ্যমে এসেছে। উচ্চ পদমর্যাদার কর্মকর্তাসহ অনেক কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করে বিচারের মুখোমুখি করা হয়েছে। এর পরও দুর্নীতি কমছে না কেন? আমরা চাই, কারাগারে হওয়া দুর্নীতির অভিযোগ তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হোক।

Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন