শুধু তা-ই নয়, ডিসি নিয়োগে অবৈধ হস্তক্ষেপ এবং সচিবালয়ে বদলির তদবিরেও তাঁর প্রভাব বিস্তারের অভিযোগ উঠেছে। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তাঁর বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করেছে।
শেখ হাসিনার দেড় দশকের শাসনামলের অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট্য ছিল দুর্নীতি। সেই সময়ে ক্ষমতাসংশ্লিষ্ট একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট দুর্নীতির নতুন নতুন খাত তৈরি করে আগের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গিয়েছিল।
জনগণের তীব্র অনাস্থা ও ক্ষোভের অন্যতম কারণ ছিল এই লাগামহীন দুর্নীতি। অভ্যুত্থানের পর অনেকেই ‘নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত’ এবং দুর্নীতিমুক্ত জবাবদিহিমূলক রাষ্ট্রের স্বপ্ন দেখেছিল, কিন্তু এনসিপির একজন নেতার বিরুদ্ধে এমন গুরুতর অভিযোগ সেই স্বপ্নকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।
ক্ষমতাচ্যুত সরকারের সময়ে ক্ষমতাসীন দলের নেতা থেকে শুরু করে এমপি-মন্ত্রীদের দুর্নীতির খবর প্রকাশিত হলেও ক্ষমতার শীর্ষ থেকে সেসব একপ্রকার অস্বীকার করা হতো, ক্ষেত্রবিশেষে উৎসাহ দেওয়া হতো অভিযুক্তকে। এখানে আশার কথা, এনসিপি অভিযোগ আমলে নিয়েছে এবং দুদকও তৎপর হয়েছে।
ছাত্র–তরুণদের উদ্যোগে গঠিত সরকার ও দলের কাছে জনগণের প্রত্যাশা অনেক বেশি।
দুর্নীতি যেন তাদের আশপাশে ভিড়তে না পারে সে জন্য তাদের সচেষ্ট থাকতে হবে। তাদের দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে। গাজী সালাউদ্দিন তানভীরের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ যদি সত্যি হয়, তবে তাঁর বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নিতে হবে।
আমরা আশা করি, নতুন বাংলাদেশে দুর্নীতির বিরুদ্ধে সবাইকে সোচ্চার হতে হবে। দৃষ্টান্তমূলক পদক্ষেপ নিতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে কেউই ক্ষমতার অপব্যবহার করে জনগণের সম্পদ লুটপাট করার সাহস না পায়। একটি সহজ বিষয় আমাদের সবাইকে মনে রাখতে হবে, দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে না পারলে কোনো সংস্কারই শেষ পর্যন্ত টেকসই হবে না বা কাজে আসবে না।